সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

এসএসসি পরীক্ষা

প্রশ্ন ফাঁসের পুনরাবৃত্তি আর যেন না হয়

এসএসসির লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত শনিবার। এ বছর ১৭টি পরীক্ষার মধ্যে ১২টিরই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের যে নজিরবিহীন রেকর্ড এবার স্থাপিত হয়েছে তাতে কর্তাব্যক্তিরা কতটা লজ্জা পেয়েছেন তা আমরা জানি না। তবে জাতির জন্য এ লজ্জা লুকানোর কোনো সুযোগ নেই তা যে কেউই অনুভব করবেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে এ পর্যন্ত দেড় শতাধিক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে আমাদের প্রশাসনের দৃশ্যত কঠোর মনোভাব স্পষ্ট হয়েছে দেড় শতাধিক গ্রেফতারের ঘটনায়। তবে তাতে মূল অপরাধীরা আদৌ ধরা পড়েছে কিনা সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। কারণ এখন পর্যন্ত কোথা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে সে বিষয়টিই উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাই করার জন্য পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। পরীক্ষার আগেই যদি প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যায় তবে পরীক্ষা ব্যবস্থাটাই প্রহসনে পরিণত হয়। পরীক্ষার ফলাফলে স্বভাবতই এমন পরীক্ষার্থীদের পক্ষে এ প্লাস পাওয়া সম্ভব হয় যারা স্বাভাবিকভাবে পরীক্ষা দিয়ে আদৌ পাস করতেন কিনা সন্দেহ। প্রশ্নপত্র ফাঁস দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অধঃপতিত অবস্থার যে চিত্র তুলে ধরেছে তা আতঙ্কিত হওয়ার মতো। বলা হচ্ছে, তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ করা আদতেই কঠিন। যারা এমন কথা বলেন, তারা ভুলে যান সারা দুনিয়াই এখন তথ্যপ্রযুক্তির আওতাভুক্ত। অন্য দেশে এ ধরনের অপরাধ মাথাচাড়া দিয়ে না উঠলে আমাদের দেশে তা উঠছে কীভাবে। প্রশ্নপত্র ফাঁস দীর্ঘদিনের অব্যবস্থা ও পাপের ফলশ্রুতি। শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির যে কালো থাবা বিস্তৃত হয়েছে বছরের পর বছর ধরে প্রশ্ন ফাঁস তারই অনিবার্য পরিণতি। যে দেশে শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতার চেয়ে উেকাচের গ্রহণযোগ্যতা বেশি, সরকারি প্রতিটি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বাঁকা পথের আশ্রয় ওপেন সিক্রেট সে দেশে কারও কাছ থেকেই সততা আশা করা সত্যিকার অর্থেই কঠিন।  প্রশ্নপত্র ফাঁসের পুনরাবৃত্তি রোধে শিক্ষা ব্যবস্থার খোলনলচে পাল্টানোর ব্যবস্থা করতে হবে। উেকাচ দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ ও কোচিং ব্যবস্থার ইতি ঘটাতে হবে।  শিক্ষা বিভাগ থেকে ঘুষ-দুর্নীতির অন্ধকারের কীটদের ঝেটিয়ে বের করার উদ্যোগ নেওয়াও জরুরি।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর