বুধবার, ২১ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

কৃষিতে ঝুঁকছেন উচ্চশিক্ষিতরা

ওঁরা সবার জন্য অনুকরণীয়

কৃষিনির্ভর দেশে যুগ যুগ ধরে কৃষিই ছিল অবহেলিত পেশা। এ পেশাকে মর্যাদাহীন বলে মনে করতেন সমাজের অবস্থাপন্নরা। শিক্ষিতজনেরা নাক সিঁটকাতেন কৃষিকাজ করার কথা ভেবে। দেরিতে হলেও কৃষিকে উপেক্ষা করার কাণ্ডজ্ঞানহীন প্রবণতার অবসান ঘটছে। শিক্ষিতজনেরাও এগিয়ে আসছেন কৃষিকাজে। তাদের সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে আসছে সাফল্য। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষে অন্য বন্ধুরা চাকরিযুদ্ধে নামলেও নিজে কিছু করার নেশায় ও পথে হাঁটেননি সোহেল রানা। নওগাঁর প্রত্যন্ত এলাকা সাপাহারে ‘রূপগ্রাম অ্যাগ্রো ফার্ম’ নামে গড়ে তুলেছেন সমন্বিত কৃষি খামার। মাছ, ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট, দেশি মুরগি, কবুতর, পাখি, আম, লিচু, থাই পেয়ারা, মাল্টা, ড্রাগন, লেবু, প্যাসন ফল, পিচ ফল, জামরুল, খাটো জাতের নারিকেল, শাক-সবজিসহ প্রায় ৪০ জাতের ফলের গাছ আছে। এ ছাড়া বাসক, তুলসী, কালোমেঘ, অর্শগন্ধা, ঘৃতকুমারীসহ নানা জাতের ঔষধি গাছও রয়েছে তার খামারে। কীটনাশক ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে ফল ও ফসল উৎপাদনের চেষ্টা করছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে প্রথম বিভাগ পেয়ে পড়াশোনা শেষ করে দেলোয়ার জাহান মানিকগঞ্জে দেড় একর জায়গায় কৃষি খামার গড়ে তুলেছেন। অনার্সে দ্বিতীয় ও মাস্টার্সে যৌথভাবে প্রথম হয়েছিলেন দেলোয়ার। এরপর সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে চাকরির সুযোগ পেয়েও যাননি। কৃষিকাজকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। নিজে তো বিষ ব্যবহার করেনই না, অন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেন প্রাকৃতিক উপায়ে কৃষিকাজের। চুয়াডাঙ্গা সদরের তরুণ আলিমুজ্জামান ও ফিরোজুল হক দুজনই উচ্চশিক্ষিত তরুণ। আলিমুজ্জামান একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ শেষ করেছেন আর ফিরোজুল হক এমবিএ করে দুজনে মিলে ১০ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন কৃষি খামার। ঢাকা কলেজে মাস্টার্স পড়ার পাশাপাশি নিজের এলাকা রাজবাড়ীতে কৃষি খামার গড়ে তুলেছেন আমিরুল ইসলাম আমির। সুশিক্ষিত তরুণরা কৃষিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে অন্যদের জন্য শুধু দৃষ্টান্ত স্থাপনই করেননি, বিষমুক্ত চাষাবাদের যে পথ তারা বেছে নিয়েছেন তা সবার জন্য অনুকরণীয়। দেশের কৃষির বিকাশে প্রতিভাবান শিক্ষিত তরুণদের অংশগ্রহণ পয়মন্ত ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

সর্বশেষ খবর