শুক্রবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

জুমার নামাজের তাত্পর্য

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

জুমার নামাজের তাত্পর্য

শুক্রবার ইসলামী সমাজে একটি তাত্পর্যপূর্ণ দিন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জুমা হচ্ছে মুসলমানদের জন্য সাপ্তাহিক ঈদ।’ (আৎ-তারগিব লিল মুনজেরি জুমা প্রসঙ্গে)। এদিন জুমার সালাত আদায় করা হয়। মুমিনরা জুমার সালাত আদায়ের জন্য মসজিদে সমবেত হন। জুমা উপলক্ষে সমবেত হওয়ার ঘটনা ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সৃষ্টি করে। আল কোরআনে সূরা জুমার ৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলছেন, ‘যখন জুমার দিন সালাতের জন্য আহ্বান জানানো হয় তখনই আল্লাহকে স্মরণের উদ্দেশ্যে জলদি চলে এসো এবং ব্যবসায়িক লেনদেন বাদ দাও। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।’

জুমা মুসলমানদের জন্য যেহেতু সাপ্তাহিক ঈদের দিন সেহেতু জুমায় সালাত আদায়ের জন্য উৎসবী মনোভাব থাকা উচিত। এজন্য শুধু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া নয়, গোসল করে যাওয়ারও তাগিদ দেওয়া হয়েছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমায় আসবে সে যেন গোসল করে নেয়।’ ইসলাম মুমিনদের সুগন্ধি বা খুশবু ব্যবহারে উৎসাহিত করেছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একাধিক হাদিস রয়েছে এ সম্পর্কে। তিরমিজির হাদিসে বলা হয়েছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা জুমার দিন যদি কোনো সুগন্ধি না পাও তাহলে একটু খুশবুদার তেল হলেও মেখে যাবে।’ জুমার দিন মুসলমানদের জন্য যেমন সাপ্তাহিক ঈদের দিন তেমন এটি জীবনের সব ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য অনুপ্রেরণা লাভের দিনও বটে। সূরা জুমার ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে ও আল্লাহর অনুগ্রহের সন্ধান করবে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করবে যাতে তোমরা সফলকামও হও।’ জীবনের সব ক্ষেত্রে মুমিনদের সফলকাম হওয়ার জন্য জুমার যে তাত্পর্য রয়েছে, এ আয়াতটি তারই প্রমাণ। জুমার দিন মসজিদে সালাত আদায়ে গ্রাম-মহল্লার মানুষ সমবেত হয়। এলাকার মানুষের একের সঙ্গে অন্যের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন জোরদার হয়। মুমিনদের মধ্যে ঐক্য ও সমবেদনার মনোভাব সৃষ্টি করে এই সাপ্তাহিক মিলন- মেলার ঘটনা। জুমায় ইমাম সাহেব যে খুতবা পাঠ করেন বা ভাষণ দেন তাতে দেশ, জাতি, সমাজ ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণের কথা থাকে। মুমিনদের পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনকেও প্রভাবিত করে জুমার খুতবা। জুমার তাত্পর্য প্রসঙ্গে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘এক জুমা থেকে অন্য জুমার মধ্যে সংঘটিত গুনা মাফ হয়ে যায়।’ অর্থাৎ কেউ যদি দুটি জুমার সালাত সঠিকভাবে আদায় করে তবে দুই জুমার মধ্যে ছোটখাটো গুনা হলে আল্লাহ তা মাফ করে দেন। আল্লাহ আমাদের জুমার সালাত আদায় এবং এ দিনটি কোরআন-হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী পালনের তাওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর