রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

রণদাপ্রসাদ কাজী নজরুলকে জিজ্ঞাসা করলেন তুমি কবিতা লেখ?

অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত

রণদাপ্রসাদ কাজী নজরুলকে জিজ্ঞাসা করলেন তুমি কবিতা লেখ?

রণদাপ্রসাদ সাহা। বিশ শতকের খ্যাতিমান সমাজসেবী, শিল্পানুরাগী। দানবীর আর পি সাহা নামে তাঁর পরিচিতি ছিল বাংলাজুড়ে। তাঁর জন্ম ১৮৯৬ সালের ১৫ নভেম্বর, সাভারের কাছৈড় গ্রামে। পিতা দেবেন্দ্রনাথ পোদ্দার, মা কুমুদিনী দেবী। চার ভাইবোনের মধ্যে রণদা ছিলেন দ্বিতীয়। মাত্র সাত বছর বয়সে মাতৃহারা হন তিনি। তৃতীয় শ্রেণির পর তাঁর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর বাড়ি থেকে পালিয়ে কলকাতায় গিয়ে কুলি, শ্রমিক, ফেরিওয়ালার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন দুরন্ত, হাসিখুশি, চঞ্চল ও নির্ভীক। কলকাতায় বসবাসের প্রথম পর্বে রণদা যুক্ত হয়েছিলেন স্বদেশী আন্দোলনের সঙ্গে। আর সেই সূত্রে তাঁকে কিছুদিন হাজতবাস করতে হয়। মানুষের কল্যাণ ও সমাজের উন্নয়ন ছিল তাঁর ব্রত।

১৯১৪ সালের ২৮ জুলাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধর সময় রণদাপ্রসাদ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯১৪-১৯২০ সাল পর্যন্ত সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন তিনি। বেঙ্গল রেজিমেন্টে ভর্তি হয়ে রণদা যখন পাকিস্তানের নওশেরায় প্রশিক্ষণের জন্য  যান সেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের। রণদা তখন অস্থায়ী সুবাদার মেজর। তরুণ নজরুল কিন্তু সামরিক রেওয়াজের তোয়াক্কা করেন না। রণদা তাঁকে একদিন ডেকে জিজ্ঞাসা করেন, কাজী, তুমি গান গাও?

-আজ্ঞে, অল্পবিস্তর চিৎকার করি বটে।

-কবিতা লেখ?

-লোকে তেমন দুর্নামও করে।

রণদাপ্রসাদ সাহা এরপর কাজী নজরুল ইসলামকে গান শেখার ব্যবস্থা করেছিলেন। পরবর্তীতে নজরুলের অসুস্থতার খবর পেয়ে রণদা তাঁকে বাংলাদেশে এনে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন, কিন্তু নানা কারণে ভারত সরকার তাঁকে আসতে দেয়নি।

রণদাপ্রসাদ সেনাবাহিনীর চাকরি শেষে সরকারের রেল বিভাগে টিকিট কালেক্টর পদে যোগ দেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল শিয়ালদহ রেলস্টেশন থেকে দর্শনা হয়ে সিরাজগঞ্জ ঘাট রেলস্টেশন পর্যন্ত রেলপথ। তিনি ১৯৩২ সালে রেল বিভাগের চাকরি থেকে অবসর নেন। কলকাতায় স্থিত হয়ে শুরু করেন কয়লা ও লবণের ব্যবসা। পরে কয়লার ব্যবসা অধিক লাভজনক হওয়ায় লবণের ব্যবসা ছেড়ে দেন। প্রথম দিকে তিনি নিজে বাড়ি বাড়ি কয়লা সরবরাহ করতেন। কলকাতায় কয়লার ডিলারশিপ নেওয়ায় তাঁর ব্যবসা আরও প্রসারিত হয়। এ ব্যবসায় তাঁকে সহযোগিতা করেন ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার জমিদার সতীশ চৌধুরী। ১৯৩৯ সালে জমিদার নৃপেন্দ্রনাথ চৌধুরী, ডা. বিধানচন্দ্র রায়, বিচারপতি জে এন মজুমদার ও নলিনীরঞ্জন সরকারকে সঙ্গে নিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘বেঙ্গল রিভার সার্ভিস’। বেঙ্গল রিভার সার্ভিস মূলত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথসমূহে মালামাল পরিবহন করত। নৃপেন্দ্রনাথ চৌধুরী ছিলেন এ কোম্পানির প্রথম ব্যবস্থাপনা পরিচালক। পরে তিনি এ কোম্পানির একক মালিকানা লাভ করেন। ওই সময় নারায়ণগঞ্জে একটি ডকইয়ার্ড নির্মাণ করেন। এখানে বেঙ্গল রিভার সার্ভিসের লঞ্চ ছাড়াও অন্যান্য কোম্পানির ও ব্যক্তিগত লঞ্চও মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হতো।

১৯৪০ সালে রণদা নারায়ণগঞ্জের জর্জ অ্যান্ডারসনের যাবতীয় পাট ব্যবসা কিনে নেন। এটি আগে ডেভিড অ্যান্ড কোম্পানি পরিচালনা করত। রণদা পাটের ব্যবসাকে আধুনিকীকরণ করেন। পাট মজুদের জন্য তিনি পাটকলসংলগ্ন একাধিক গুদাম নির্মাণসহ ’৪৬ সালে নতুন করে বেইল প্রেসিং যন্ত্র স্থাপন করেন। পাটকলের অন্যসব ইউনিট পরে বন্ধ হয়ে গেলেও এই প্রেসিং যন্ত্র সচল ছিল। এর ফলে বহু কর্মী বেকারত্ব থেকে রেহাই পান। ’৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে সরকার প্রচুর খাদ্য সংগ্রহ ও মজুদের জন্য সারা বাংলায় চারজন প্রতিনিধি নিয়োগ করে, রণদাপ্রসাদ ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম। এ ব্যবসায়ও তিনি প্রচুর মুনাফা অর্জন করেন।

রণদাপ্রসাদ চাকরি শুরু করেছিলেন যুদ্ধ ক্ষেত্রে অসুস্থ ও আহতদের সেবাদানের মাধ্যমে। এজন্য সাধারণ মানুষের প্রতি তাঁর অসীম ভালোবাসা ছিল। গরিব, অসুস্থ মানুষ পেলেই সেবার হাত বাড়িয়ে দিতেন। অন্যদিকে তিনি বিশ্বাস করতেন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে পারলে সমাজে পরিবর্তন আসবে। আর এজন্য ১৯৩৮ সালে মির্জাপুরে তিনি তাঁর মায়ের নামে কুমুদিনী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। হাসপাতালের বহির্বিভাগ হিসেবে তাঁর ঠাকুরমার নামে ‘শোভাসুন্দরী ডিসপেনসারি’ চালু করেন। ১৯৪৩ সালে কুমুদিনী হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ’৪৪ সালের ২৭ জুলাই বাংলার গভর্নর লর্ড আর জি কেসি ২০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। ’৫৩ সালে কুমুদিনী হাসপাতালে প্রথম ক্যান্সারের চিকিৎসা চালু হয়। এটি ছিল প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। ’৭০ সালে কুমুদিনী হাসপাতালে ৫০ শয্যার যক্ষ্মা ওয়ার্ড চালু করা হয়। রোগীদের সেবা-শুশ্রƒষার প্রয়োজনে নার্সের ঘাটতি পূরণ করার জন্য নার্স প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। রণদাপ্রসাদ কুমুদিনী হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা প্রদানের জন্য বিভিন্ন সময় দেশ ও বিদেশের খ্যাতনামা চিকিৎসকদের হাসপাতালে আমন্ত্রণ করতেন।

১৯৩৮ সালে রণদা প্রসাদের স্ত্রী শোভাসুন্দরী ডিসপেনসারি-সংলগ্ন এলাকায় ২০০ শিক্ষার্থীর আবাসিক সুবিধাসহ একটি বালিকা বিদ্যালয়ের ভিত্তি স্থাপন করেন। মাত্র ১০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে চালু হওয়া এ প্রতিষ্ঠান ’৪৫ সালে ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হলে আর পি সাহার প্রপিতামহীর নামে নামকরণ হয় ভারতেশ্বরী হোমস। রণদাপ্রসাদ পরবর্তীতে জ্যাঠামণি নামেই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারী এবং প্রতিবেশীদের কাছে পরিচিতি লাভ করেন। ভারতেশ্বরী হোমসে শুধু শিক্ষা দেওয়া হয় না, সেখানে একজন শিক্ষার্থীকে সমাজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্রীড়া, শরীরচর্চা, সুন্দর আচার-ব্যবহারও শেখানো হয়। আমি হোমসের অনেকের সঙ্গেই পরিচিত হয়েছিলাম। একজন আমার স্ত্রীর বড় বোন মানসী দিদি। যাঁর কাছ থেকে উপরোল্লিখিত গুণাবলি অর্জনের চেষ্টায় কোনো ত্রুটি করিনি; তার পরও মনে হয় শিখতে পারিনি। আর দুজনের সঙ্গে পরিচিতি লাভ এমনকি ভাইবোনের সম্পর্কে ছিলাম, তাঁরা হলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের আমার এক বছরের সিনিয়র স্মৃতিদি (স্মৃতি চৌধুরী) এবং সুপ্রিয়াদি (সুপ্রিয়া ঘোষ)। তাঁদের সঙ্গে কথা বললে বোঝা যেত, কত মৃদু ও মিষ্টিভাষী। তাঁদের একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। তা ছাড়া হোমসের প্রত্যেক শিক্ষার্থী আমার জানা মতে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত।

১৯৪৩ সালে রণদা টাঙ্গাইলে মেয়েদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন কুমুদিনী কলেজ। ১৯৪৬ সালে তিনি পিতার নামে মানিকগঞ্জে প্রতিষ্ঠা করেন দেবেন্দ্র কলেজ। এর বাইরে তিনি দেশের বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। ’৪৩ সালে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে তিনি কলকাতা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় চার মাস পরিচালনা করেন বেশকিছু লঙ্গরখানা। ’৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে রণদাপ্রসাদ মানবতার কল্যাণে রেডক্রস তহবিলে অর্থ প্রদান করেন। স্কুল-কলেজ, চিকিৎসালয় ও হাসপাতাল ছাড়াও তিনি জনস্বার্থে কমিউনিটি সেন্টার, পাবলিক হল, নাট্যমঞ্চ ইত্যাদি নির্মাণ করেন। ’৫৮ সালে রণদার উদ্যোগে ঢাকা সেনানিবাসের সিএমএইচে প্রসূতি বিভাগ স্থাপন করা হয়। রণদাপ্রসাদ সাহা বলতেন, ‘মানুষের দুটো জাত- একটা নারী আর একটা পুরুষ। আর মানুষের ধর্ম একটাই, সেটা মানবধর্ম।’ তাঁর গড়ে তোলা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদেরও তিনি এই আদর্শের শিক্ষাই দিতে চেয়েছেন। জীবনে কর্মের মন্ত্রে দীক্ষিত ছিলেন তিনি। কোনো ফলের আশা নয়, কর্মকেই জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন। এসব জীবনদৃষ্টিই তাঁকে এক মহামানুষে পরিণত করেছিল।

সংস্কারমুক্ত সমাজ গঠনের স্বপ্ন দেখতেন রণদাপ্রসাদ সাহা। এ কারণেই শহর থেকে দূরে টাঙ্গাইলের এক গ্রামকে কর্মস্থল হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। একটি সমাজের উন্নতির জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও যে সমানতালে এগিয়ে যেতে হয় তা জানতেন রণদাপ্রসাদ। তিনি সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠায় নিমগ্ন ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, সমাজের পরিবর্তন ঘটাতে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। আর সে কারণে তিনি একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর জীবনে কোনো আড়ম্বর ছিল না। নিজে একটি সাধারণ ঘরে বসবাস করতেন। সাধারণ জীবনযাপন করতেন। নিজের অর্জিত অর্থের সিংহভাগ ব্যয় করেছেন মানুষের কল্যাণে।

১৯৪৭ সালে রণদা তাঁর সব ব্যবসা, কলকারখানা, সম্পত্তি এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য ‘কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট অব বেঙ্গল’ গঠন করেন। বাংলাদেশে ট্রাস্টের আওতায় কুমুদিনী হাসপাতাল, নার্সিং বিদ্যালয়, মহিলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়, ভিলেজ আউটরিচ প্রোগাম, ভারতেশ্বরী হোমস, ট্রেড ট্রেনিং বিদ্যালয়, কুমুদিনী হ্যান্ডিক্রাফটস, জুট বেলিং ও ওয়্যারহাউস, বেঙ্গল রিভার সার্ভিস, ফার্মাসিউটিক্যালসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে। রণদাপ্রসাদের সুযোগ্য সহধর্মিণী বালিয়াটির জমিদারকন্যা কিরণবালা দেবী। তাঁদের চার সন্তানের মধ্যে বড় বিজয়া। কন্যা বিজয়া অল্প বয়সেই সংসারী হয়ে যান। দ্বিতীয় পুত্র দুর্গাপ্রসাদ। দুর্গা অসুস্থ অবস্থায় কলকাতায় মারা যান। তৃতীয় কন্যা জয়া লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশে ফিরে ভারতেশ্বরী হোমসের দায়িত্ব নেন। কনিষ্ঠ পুত্র ভবানীপ্রসাদ বাবার আদর্শে গড়া দাতব্য প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য একটু একটু করে প্রস্তুত হচ্ছিলেন। ১৯৭১ সালের ৭ মে পশ্চিম পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী ও তাদের এ-দেশীয় সহযোগীরা রাতের অন্ধকারে নারায়ণগঞ্জে কুমুদিনীর হেড অফিস থেকে রণদাপ্রসাদ সাহা ও তার পুত্র ভবানীপ্রসাদ সাহাকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাঁদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। মহান এই বাঙালিকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সম্মান স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়। ১৯৮৪ সালে ‘কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’ সমাজসেবায় অসামান্য অবদানের জন্য ‘স্বাধীনতা পদক’ লাভ করে। বাংলাদেশ সরকারের ডাক বিভাগ ১৯৯১ সালে রণদাপ্রসাদের স্মরণে একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করে।

রণদাপ্রসাদ সাহার (জ্যাঠামণি) কনিষ্ঠ পুত্র ভবানীপ্রসাদ বাবার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নিতে না পারলে তাঁর যোগ্য পুত্র রাজীবপ্রসাদ সাহার (আমি যাঁকে গ্র্যান্ড জুনিয়র আর পি সাহা বলি) নেতৃত্বে এই প্রতিষ্ঠানগুলো আরও বেশি বিকশিত হয়ে সুশোভিত হয়েছে। ভালো কাজ সমাজকে আলোকিত করে। আর পি সাহা আজীবন সংগ্রাম করে আমাদের সমাজকে আলোকিত করেছেন। মানুষের কল্যাণে কাজ করে অমর হয়ে আছেন। বিজয়ের মাসে এই কৃতী বাঙালিকে গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর অবদান জাতি চিরকাল স্মরণ করবে।

                লেখক : সাবেক উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল   বিশ্ববিদ্যালয়।

সর্বশেষ খবর