গার্মেন্ট শ্রমিকরা তাদের টানা আট দিনের বিক্ষোভ শেষে কাজে ফিরতে শুরু করেছেন। গার্মেন্ট শিল্পাঞ্চলগুলোয় থেমে গেছে শ্রমিকদের স্লোগান, পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা। প্রতিটি কারখানার সামনে পুলিশ থাকলেও সর্বত্রই চলছে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। গার্মেন্ট শিল্পে হঠাৎ করে অসন্তোষ দানা বেঁধেছিল বাস্তবায়ন পর্যায়ে ঘোষিত মজুরি কাঠামোর কিছু অসংগতিকে কেন্দ্র করে। স্মর্তব্য, সর্বনিম্ন মজুরি ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করে গত ২৫ নভেম্বর গেজেট প্রকাশ করে সরকার। ১ ডিসেম্বর থেকে তা কার্যকরের নির্দেশনা দেওয়া হয় সেখানে। বেতন হাতে নেওয়ার পরপরই মজুরি কাঠামোর কয়েকটি গ্রেডে বেতন কমে যাওয়ার অভিযোগ জানিয়ে গত ৬ জানুয়ারি থেকে ঢাকা ও আশপাশের গার্মেন্ট কর্মীরা বিক্ষোভ করেন। আন্দোলনের মুখে গত রবিবার সচিবালয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে ছয় গ্রেডে বিভিন্ন অঙ্কের মজুরি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ডিসেম্বর থেকেই এ কাঠামো কার্যকর হবে। ডিসেম্বরের বেতন হয়ে যাওয়ায় আগামী ফেব্রুয়ারিতে জানুয়ারি মাসের মজুরি নেওয়ার সময় বকেয়া বাড়তি বেতন পাবেন শ্রমিকরা। মজুরি কাঠামো সমন্বয়ের পর ঢাকার সাভার ও আশুলিয়ার গার্মেন্ট শ্রমিকরা কাজে ফিরেছেন। টানা আট দিন বিক্ষোভের পর ওই অঞ্চলের দু-একটি ছাড়া অন্যসব কারখানায় কাজ চলছে। কারখানাগুলোর সামনে পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি গার্মেন্ট শিল্পাঞ্চলে টহল দিচ্ছে পুলিশ ও র্যাব। মঙ্গলবার আশুলিয়ার জামগড়ার একটি কারখানার শ্রমিকরা কাজ না করে বেরিয়ে গেলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে বলা হয়েছে, আশুলিয়ার গার্মেন্ট শিল্পাঞ্চলে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। শ্রমিক অসন্তোষে উৎসাহ জুগিয়েছেন এমন কয়েকজনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। গার্মেন্ট শিল্পে শান্তি ফিরে আসা স্বস্তিদায়ক ঘটনা। এই শিল্পের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ৪০ লাখ শ্রমিক। তাদের ওপর নির্ভরশীলের সংখ্যা অন্তত ২ কোটি মানুষ। দেশের অর্থনীতিতে প্রাণভোমরার ভূমিকা পালনকারী এই শিল্পে অস্থিতিশীলতা দানা বেঁধে উঠলে তা সবার জন্যই বিড়ম্বনা ডেকে আনবে; যা কোনোভাবেই কাম্য হওয়া উচিত নয়।