বৃহস্পতিবার, ২৬ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

হজ করার জন্য আল্লাহর রহমতের প্রয়োজন হয়

মাওলানা মুহম্মাদ সাহেব আলী

হজ এমন এক ইবাদত যার সঙ্গে আর্থিক ও শারীরিক সামর্থ্যের সম্পর্ক রয়েছে। আর্থিক ও শারীরিক সামর্থ্য থাকলেও অনেকের পক্ষে হজ করা সম্ভব হয় না। হিজরি শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ— এ তিন মাসকে হজের মাস বলা হয়। এর মধ্যে জিলহজ মাসকে বলা হয় পুরোদস্তুর হজের মৌসুম। প্রতি বছরের মতো এ বছরও সারা পৃথিবী থেকে লাখ লাখ মুসলমান মহান আল্লাহর দরবারে হাজিরা দেওয়ার জন্য মক্কা অভিমুখে ছুটে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ থেকেই হজ পালন করবেন ১ লাখ ২৬ হাজারের বেশি মানুষ। হজ টাকা থাকলেই আদায় করা যায় না। আল্লাহ যাদের ডাকেন তারাই শুধু খানায়ে কাবা জিয়ারতের সুযোগ লাভ করেন। প্রিয় নবী হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর ডাক আল্লাহ যাদের কানে পৌঁছে দিয়েছেন তারা জীবনের যে কোনো পর্যায়ে হজ করার সুযোগ পান। হজ করার জন্য আল্লাহর রহমতের প্রয়োজন হয়। ছেলে ইসমাইল (আ.)-কে সঙ্গে নিয়ে হজরত ইবরাহিম (আ.) যখন খানায়ে কাবা পুনর্নির্মাণ করেন, তখন আল্লাহ হজরত ইবরাহিম (আ.)-কে বললেন, ‘এবং মানুষের কাছে তুমি হজের ঘোষণা দাও, তারা তোমার কাছে আসবে হেঁটে ও সকল প্রকার ক্ষীণকায় উটের পিঠে, তারা আসবে দূরদূরান্তের পথ অতিক্রম করে।’ সূরা হজ : ২৭।

হজযাত্রীরা আল্লাহর মেহমান। তাদের প্রতি রয়েছে মহান সৃষ্টিকর্তার বিশেষ রহমত। যার হজ আল্লাহ কবুল করেন তিনি দুধের শিশুর মতো নিষ্পাপ তথা বেগুনাহ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য হজ করল এবং হজের সময় কোনো অশ্লীল কাজ বা কথা বলল না এবং কোনো গুনাহের কাজ করল না সে যেন মায়ের উদর থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরে এলো।’ বুখারি, মুসলিম।

রসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘হজে মাবরুরের সওয়াব হলো একমাত্র জান্নাত।’ বুখারি, মুসলিম। প্রত্যেক মানুষের জন্য জান্নাত একটি কাঙ্ক্ষিত বিষয়। একবার জান্নাতে যারা যাবে তাতে তারা অনন্তকাল থাকবে। জান্নাতের সুখ-শান্তির সঙ্গে অন্য কোনো সুখ-শান্তির তুলনা করা যায় না।। জান্নাত সম্পর্কে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জান্নাতের সামান্যটুকু জায়গা সারা দুনিয়া ও এর মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়েও উত্তম।’ বুখারি, মুসলিম।

হজ পালনের মাধ্যমে বান্দা গুনাহ থেকে পরিত্রাণের সুযোগ পায়। যে কারণে রসুল (সা.) হাজীদের প্রতি সম্মান দেখাতে নির্দেশ দিয়েছেন। বলেছেন, ‘যখন তুমি কোনো হাজীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তখন তুমি তাকে সালাম ও মুসাফাহা করবে এবং তার বাড়িতে প্রবেশের আগে তাকে তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার অনুরোধ করবে। কেননা সে তো ক্ষমাপ্রাপ্ত।’ আহমদ, মিশকাত।

হাজীদের প্রতি আল্লাহর যে বিশেষ কৃপা রয়েছে তা অর্জন করতে হলে শুদ্ধভাবে হজ পালনে উদ্যোগী হতে হবে। হজ সমাপনের পর বাদবাকি জীবনও আল্লাহ ও রসুল (সা.)-এর নির্দেশিত পথে কাটানোর শপথে আবদ্ধ হতে হবে।

লেখক :  ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর