করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৩১ মার্চ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়টি বহাল থাকবে। বিদেশ থেকে আসা লোকজনের মাধ্যমে যাতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে যারাই বিদেশ থেকে আসুক না কেন তাদের অবশ্যই ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। ডিসি, ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যান, সিভিল সার্জন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের মেয়রদের এ বিষয়ে খোঁজ রাখতে বলা হয়েছে। বিদেশ-ফেরতদের শনাক্ত করে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তটি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় খুবই গুরুত্বের দাবিদার ও তাৎপর্যপূর্ণ। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কেউ এ নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, সন্তান যেন একা ঘরের বাইরে বের না হয়। কারও জ্বর, সর্দি, কাশি থাকলে তা নিয়ে যেন কেউ বাইরে বের না হয়। অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধের সময় শিক্ষার্থীরা যাতে বাড়িতে থাকে এটি অভিভাবকদের নিশ্চিত করতে হবে। স্কুল, কলেজ বন্ধ পেয়ে তাদের কেউ যেন আত্মীয়-বাড়ি বেড়াতে না যায়। সামনে রমজান এবং গ্রীষ্মকালীন ছুটি রয়েছে, প্রয়োজন হলে সেই ছুটির সঙ্গে এ ছুটি সমন্বয় করা হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশের সিনেমা হলগুলো আগামী ২ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি। করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও বড় ধরনের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। করোনাভাইরাসে কাবু ইতালিসহ ইউরোপ থেকে লক্ষাধিক মানুষ দেশে ফেরায় আতঙ্ক দানা বেঁধে উঠেছে। এ আতঙ্ক থেকে আত্মরক্ষায় সর্বাত্মক সতর্কতার বিকল্প নেই। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, জনসমাগমস্থল এড়িয়ে চলা, যেখানে সেখানে থুথু-কাশি না ফেলার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। ধর্মীয় উপাসনাগারগুলোয় সর্দি-কাশি অথবা জ্বর আছে এমন লোকজনের প্রবেশ যাতে না ঘটে সেদিকে সতর্ক থাকা দরকার। বিদেশ থেকে যারা দেশে ফিরছেন তাদের নিজেদের বাসগৃহে কোয়ারেন্টাইনে রাখার বদলে সরকারি উদ্যোগে রাখার বিষয়টি ভাবা যেতে পারে।