বৃহস্পতিবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে বলে ইসলাম

মাওলানা মুহম্মাদ জিয়াউদ্দিন

দুনিয়ার সব মানুষই প্রথম মানব আদম (আ.)-এর বংশধর। এই অর্থে এক মানুষ আরেক মানুষের ভাই। তাই ইসলাম তার অনুসারীদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে উদ্বুদ্ধ করেছে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের যে সম্পর্ক সৃষ্টি করেন তার পরিণতিতে তারা ক্ষমতাধর জাতিতে পরিণত হয়। ঐশী চেতনায় মুসলমানরা সব প্রতিকূলতাকে জয় করার কৃতিত্ব দেখায়। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অভ্যুদয়ের সময় যে আরবরা ছিল শতধা বিভক্ত, হানাহানি ছিল যাদের স্বভাবের অংশ, তারা ঐক্যবদ্ধ জাতিতে পরিণত হয়। হানাহানি দূরীভূত হয় আরব সমাজ থেকে। তার বদলে আরবরা একে অপরের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুলস্নাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘ইমানদার ব্যক্তি আপাদমস্তক বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার প্রতীক। যে ব্যক্তি কারও সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক রাখে না, তার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই, সে নিজেও ভালোবাসাপ্রাপ্ত হয় না’ (মুসনাদে আহমাদ থেকে মিশকাতে)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে বলা হয়েছে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুসলমান মুসলমানের ভাই। সে তার ওপর জুলুম করতে পারে না, তাকে অসহায় অবস্থায় পরিত্যাগ করতে পারে না এবং তাকে হেয়প্রতিপন্ন করতে পারে না। তিনি নিজের বুকের দিকে ইশারা করে বলেন, তাকওয়া এখানে, তাকওয়া এখানে, তাকওয়া এখানে। কোনো লোকের নিকৃষ্ট সাব্যস্ত হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে তার মুসলিম ভাইকে তুচ্ছজ্ঞান করে। প্রত্যেক মুসলমানের জীবন, ধনসম্পদ ও মানসম্মান প্রত্যেক মুসলমানের সম্মানের বস্তু (এর ওপর হস্তক্ষেপ করা তাদের জন্য হারাম) মুসলিম থেকে মিশকাতে। হজরত আবদুল গাফফার হাসান নদভির (রহ.) মতে, এ হাদিসে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। (১) ইসলামী ভ্রাতৃত্বের দাবি হচ্ছে, এক মুসলমান অপর মুসলমানের ওপর নিজেও জুলুম করবে না, তাকে জালেমের হাতেও তুলে দেবে না এবং নিজের আর্থিক, বংশীয়, দৈহিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রাধান্যের ভিত্তিতে অন্যকে তুচ্ছজ্ঞান করবে না। (২) তাকওয়ার মূল কেন্দ্র হচ্ছে অন্তর। মানুষের  অন্তর রাজ্যে যদি তাকওয়ার বীজ শিকড় গাড়তে পারে তবে তার বাহ্যিক দিকও সৎ কাজের পত্র-পল্লবে সুশোভিত হয়ে যায়।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর