বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
বিচিত্রতা

তাশখন্দ

উজবেকিস্তানের রাজধানী তাশখন্দ। তাশখন্দ থেকে যাওয়া যায় ঐতিহাসিক শহর সমরখন্দ ও বুখারার দিকে। সমরখন্দ ছিল তৈমুর লংয়ের রাজধানী। তারও আগে চেঙ্গিস খান এখানে লুটপাট করেন। সমরখন্দ একটি পুরনো মরূদ্যান। এখানে অসংখ্য স্থাপত্য যা দেখতে দু-তিন দিন লেগে যায়। সমরখন্দের একটি অংশ প্রাচীন রয়ে গেছে।

সমরখন্দ থেকে বুখারায় যাওয়া যায়। বুখারায় রয়ে গেছে অসংখ্য মসজিদ আর মাদ্রাসা। এর মধ্যে বিবিখানা মাদ্রাসা খুব বিখ্যাত। এখানকার স্থাপত্য দেখার জন্য এক দিনের প্যাকেজ ট্যুরের ব্যবস্থা আছে। বুখারায় নানা জাতের, নানা ধর্মের লোকের বাস। বুখারার বাজার আর চায়খানা অপূর্ব। মোল্লা নাসিরুদ্দিনের জন্মস্থান বুখারা। এখানে তার একটি চমৎকার মূর্তি আছে, খচ্চরের পিঠে বসে আছেন তিনি।

এই মূর্তির চারপাশে ছোট ছোট চায়খানা। দেখে মনে হবে, এরা সবাই যেন মোল্লা নাসিরুদ্দিনের গল্প বলছে। বুখারা-সমরখন্দের রাস্তায় রাস্তায় ধ্রুপদ সংগীত শোনা যায়। ধ্রুপদিরা সারেঙ্গি-দোতারা ব্যবহার করেন। বুখারা থেকে তাশখন্দের পথ প্রায় ৪০০ কিমি। এ রাস্তায় একদিকে রুক্ষ মরু অঞ্চল, তাকে ঘিরে আছে তিয়েনশানের বরফঢাকা চূড়া, পামির মালভূমি। অন্যদিকে মাইলের পর মাইল টিউলিপ ফুটে রয়েছে।

কাজাখস্তানে গেলে প্রথমেই চোখে পড়বে চিমিকেন্ট বলে একটা ছোট শহর। সেখান থেকে ফরগনায় যাওয়া যায়। তাশখন্দ থেকে ফরগনা যেতে প্রায় ১২ ঘণ্টা লাগে। আকাশপথে আধ ঘণ্টা। ফরগনা সুলেমান পর্বত শ্রেণি, পামির, তিয়েনশান পর্বতমালা দিয়ে ঘেরা। ফরগনা ছিল ফুলে ফুলে ভরা আশ্চর্যসুন্দর এক রাজ্য। এখানে বৃষ্টি হয় না। চারদিকের পর্বতের বরফগলা পানি মাটির তলা দিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা ছিল বলে ফরগনা এত সবুজ। ফরগনায় আন্দিজান আর ওশ এ দুটোই বড় শহর। আন্দিজান মুঘল সম্রাট বাবরের জন্মস্থান। এ শহর সারা বছর ফুলে ভর্তি থাকে। রাস্তায় রাস্তায় গোলাপ ফুলের গাছ। সর্বত্র পানির উন্নত ব্যবস্থা। এই কৃত্রিম পানির ব্যবস্থা না থাকলে ফরগনা মরুভূমি হয়ে যেত।

কিরগিজস্তান পুরোটাই পার্বত্যাঞ্চল। তিয়েনশান পর্বতমালা দিয়ে ঘেরা। এর একদিকে চীন, একদিকে উজবেকিস্তান, একদিকে কাজাখস্তান। কিরগিজরা যাযাবর উপজাতি। এদের মধ্যে অনেকেই গরমকালে তাঁবুতে থাকেন। এগুলোকে ইয়ুর্দ বলে। এখানের মানুষের মধ্যে অদ্ভুত সরলতা। বিশকেক এখানের উল্লেখযোগ্য শহর। এখানের ওশ বাজার বিখ্যাত। বিশকেক থেকে ইসুকুল লেক ঘণ্টা চারেকের পথ। সাড়ে সাত-আট হাজার ফিট ওপরে ৪০ বর্গ কিমি জায়গা নিয়ে বিশাল এই ইসুকুল লেক। এর চারদিকে তিয়েনশান পর্বতমালা। জেনেভা, কানাডার হ্রদ অঞ্চলের চেয়েও নাকি এটি সুন্দর। নোনা পানির হ্রদ। তাই শীতকালে চারদিকে বরফ থাকলেও এই হ্রদের পানি জমে না, আর পানির রংও তেমনি একেবারে টলটলে নীল। হ্রদের চারপাশে ছোট ছোট কিরগিজ গ্রাম। ইসুকুল হ্রদে সূর্যোদয়, সূর্যাস্তের দৃশ্যও অকল্পনীয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর