শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই

সরকারকে আরও কড়া হতে হবে

দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের লজ্জা গত এক বছরে কিছুটা হলেও কমিয়ে আনতে পেরেছে বাংলাদেশ। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের হিসাবে ২০১৬ সালে ১৮০টি দেশের মধ্যে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৫। এবার দুই ধাপ অগ্রগতির সুবাদে ১৪৩-এ এসে ঠেকেছে। ২০০১ সালে বাংলাদেশ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের সূচকে অন্তর্ভুক্ত হয়। সংস্থাটি বলেছে, তারপর এটাই হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো অবস্থান। একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে বাংলাদেশকে শীর্ষস্থানীয় দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। জাতির জন্য তা লজ্জাও বয়ে আনে। সে হিসেবে গত এক বছরে ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৪৩ অবস্থানে আসা দৃশ্যত একটি বড় সাফল্য। ট্রান্সপারেন্সির হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের চেয়ে ৩৭টি দেশ আরও বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত। দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। একমাত্র আফগানিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত। দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশের নেতিবাচক অবস্থানে পরিবর্তন ঘটলেও এতে উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মূল্যায়নে পৃথিবীর ১৪২টি দেশের অবস্থা বাংলাদেশের চেয়ে ভালো অর্থাৎ কম দুর্নীতিগ্রস্ত। দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশ ২০১৭ সালে ১০০-এর মধ্যে ২৮ পেয়েছে। গত ১৬ বছরে এটাই অর্জিত সর্বোচ্চ স্কোর। একই স্কোর পাওয়ায় গুয়েতেমালা, কেনিয়া, লেবানন ও মৌরিতানিয়ার অবস্থান বাংলাদেশের সমান। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশ সর্বনিম্ন চতুর্থ অবস্থানে। দুনিয়ার ১৮০টি দেশের মধ্যে ৮৯ স্কোর পেয়ে নিউজিল্যান্ড সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তকমা পেয়েছে। পক্ষান্তরে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের বদনাম কিনেছে সোমালিয়া; যাদের স্কোর মাত্র ৯। দুর্নীতির সূচকে দুই ধাপ অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশে সরকারি কার্যক্রমে ডিজিটালাইজেশন এবং আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক নীতিকাঠামো সুদৃঢ় করার কারণে। তবে দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করা কিংবা সহনীয় পর্যায়ে আনতে হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত লড়াই চালাতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করতে হবে। দুর্নীতি দমনে শীর্ষ পর্যায়ে যে অঙ্গীকারবদ্ধ মনোভাব রয়েছে, তা সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলাও জরুরি।

সর্বশেষ খবর