বৃহস্পতিবার, ১০ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

হাই কোর্টের বিজ্ঞোচিত রায়

যানবাহনচালকরা সতর্ক হোন

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত রাজীবের পরিবারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। এ-সংক্রান্ত একটি রিট আবেদনের শুনানি শেষে আদালত এই দৃষ্টান্তস্থানীয় রায় দেয়। রাজীবের প্রাণহানির জন্য দায়ী বিআরটিএ ও স্বজন পরিবহনের মালিককে এ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গত ৩ এপ্রিল দুই বাসের চাপায় প্রথমে হাত হারান তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাজীব হাসান। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি প্রাণ হারান। দুই বাসচালকের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর শিকার হয়ে রাজীবের মৃত্যু সারা দেশকে নাড়া দেয়। এ ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল। রিটের শুনানি শেষে মঙ্গলবার বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ রাজীবের দুই ছোটভাইকে ক্ষতিপূরণের আদেশ দেয়। ওই ১ কোটি টাকার মধ্যে ৫০ লাখ টাকা পরিশোধের জন্য দুই পরিবহনের মালিককে এক মাসের সময় দিয়েছে আদালত। রাজীবের খালা জাহানারা পারভীন ও রাজীবের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফলের সাবেক চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের ছেলে কাস্টমস কর্মকর্তা ওমর ফারুকের নামে মতিঝিলে সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখায় একটি যৌথ অ্যাকাউন্ট খোলা হবে। বিআরটিএ ও স্বজন পরিবহনের মালিককে এক মাসের মধ্যে ২৫ লাখ করে মোট ৫০ লাখ টাকা জমা দিতে হবে ওই অ্যাকাউন্টে। টাকা জমা দেওয়ার বিষয়টি ২৫ জুনের মধ্যে আদালতকে লিখিতভাবে জানাতে হবে। রিট আবেদনকারী আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেছেন, ২৫ জুন বিষয়টি আবার আদালতে এলে তখন বাকি টাকার বিষয়ে নির্দেশনা দিতে পারে আদালত। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায়ই হতাহতের ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই চালকদের বেপরোয়া মনোভাব দায়ী। রাজধানীতে যেসব সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে তার বেশির ভাগই পাল্লাপাল্লি করে গাড়ি চালানোরই পরিণতি। আমাদের বিশ্বাস, হাই কোর্টের বিজ্ঞোচিত এ রায় পরিবহনচালকদের সুবুদ্ধি ফেরাতে সাহায্য করবে। এ রায়ের ফলে পরিবহন মালিকরা চালকদের আইন মেনে ও সতর্কভাবে গাড়ি চালাতে উদ্বুদ্ধ করবেন— আমরা এমনটিই দেখতে চাই। আর যাতে কোনো রাজীবকে প্রাণ হারাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে উচ্চ আদালতের রায় হুঁশিয়ারি হিসেবে বিবেচিত হবে— এমনটিও প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর