বাঙালির হৃৎস্পন্দন হিসেবে বিবেচিত অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২০ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতি-সাহিত্যের মান আরও উন্নত করে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এ উদ্দেশ্যে বাংলা সাহিত্যের ব্যাপক অনুবাদের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। বিশ্বের মানুষ যাতে বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারে তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অনুবাদের কোনো বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রী বইমেলায় বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এ বছর বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- কবিতায় মাকিদ হায়দার, উপন্যাসে ওয়াসি আহমেদ, প্রবন্ধ ও গবেষণায় স্বরোচিষ সরকার, অনুবাদে খায়রুল আলম সবুজ, নাটকে রতন সিদ্দিকী, কিশোর সাহিত্যে রহীম শাহ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাহিত্যে রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম, বিজ্ঞান উপন্যাসে নাদিরা মজুমদার, ভ্রমণ সাহিত্যে ফারুক মইনউদ্দিন ও লোকসাহিত্যে সাইমন জাকারিয়া। বাংলা একাডেমিতে অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধন শেষে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) স্টলে গ্র্যাফিক নভেল ‘মুজিব’-এর সপ্তম খন্ডের মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর হাতে গ্র্যাফিক নভেল ‘মুজিব’-এর সপ্তম খ- তুলে দেন সিআরআই ট্রাস্টি ও গ্রন্থটির প্রকাশক রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। প্রধানমন্ত্রী অমর একুশে গ্রন্থমেলা উদ্বোধনকালে বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার যে তাগিদ দিয়েছেন তা খুবই প্রাসঙ্গিক। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির ঐতিহ্য গর্ব করার মতো। সেই পরাধীন যুগে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার পেয়ে বাংলা সাহিত্যের গৌরবকে জাজ্বল্যমান করেছিলেন। এশিয়ায় তিনিই ছিলেন প্রথম নোবেল বিজেতা। তারপর গত ১০৭ বছরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলা সাহিত্যের বড় কোনো অর্জন নেই। অথচ এই সময়ে বাংলা কবিতা, গল্প, উপন্যাস প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়েছে। অর্জন করেছে বিশ্বমান। কিন্তু অনুবাদের অভাবে বাংলা সাহিত্যের এ অর্জনের যথাযথ স্বীকৃতি অর্জিত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী গত কয়েক বছরে অমর একুশে গ্রন্থমেলা উদ্বোধনকালে অনুবাদের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার তাগিদ দিলেও কতটুকু অগ্রগতি ঘটেছে তা বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়। বাংলা ভাষার মর্যাদার স্বার্থে এ ব্যাপারে সাহিত্যসংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হতে হবে। একুশের গ্রন্থমেলা বাংলা সাহিত্যের বিকাশে প্রেরণাদায়ক ভূমিকা রাখুক- এমনটিই প্রত্যাশিত।