রবিবার, ১ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান

চীনের দূতিয়ালি সফল হোক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী চীন সফরে গিয়েছিলেন মূলত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ঝালাই করতে। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ যখন উটকো সমস্যায় ভুগছে, তখন এ সমস্যার সমাধানে তিনি চীনের সহযোগিতা চেয়েছেন এমনটিই স্বাভাবিক। কারণ রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের ওপর চেপে বসেছে মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে দলে দলে তাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে। বিশ্ব সমাজের আহ্বানে বাংলাদেশ দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে রয়েছে চীনের গভীর সম্পর্ক। বিশ্ব রাজনীতিতে অনেকাংশেই এক ঘরে মিয়ানমারকে চীনই সর্বক্ষেত্রে সহযোগিতা করে টিকিয়ে রেখেছে। বাংলাদেশের সঙ্গেও চীনের সম্পর্ক গভীর। কৌশলগত কারণেই চীন চায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার দুই দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক ধরে রাখতে। আর এ কারণেই রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের পক্ষে অবস্থান নিলেও একই সঙ্গে তারা সমস্যাটির সম্মানজনক সমাধানের চেষ্টাও চালাচ্ছে। সে মনোভাবের প্রতিফলন ঘটেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চীন সফরকালে মিয়ানমারের মন্ত্রী কিয়াং টিন্ট সোয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে। অনানুষ্ঠানিক এই বৈঠকের আয়োজন হয়েছিল চীনা পররাষ্ট্র দফতরের উদ্যোগে। এর আগে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে চীনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়। মিয়ানমারের মন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকের বিষয়াবলি পররাষ্ট্র দফতর থেকে জানানো না হলেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা সমস্যার হালহকিকত সম্পর্কে বন্ধু দেশ চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফেরার ব্যাপারে নিরাপত্তার গ্যারান্টি চায়। তারা কোনো ক্যাম্পে নয় নিজেদের আবাসস্থলে ফিরে যেতে যেমন চায় তেমন চায় জীবিকা নির্বাহের উপায়। চীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের সুবিধার্থে তারা বাড়ি নির্মাণ ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টিতে কাজ করছে। বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি চীনা প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরকালে যৌথ ঘোষণার অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে দুই দেশের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশাবাদও ব্যক্ত করা হয়। রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়, বাংলাদেশ এর কোনো পক্ষ নয়। মানবিক কারণেই বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে সুপ্রতিবেশী সুলভ সম্পর্ক বজায় রাখতে এ সমস্যার দ্রুত সমাধানই বাংলাদেশের কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর