বুধবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রধানমন্ত্রীর কম্বোডিয়া সফর

দুই দেশের বন্ধুত্ব উন্নত হলো নতুন মাত্রায়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কম্বোডিয়া সফর এবং ১০টি দ্বিপক্ষীয় স্মারক ও একটি চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। রোহিঙ্গাদের নিরাপদে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশ-মিয়ানমার আলোচনা চলাকালে প্রধানমন্ত্রীর কম্বোডিয়া সফরকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সমস্যা এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করে সমস্যার সমাধানে বন্ধুদেশ কম্বোডিয়ার সহযোগিতা কামনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী হুন সেন যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষ থাকার পরও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে তাদের বিষয়টি নিজেদের কাঁধে তুলে নেওয়ার ব্যাপারটি প্রশংসার দাবিদার। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের সুশৃঙ্খলভাবে নিরাপদে স্বদেশ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে একযোগে কাজ করবে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে পুবের দেশগুলোর গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থনৈতিক দিক থেকে চাঙ্গা হয়ে ওঠা পুবের দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলা বর্তমান সরকারের পররাষ্ট্রনীতির অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালে কম্বোডিয়া সফর করে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের নবযাত্রায় অবদান রাখেন। ছয় বছর পর দ্বিতীয় সফর এ সম্পর্ককে আরও দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করাবে বলে আশা করা হচ্ছে। কম্বোডিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অভিন্ন ঐতিহ্যের অংশীদার। বাঙালি ও খেমার জাতির আদি সংস্কৃতির যোগসূত্র গড়ে উঠেছিল সংস্কৃতি ও পালি সমর্থিত পঞ্জিকা অনুসরণের মধ্য দিয়ে। দুই দেশের নতুন সাল গণনা বা নববর্ষ পালিত হয় বৈশাখ মাসে। বাংলাদেশের মানুষ যেমন পাকিস্তানি দখলদার আমলে গণহত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তেমন কম্বোডিয়ার মানুষ খেমারুজ নামের নরঘাতকদের পৈশাচিকতার সাক্ষী। দুই দেশের মানুষের মৈত্রীবন্ধন নতুন মাত্রায় উন্নত হয় কম্বোডিয়ায় শান্তি স্থাপনে জাতিসংঘ শান্তি বাহিনীতে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ভূমিকায়।  আশা করা যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কম্বোডিয়া সফরের ধারাবাহিকতায় দুই দেশের মৈত্রীবন্ধন জোরদারই শুধু নয়, ব্যবসা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ক্ষেত্রে নতুন পথ উন্মোচিত হবে। দুই দেশের জনগণের কল্যাণে সম্প্রসারিত হবে সহযোগিতার সোপান।

 

সর্বশেষ খবর