বুধবার, ২৩ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঢাকা চট্টগ্রামে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি

জনভোগান্তি দূরীকরণে নজর দিন

উন্নয়নকাজের নামে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির মহোৎসব লেগে আছে বছরজুড়ে। এ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে সরকার জনমনে দৃশ্যত সমীহ সৃষ্টি করেছে, এটি একটি সত্য। তবে এ সমীহ সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা বা জনসমর্থন বাড়াতে কতটা অবদান রাখছে তা সংশয়ের ঊর্ধ্বে নয়। প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সময় ক্ষেপণ হিতে বিপরীত অবস্থা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে রাজধানী ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়নকাজ যেমন ফ্লাইওভার, তিতাস কিংবা ওয়াসার উন্নয়নকাজে সময় ক্ষেপণে জনভোগান্তি যত বাড়ছে ততই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে এসব উন্নয়নকাজের গ্রহণযোগ্যতা। সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত কোনো সংস্থা যখন কার্যাদেশ দেয় তখন প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়। এ সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের যেখানে শাস্তি পাওয়ার কথা সেখানে তাদের পুরস্কৃত করা হচ্ছে কাজ সম্পন্ন করার সময়সীমা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যয় বাড়িয়ে। অভিযোগ রয়েছে, কার্যাদেশদাতাদের কারোর কারোর সঙ্গে ঠিকাদারদের অদৃশ্য সমঝোতা থাকায় প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে সময় ক্ষেপণ এবং ব্যয় বরাদ্দ বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে জনগণের ট্যাক্সের টাকার অপচয় হলেও ঠিকাদারের মুনাফা যেমন বাড়ছে তেমন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পকেট স্ফীত হওয়ার সুযোগ ঘটছে। উন্নয়নের নামে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে প্রকল্প বাস্তবায়নকারীদের স্বার্থ থাকায় কারণে-অকারণে রাস্তা কাটার বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। রাজধানীর যানজট নিরসনে একের পর এক ফ্লাইওভার নির্মাণের উদ্যোগ প্রশংসা পেলেও এক বছরের কাজ তিন বছরে বাস্তবায়নের কারণে যে জনভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে তা লাভের গুড় পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলার সঙ্গে তুলনীয়। উন্নয়নকাজের জন্য সাময়িক অসুবিধা মেনে নেওয়ার ব্যাপারে সাধারণ মানুষের আপত্তি নেই। কিন্তু তা যদি অনন্তকালের বিষয় হয়ে দাঁড়ায় তবে সে উন্নয়নের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে বাধ্য। আমরা আশা করব প্রকল্প বাস্তবায়নের দীর্ঘসূত্রতার দায় কার তা নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

নিজেদের স্বার্থেই সরকার উন্নয়ন প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়সীমায়

বাস্তবায়নে আপসহীন হবে— এমনটিই কাম্য।

সর্বশেষ খবর