কাঠমান্ডু বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ২৩ বাংলাদেশির লাশ সোমবার দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাদের দাফন করা হয়েছে। হিমালয়কন্যা নেপাল সফরে গিয়েছিলেন যারা প্রাণের উচ্ছ্বাস নিয়ে, তাদের ফিরে আসতে হলো কফিনবন্দী হয়ে। স্বভাবতই স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছিল আর্মি স্টেডিয়াম। নেপালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশি ২৬ জনের মধ্যে ২৩ জনের লাশ দেশে নিয়ে আসার পর ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে তাদের দ্বিতীয় জানাজা হয়। জানাজা শেষে বেদনাবিধুর পরিবেশে লাশ হস্তান্তর করা হয় স্বজনদের কাছে। লাশ গ্রহণ ও হস্তান্তর ঘিরে আর্মি স্টেডিয়ামে অবতারণা হয় হৃদয়বিদারক দৃশ্যের। দুর্ঘটনায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে আসা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেহেদী হাসানও হাতে ক্যানোলা, ঘাড়ে আলাদা সাপোর্ট নিয়ে চলে এসেছিলেন আর্মি স্টেডিয়ামে সহযাত্রী ভাই ও ভাতিজিকে চিরবিদায় জানাতে। তার এ উপস্থিতি শোকার্ত পরিবেশে ভিন্নমাত্রা সৃষ্টি করে। হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষে কফিন নিয়ে স্বজনরা রওনা হন যার যার ঠিকানায়। পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রিয়জনের দাফন সম্পন্ন করেছেন তারা। বিমান দুর্ঘটনায় নিহত যাত্রীদের স্বজনদের মধ্যে যারা কাঠমান্ডু গিয়েছিলেন, তাদেরও সোমবার দেশে ফিরিয়ে এনে আর্মি স্টেডিয়ামে নিয়ে যাওয়া হয়। দেশে থাকা স্বজনরাও দুপুরের পর জড় হতে শুরু করেন। তাদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে স্টেডিয়ামের পরিবেশ। কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রাণহানি জাতীয় জীবনের এক ট্র্যাজেডি। বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস নিরাপদ ভ্রমণ ও যাত্রীসেবার জন্য জনমনে আস্থার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হতো। দুর্ঘটনাকবলিত বিমানেও কোনো ত্রুটি ছিল না। মৃত্যুকূপ বলে পরিচিত কাঠমান্ডু ত্রিভুবন বিমানবন্দরে কেন এ উড়োজাহাজটি দুর্ঘটনায় পতিত হলো তা সঠিক তদন্তে উদ্ঘাটিত হতে পারে। তবে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তে যে বিষয়টি সামনে এসেছে তা হলো, বিমানবন্দর থেকে পাওয়া সিগন্যালে ত্রুটি থাকায় বিমানটি অবতরণকালে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এ দুর্ঘটনা কেড়ে নেয় ৫১ জন তরতাজা মানুষকে, যার ২৬ জনই বাংলাদেশি। আমরা তাদের স্বজনদের এ শোক সইবার শক্তি দেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি।