বৃহস্পতিবার, ১০ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

ড্যাপ নিয়ে নতুন চক্রান্ত

সরকারকে সাবধান হতে হবে

সরকারকে বিব্রত করতে পর্দার আড়ালে থাকা একটি মহল ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) নিয়ে নতুন চক্রান্ত শুরু করেছে। ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হলে রাজধানীর চারপাশের ২ হাজার ২০০ কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। লাখ লাখ বেকারের কর্মসংস্থান নিয়ে সরকারকে যখন হিমশিম খেতে হচ্ছে তখন বিপুল পরিমাণ কলকারখানা বন্ধ হলে তা আগুনে ঘি ঢেলে দেওয়ার মতো হঠকারিতা বলে বিবেচিত হবে। এসব জমি অধিগ্রহণের জন্য সরকারকে যে টাকা গুনতে হবে তা বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটের চেয়েও বেশি হয়ে দাঁড়াতে পারে। স্মর্তব্য, আবদুল মান্নান খান গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে একটি পত্রিকা অফিসে বসে ড্যাপের ঘোষণা দেন। তার ওই ঘোষণার পর ঢাকার চারপাশে হঠাৎ করেই সরকারবিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ড্যাপ নিয়ে তখন অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীও তার সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। কারণ, বাস্তবতার সঙ্গে তার কোনো মিল ছিল না। তখনকার পরিকল্পনা অনুযায়ী ড্যাপ বাস্তবায়িত হলে শিল্পকারখানা জলাশয়ে রূপান্তরিত হওয়ার কথা। আর কবরস্থানের ওপর হওয়ার কথা শিল্প। এভাবে গোঁজামিল পরিকল্পনার কারণে ঢাকার চারপাশের মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে তার রেশ এখনো যায়নি। এ পরিস্থিতিতে একটি মহল বিশেষ উদ্দেশ্যে ড্যাপ নিয়ে সক্রিয় হওয়ার কারণে নানামুখী প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। ভোটের বছরে মানুষ খেপানোর ড্যাপ বাস্তবায়নে হঠাৎ তোড়জোড়ের পেছনে কী উদ্দেশ্য কাজ করছে সরকার তা খতিয়ে দেখলে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ড্যাপ নিয়ে তাড়াহুড়া নয় বরং সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞদের এনে সবকিছু পর্যালোচনা করা উচিত। ড্যাপের উদ্দেশ্য যেহেতু পরিকল্পিতভাবে রাজধানীর উন্নয়ন, সেহেতু ত্রুটিমুক্ত নগর পরিকল্পনার জন্য সবকিছু ভেবেচিন্তে করা উচিত। ড্যাপের ত্রুটির কথা গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রীও অকপটে স্বীকার করেছেন। স্বভাবতই সরকারের শীর্ষ পর্যায়কে আড়ালে রেখে যারা ড্যাপ নিয়ে পানি ঘোলা করছেন, তাদের এখনই নিরস্ত করা উচিত। এটি সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হবে— এমনই দেখতে চায় রাজধানীবাসী।

সর্বশেষ খবর