রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অজ্ঞান পার্টি নামের ৪০ জন মানুষবেশী শকুনকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। বুধবার রাতে ডিবির দক্ষিণ বিভাগ, পশ্চিম বিভাগ ও সিরিয়াস ক্রাইম বিভাগের পৃথক অভিযানে এসব অপরাধীকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে চেতনানাশক ট্যাবলেট, ট্যাবলেট-মিশ্রিত খেজুর, হালুয়া ও জুস উদ্ধার করা হয়েছে। স্মর্তব্য, প্রতি বছরের মতো এ বছরও রাজধানীসহ দেশের মহানগরগুলোয় ঈদুল আজহা সামনে রেখে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাস-লঞ্চ-ট্রেন টার্মিনালসহ জনাকীর্ণ স্থানে হকার সেজে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করছে তারা। আর এসব খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে চেতনানাশক ওষুধ। ফলে এগুলো কিনে কেউ খেলেই মাশুল দিতে হচ্ছে। কখনো কখনো চেতনানাশক ওষুধের মাত্রা বেশি হলে প্রাণহানিও ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একের পর এক অজ্ঞান পার্টির সদস্য আটক করেও তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। হাতে গোনা কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলেও আদালত থেকে জামিন নিয়ে অপরাধী চক্রের সদস্যরা আবারও একই কাজে জড়িয়ে পড়ছে। রাজধানী ঢাকায় বাস-লঞ্চ-রেলস্টেশনসহ অন্তত ৪০টি পয়েন্টে অজ্ঞান পার্টির শতাধিক গ্রুপ সক্রিয়। সহজ-সরল মানুষকে লক্ষ্য করে তারা ফেরিওয়ালা সেজে জুস, ডাবের পানি, খেজুর, ঝালমুড়ি, শরবতসহ নানা উপকরণ বিক্রি করছে। আর প্রতারিত মানুষ সর্বস্ব হারানোর পাশাপাশি জীবন হারানোর মতো ঝুঁঁকিতে পড়ছে। অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে অপরিচিত কারও দেওয়া খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পাশাপাশি ঈদুল আজহা সামনে রেখে অভিযান চালিয়ে তারা অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। প্রতি বছর ঈদুল ফিতরের আগে এবং ঈদুল আজহা ও দুর্গাপূজার মৌসুমে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা গ্রেফতার হলে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে ফাঁকফোকর থাকায় আদালত থেকে অতিসহজে ছাড়া পায়। অভিজ্ঞ মহলের মতে, এ ধরনের অপরাধী যাতে সহজে ছাড়া না পায় তা নিশ্চিত করতে আইনের ফাঁকফোকর বন্ধ করা দরকার। আমাদের বিশ্বাস, সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেবে। অজ্ঞান পার্টির মানুষবেশী শকুনদের উৎখাতকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া হবে- এমনটিও কাম্য।