শিরোনাম
শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

নুসরাত হত্যার বিচার

রায় দ্রুত বাস্তবায়ন হোক

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৬ জনকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন ফেনী জজ কোর্টের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ। হত্যার সাত মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতের দৃষ্টান্তমূলক রায় ঘোষণা নিঃসন্দেহে এক ব্যতিক্রমী ঘটনা। স্মর্তব্য, ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে গত ২৭ মার্চ নুসরাতকে যৌন হয়রানির অভিযোগে থানায় মামলা করেন তার মা শিরিন আখতার। এ ঘটনায় ওই দিনই অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর লম্পট অধ্যক্ষের পোষা অনুগত কিছু ক্যাডার তাকে মুক্ত করতে রাস্তায় আন্দোলনও করে। ৩ এপ্রিল খুনিরা সিরাজের সঙ্গে জেলখানায় পরামর্শ করে ৪ এপ্রিল মাদ্রাসার ছাত্রাবাসে নুসরাতকে হত্যার পরিকল্পনা আঁটে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৬ এপ্রিল নুসরাত মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে খুনিরা পরিকল্পিতভাবে সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে তার দেহে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। ঘটনাস্থল থেকে নুসরাতকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর তাকে স্থানান্তর করা হয় ফেনী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেখানেই চিকিৎসা হয় নুসরাতের। এ ঘটনায় নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সুনির্দিষ্ট আটজনকে ও অজ্ঞাতপরিচয় বোরকা পরা চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে হস্তান্তর করা হয় ১০ এপ্রিল। সেদিন রাতেই মারা যান নুসরাত। মৃত্যুর আগে ডাইং ডিক্লারেশন দিয়ে যান নুসরাত। সেই ডিক্লারেশনের ক্লু ধরেই এগোতে থাকে মামলা। এক এক করে গ্রেফতার করা হয় ২১ আসামিকে। হত্যাকান্ডের বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ১২ জন। ২৮ মে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়। ২০ জুন চার্জ গঠনের পর ৮৭ জন হত্যাকান্ডের বিষয়ে সাক্ষ্য দেন। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তের মধ্যে লম্পট অধ্যক্ষ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও নুসরাতের কয়েকজন সহপাঠী রয়েছেন। নুসরাত হত্যার দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক রায়ের জন্য আমরা বিচারসংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানাই। আশা করতে চাই- সাজা দ্রুত নিশ্চিতে আপিল ও আইনগত প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর