রবিবার, ১৩ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

মাদকবিরোধী অভিযান

সামাজিক প্রতিরোধও জরুরি

মাদকের মরণনেশায় জিম্মি হয়ে পড়ছে দেশের যুব সমাজ। এক সময় অভিজাত সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এর আগ্রাসন ছড়িয়ে পড়ছে সমাজের সর্বত্র। রাজধানীর এমন কোনো মহল্লা নেই যেখানে মাদকের মরণনেশা থাবা বিস্তার করেনি। হতাশার মধ্যে আশার কথা হলো- মাদক নির্মূলে শুরু হচ্ছে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম। ইতিমধ্যে র‌্যাব-পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরসহ সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তৎপর হয়ে উঠেছে। ‘জঙ্গিবাদ দমনের মতো মাদক নির্মূলেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে’— সম্প্রতি র‌্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দরবারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন ঘোষণার পরই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তৎপর হয়ে উঠেছে। গত বুধবার খিলগাঁও এলাকায় ডিবির সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে লেনিন বাবু নামের এক মাদক ব্যবসায়ী। অন্যান্য সংস্থাও মাদক নির্মূলকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। গত বুধবার পর্যন্ত এক সপ্তাহে ৯৩৮ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এর মধ্যে ১৫০ জন মাদক ব্যবসায়ী। বাকি ৭৮৮ জন সেবনকারী। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে র‌্যাবের প্রায় সবকটি ব্যাটালিয়নের একাধিক টিম মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে। মাদকবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে ৭৯টি। অচিরেই র‌্যাবের অভিযানের তীব্রতা বাড়বে। দেশে মাদক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে ইয়াবা। সরকারি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে মাদকাসক্ত মুক্ত হতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর মধ্যে ৮০ শতাংশ ইয়াবায় আসক্ত। ইয়াবার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চললেও এর আগ্রাসন থেমে নেই। ইয়াবা মস্তিষ্ককে চরমভাবে উদ্দীপ্ত করে। সেবন করলে তাত্ক্ষণিক হৃত্স্পন্দন, রক্তচাপ ও শরীরে তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং মস্তিষ্কের কিছু কোষের তাত্ক্ষণিক মৃত্যু ঘটে। এ মাদক সেবনে হৃদদুর্বল ব্যক্তিদের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সহিংস যৌনতাও ইয়াবা সেবনের একটি সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। যদিও এক বছর নিয়মিত এ বড়ি সেবন করলে যৌনক্ষমতা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। প্রতি মাসে দেশে অন্তত ১০ কোটি টাকার ইয়াবা আটক হয়। এ মাদক নেশার আগ্রাসন কতটা যে বিস্তৃত এ পরিসংখ্যান তারই প্রমাণ। যুব সমাজকে এর আগ্রাসন থেকে বাঁচাতে মাদকবিরোধী অভিযান আরও জোরদার করা দরকার। একই সঙ্গে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক প্রতিরোধ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর