রবিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

গিবতকারীর শাস্তি

মুফতি ওলিউল্লাহ পাটোয়ারী

গিবতকারীর শাস্তি

গিবতকারী ও চোগলখোরেরা মানুষের মধ্যে বিচ্ছেদ ও ঝগড়া সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একজনের কথা অন্যজনের কাছে বর্ণনা করে। মানুষের পারস্পরিক ভালোবাসাকে শত্রুতায় পরিণত করে। তারা মানুষের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী। তাদের দেখা যায় একজনের কাছে একরকম এবং অন্যজনের কাছে অন্যরকম চেহারা নিয়ে উপস্থিত হচ্ছে। তারা নিজেদের ইচ্ছামতো যখন যা খুশি তাই বলে থাকে। আল্লাহতায়ালা তাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘প্রত্যেক পেছনে ও সামনে পরনিন্দাকারীর জন্য দুর্ভোগ।’ সূরা হুমাজাহ, আয়াত ১। তারা নিজেদের কথা এবং কাজের মাধ্যমে মানুষের দোষ বর্ণনা করে বেড়ায়। তারা ক্রোধ ও ঘৃণার হকদার। কারণ তারা মিথ্যা, গিবত, চোগলখোরি, খিয়ানত, হিংসা ও ধোঁকা থেকে বিরত হয় না। এজন্যই কবরের আজাবের অন্যতম কারণ হলো চোগলখোরি করা।  আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যখন আমাকে মিরাজে নিয়ে যাওয়া হলো, তখন আমি  তামার নখবিশিষ্ট একদল লোকের কাছ দিয়ে অতিক্রম করলাম। তারা নখগুলো দিয়ে তাদের মুখ ও বুকে আঘাত করে ক্ষতবিক্ষত করছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, হে জিবরাইল! এসব লোক কারা? জিবরাইল (আ.) বললেন, এরা দুনিয়ায় মানুষের গোশত খেত এবং তাদের মানসম্মান নষ্ট করত। অর্থাৎ তারা মানুষের গিবত ও চোগলখোরি করত।’ হাদিসের শেষাংশে এসেছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিবরাইলকে জিজ্ঞাসা করলেন, কী অপরাধের কারণে তাকে এভাবে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে? জিবরাইল (আ.) বললেন, এই ব্যক্তি হলো এমন লোক যে সকালবেলা ঘর থেকে বের হয়েই মিথ্যা কথা বলত এবং সে মিথ্যা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ত। হাদিসে চোগলখোরের কঠিন শাস্তির কথা এসেছে। হুজাইফা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ ইবনে উমর (রা.) বলেন, আমি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যার সুপারিশ আল্লাহর নির্ধারিত কোনো দ-বিধি বাস্তবায়ন করার প্রতিরোধ হয়ে দাঁড়াল সে আল্লাহর সঙ্গে সংগ্রামে লিপ্ত হলো। যে ব্যক্তি জেনে-বুঝে অন্যায়ভাবে কারও সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হলো সে তা থেকে বিরত থাকার আগ পর্যন্ত আল্লাহর ক্রোধের ভিতরে থাকবে। আর যে ব্যক্তি কোনো মুমিন সম্পর্কে এমন কথা বলবে যা তার ভিতরে নেই সে যদি তা বর্জনকরত তওবা না করে মৃত্যুবরণ করে আল্লাহ তাকে রাদাগাতুল খাবালে প্রবেশ করাবেন। তার ওই কথার প্রায়শ্চিত্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করবে।

লেখক : খতিব, বাইতুন নূর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর