শনিবার, ২১ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাফল্য ও গৌরবের ৫৭ বছর

কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাফল্য ও গৌরবের ৫৭ বছর

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) রাজধানী ঢাকা শহর থেকে ১২০ কিমি ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহর থেকে ৩ কিমি দূরে ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম তীরে ১ হাজার ২৬১ একর জমির ওপর মনোরম পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬১ সালে। বাকৃবি স্থাপনার নির্মাণের কাজ শেষ হয় ৮ জুন, ১৯৬১, একাডেমিক কার্যত্রম শুরু হয় ১৮ আগস্ট, ১৯৬১। কৃষি, কৃষি প্রকৌশল ও প্রাণিবিষয়ক ৬টি অনুষদে ৪৩টি বিভাগসহ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে অসামান্য সফলতার সঙ্গে। বাকৃবির অভ্যন্তরে BINA, BFRI ও GTI নামে তিনটি জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। একসময় ঢাকা কৃষি কলেজ, হাজী দানেশ কৃষি কলেজ, পটুয়াখালী কৃষি কলেজ ও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি কলেজ বাকৃবির শিক্ষা কার্যক্রমের অধিভুক্ত ছিল। এখন প্রতিটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্য ও গৌরবের ৫৭ বছর উদ্যাপন উপলক্ষে বাকৃবিতে আগামীকাল মহামান্য রাষ্ট্রপতি ‘বাংলাদেশ হাওর ও চর উন্নয়ন ইনস্টিটিউট’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন, যা কৃষিনির্ভর বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের আরেকটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ— এ দেশের কৃষিবিপ্লবের অগ্রনায়ক। বিশেষ করে ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা প্রদানের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সাফল্য ও গৌরবের দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রবেশ করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার কৃষকদরদি দৃষ্টিভঙ্গির কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা, গবেষণা ও কৃষি সম্প্রসারণ কার্যক্রমে মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে।

আধুনিক কৃষি ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের লক্ষ্যে সম্প্রতি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাগ্রি বিজনেস এমবি বিভাগের যাত্রা হয়েছে। এ কথা উল্লেখ করতেই হবে যে, স্পেনভিত্তিক webo matrics নামীয় ওয়েবসাইট কর্তৃক বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মূল্যায়নে বিগত দুই বছর আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিংয়ে প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। এটা শুধু আমাদের নয়; কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাই এ গৌরবের অংশীদার।

১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি এই বিশ্ববিদ্যালয় ২৫ সহস্রাধিক অ্যালামনি এবং হাজার হাজার রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটের জন্ম দিয়েছে। দেশের কৃষি ক্ষেত্র ছাড়াও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটরা প্রশাসন, পুলিশ, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমনকি মিডিয়া জগতে পর্যন্ত ভূমিকা রেখে চলেছেন।

বাকৃবি আজ দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়। বাকৃবির সঙ্গে জড়িত সব সময়ের জীবিত ও মৃত সবাইকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। শ্রদ্ধা জানাই ময়মনসিংহবাসীকে; যাদের ত্যাগের বিনিময়ে, যাদের জায়গা সম্পত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আজকের গর্বিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

আমাদের এই সাফল্য ও গৌরবের অনুষ্ঠানে আগামীকাল মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়ে আমাদের আরও গৌরবান্বিত করবেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতিকেও জানাই আমাদের অফুরন্ত কৃতজ্ঞতা।

লেখক : সাবেক ছাত্রনেতা

সর্বশেষ খবর