মঙ্গলবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

শ্রীলঙ্কায় গণতন্ত্রের জয়

প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে অভিনন্দন

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে স্বপদে বহাল থাকা অবস্থায় আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। বিক্রমাসিংহের সঙ্গে জোট বেঁধেই শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে উগ্র জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রপতি মাহিন্দ্রা রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছিলেন মাইত্রিপালা সিরিসেনা। এ জয়লাভ সার্কভুক্ত এই দ্বীপদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে চীনা আধিপত্যের অবসান ঘটায়। নির্বাচনে প্রতিবেশী দেশ ভারতের আশীর্বাদ ছিল সিরিসেনা ও বিক্রমাসিংহের জোটের দিকে। কিন্তু অচিরেই রাষ্ট্রপতি সিরিসেনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। মনে করা হয় এ দূরত্ব সৃষ্টির পেছনে চীনের ইন্ধনও জড়িত ছিল। শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে বিক্রমাসিংহের পেছনে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থা থাকা সত্ত্বেও তাকে বরখাস্ত করেন রাষ্ট্রপতি সিরিসেনা। সে দেশের সংবিধানে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা থাকলেও তাকে বরখাস্তের কোনো ক্ষমতা তিনি রাখেন না। সিরিসেনা তার একসময়ের রাজনৈতিক মিত্রকে শুধু বরখাস্ত করাই নয়, তার বদলে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেন তার একসময়ের প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দ্রা রাজাপক্ষেকে। প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে রাষ্ট্রপতির এই অসাংবিধানিক সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেন এবং নিজেকে বৈধ প্রধানমন্ত্রী দাবি করে সরকারি বাসভবনে অবস্থান করেন। সংসদে নতুন প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে আস্থা ভোট নেওয়া হলে দুবার রাজাপক্ষ পরাজিত হন। তার পরও বিক্রমাসিংহেকে মেনে নিতে রাষ্ট্রপতি সিরিসেনা অস্বীকৃতি জানালে রাজনৈতিক সংকট দানা বেঁধে ওঠে। শ্রীলঙ্কা কার্যত সরকারহীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়। এ প্রেক্ষাপটে দেশের সর্বোচ্চ আদালত রাষ্ট্রপতির পদক্ষেপকে অবৈধ ঘোষণা করলে তিনি মাথা নোয়াতে বাধ্য হন এবং বিক্রমাসিংহেকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেন। শ্রীলঙ্কায় বৈধ সরকারের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক ক্যু করার অপচেষ্টা নিঃসন্দেহে এক উদ্বেগের ঘটনা। দক্ষিণ এশিয়ার দুটি দ্বীপদেশ মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক সংকটে চীনা মদদের অভিযোগ সত্যিকার অর্থেই দুর্ভাগ্যজনক। বিক্রমাসিংহের প্রধানমন্ত্রী পদে আবারও শপথের মাধ্যমে বন্ধু দেশ শ্রীলঙ্কায় গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার যে জয় হয়েছে আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই।

সর্বশেষ খবর