বৃহস্পতিবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

পিয়াজের ঝাঁজ

উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পিয়াজের ঝাঁজ লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে সবজি ও মসলা হিসেবে ব্যবহৃত এই অতি দরকারি পণ্যটির দাম বেড়েছে ৮০ শতাংশ। সরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, গত জুনের শুরুতে ঢাকার বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি দেশি পিয়াজ ৩৪ ও ভারতীয় পিয়াজ ২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অথচ গত মঙ্গলবার ঢাকার বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পিয়াজ ৬০ আর ভারতীয় পিয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০-৪৫ টাকায়। কোনো কোনো এলাকায় দেশি পিয়াজ ৬৫ টাকায়ও বিক্রি হতে দেখা গেছে। পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ভারতে পিয়াজের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারে। আর এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে অসাধু কিছু বড় ব্যবসায়ী। তারা গত মাসে টানা বৃষ্টির অজুহাত তুলে পিয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়। অভিজ্ঞজনদের মতে, বাজারে পিয়াজের দাম বাড়ার পেছনে বৃষ্টিকে দায়ী করা হলেও তা যথার্থ নয়। কারণ বৃষ্টিতে পিয়াজের তেমন কোনো ক্ষতিই হয়নি। দেশে চলতি বছর রেকর্ড পরিমাণ পিয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন যথেষ্ট ছিল না। ফলে প্রতি বছরের মতো এ বছরও ভারত থেকে পিয়াজ আমদানি করতে হচ্ছে। ভারতে অতিবর্ষণে পিয়াজ উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম কিছুটা বাড়লেও তা অসহনীয় পর্যায়ে নয়। কিন্তু সে দোহাই দিয়ে বাংলাদেশের বাজারে পিয়াজের ঝাঁজ অসহনীয় হয়ে উঠেছে। পিয়াজ নিয়ে প্রায় প্রতি বছর সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। এ সংকট থেকে রক্ষার একমাত্র উপায় দেশে পিয়াজের উৎপাদন বাড়ানো। পিয়াজ সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও সক্ষমতা বাড়াতে হবে। পিয়াজ ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে ২০১৬ সালে সরকার পিয়াজের ওপর থেকে আমদানি শুল্ককর প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর আর শুল্ক সংযোজিত হয়নি। ভারত থেকে প্রতি টন পিয়াজ আমদানি হচ্ছে ২০৫ মার্কিন ডলারে, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১৭ হাজার ২০০ টাকা। সেই হিসাবে কেজিপ্রতি আমদানি খরচ পড়ছে ১৮ টাকা। এলসিসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে বেনাপোল স্থলবন্দর পর্যন্ত পিয়াজ পৌঁছতে খরচ পড়ছে কেজিপ্রতি ২০ টাকা। অথচ আমদানি করা পিয়াজ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে। আর খুচরা বাজারে এসে বাড়ছে আরও অন্তত ৫ টাকা।

এতে ৪০ টাকার নিচে কোনো পিয়াজই পাওয়া যাচ্ছে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর