রবিবার, ১১ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি

অপরাধীদের দমনে কঠোর হোন

অবৈধ অস্ত্র দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ঘটছে খুনের ঘটনা। ছিনতাই, অপহরণ, চাঁদাবাজি, অবৈধ দখল সব কিছুতেই ব্যবহূত হচ্ছে অবৈধ অস্ত্র। রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারেও অবৈধ অস্ত্র ব্যবহূত হচ্ছে বেপরোয়াভাবে। নির্বাচনের বছরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ইতিবাচক উন্নতির লক্ষ্যে সরকার অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধে গরজ অনুভব করছে। নির্বাচনে যাতে অবৈধ অস্ত্রধারীদের দৌরাত্ম্য অনুভূত না হয় তা নিশ্চিত করতে অবৈধ অস্ত্রধারী এবং অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সামাল দেওয়ার বিষয়টি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের থাবা ঠেকাতেও এ ব্যাপারে কড়া হওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে সরকার। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ৩৫টি জেলার ৪৬২ জন অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি সচল রাখতে ভূমিকা রাখছে। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে ১৩৯ জন হোয়াইট কালার ক্রিমিনাল, যারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত। এদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এবং সীমান্তে নিয়োজিত বিজিবি, কোস্টগার্ড ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কিছু অসাধু সদস্যের সহযোগিতায় অস্ত্র ব্যবসায়ীরা সীমান্ত ডিঙিয়ে বিভিন্ন চোরাচালান পণ্যের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্রও আনছে। এসব মারণাস্ত্র ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন এলাকার অপরাধীদের হাতে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অস্ত্রসহ অস্ত্র ব্যবসায়ীরা কখনো কখনো গ্রেফতার হলেও আইনের ফাঁক গলিয়ে জামিনে বের হয়ে আগের পেশায় ফিরে যাচ্ছে। পুলিশ সদর দফতরের তথ্য অনুযায়ী গত বছর নভেম্বর পর্যন্ত ৫ হাজার ৩৪৭টি অস্ত্র, ১৯ হাজার ৫৬টি গুলি, ৩ হাজার ৯৯২টি কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। ২ হাজার ৩টি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৩ হাজার ৩৭৪ জনকে। শুধু ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন জজ আদালতে বিচারাধীন অস্ত্র মামলা রয়েছে ৫ হাজার ৩৫৬টি। রয়েছে ৫৫টি তদন্তাধীন মামলা। সারা দেশে অবৈধ অস্ত্রসংক্রান্ত মামলার পরিমাণ যে বিশাল তা সহজেই অনুমেয়। দেশের সাধারণ মানুষের কাছে উন্নয়ন বা অন্য কিছুর চেয়ে শান্তিতে ঘুমানোর বিষয়টি অনেক বেশি কাম্য। দেশবাসীর এই কাম্যতা পূরণে সরকার আন্তরিক হলে অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতেই হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর