বুধবার, ১ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

তিন সিটির নির্বাচন

নির্বাচন কমিশনকে কড়া হতে হবে

তিন সিটির নির্বাচনে রাজশাহী ও বরিশালের মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী, সিলেটে বিএনপি জয়ী হওয়ার পর্যায়ে। রাজশাহীতে সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন এক লাখ ৬৬ হাজার ৩৯৪ ভোট পেয়ে ধানের শীষের প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে পরাজিত করেছেন। বুলবুল পেয়েছেন ৭৮ হাজার ৪৯২ ভোট। বরিশালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন এক লাখ নয় হাজার ৮০১ ভোট পেয়ে। প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সাবেক মেয়র মজিবর রহমান সরোয়ার পেয়েছেন ১৩ হাজার ৪১ ভোট। বিএনপিসহ চার প্রার্থী দুপুরে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় বরিশালের ফলাফলে হারজিতের স্বাভাবিক চিত্র ফুটে ওঠেনি। সিলেটে নৌকা ও ধানের শীষের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে এগিয়ে রয়েছেন ধানের শীষের প্রার্থী সদ্য বিদায়ী মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ১৩৪টি কেন্দ্রের ১৩২টিতে তিনি পেয়েছেন ৯০ হাজার ৪৯৬ ভোট। নৌকার প্রার্থী সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট। দুটি কেন্দ্রে পুনঃনির্বাচন হলে ধানের শীষের প্রার্থীর জয় অনিবার্য বলেই মনে হচ্ছে। নির্বাচনে রাজশাহীতে উন্নয়ন ইস্যুকে সামনে এনে বাজিমাত করতে সক্ষম হয় আওয়ামী লীগ। সাবেক মেয়র লিটনের আমলে ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ায় দলনিরপেক্ষ ভোটারদের সিংহভাগ তার পক্ষ নেওয়ায় নৌকার পক্ষে বিপুল ভোটে জয়ী হওয়া সম্ভব হয়। খুলনার মতো রাজশাহীতেও বিএনপি নেতা-কর্মীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন, যা বিএনপির জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। বরিশালে বিএনপি নেতা-কর্মীদের আত্মসমার্পিত মনোভাবের কারণে নির্বাচনী প্রচারণায় তারা যেমন পিছিয়ে পড়ে তেমন ভোট কেন্দ্রগুলোতে দলীয় কর্মী দূরের কথা বেশিরভাগ কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টদের হাজির করতেও তারা ব্যর্থ হয়। দুপুরেই তারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বরিশালে একতরফা পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সিলেটে দুই পক্ষই বিনাযুদ্ধে নাহি দেব সূচাগ্র মোদিনী পণ ধরে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়েছে। জামায়াত আলাদা প্রার্থী দিয়ে ১০ হাজারের বেশি ভোট পেলেও তা ধানের শীষের জয়ের জন্য বাধা সৃষ্টি করতে পারেনি। তিন সিটিতে দৃশ্যত নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বরিশালের ১৬টি ও সিলেটের দুটি কেন্দ্রে সংঘর্ষ, জালভোট, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে দুর্ভাগ্যজকভাবে। নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট ভোট কেন্দ্রগুলোর ফলাফল স্থগিত করেছে।  আমরা আশা করব এসব অনিয়ম ও সাংঘর্ষিক ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত নির্বাচন কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবে। তিন সিটির নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীদের অভিনন্দন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর