রবিবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

পলিথিনের ব্যবহার

পুরোপুরি রোধ করতে হবে

২০০২ সালের ৮ এপ্রিল পরিবেশ অধিদফতর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কিছু শর্ত সাপেক্ষে পলিথিনের সব ধরনের শপিং ব্যাগ উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রি, বিক্রির জন্য প্রদর্শন, মজুদ ও বিতরণ নিষিদ্ধ করে। সে সময় আইনটি বেশ সফলভাবে প্রয়োগও হয়। কাগজের ঠোঙা আর কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন ক্রেতারা। পরে আইন প্রয়োগে ব্যর্থতার কারণেই নিষিদ্ধ পলিথিন শপিং ব্যাগ ফিরে এসেছে। দিন দিন এর ব্যবহার বেড়েই চলেছে। বর্তমানে নিত্যপণ্যের বাজারে পলিথিনের আধিপত্য চরম পর্যায়ে; যেন পলিথিন আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অনিবার্য অংশ। প্রতিটি নিত্যপণ্যের বাজারে পণ্য বিক্রিতে প্রায় শতভাগ ব্যবহার হচ্ছে ক্ষতিকর পলিথিন। চাল, ডাল, তেল, সবজি বিক্রিতে ব্যবহার হচ্ছে পলিব্যাগ। এমনকি পলিথিন ব্যাগে করে খাবার আনা-নেওয়া, হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে গরম খাবার বহন করা, ফ্রিজে পণ্য রাখতেও ব্যাপকভাবে পলিথিন ব্যবহার হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরির কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। ফলে পলিথিনের ব্যবহার মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বাড়ছে রোগব্যাধি, অকালমৃত্যু। হুমকিতে পড়ছে জনস্বাস্থ্য। পলিথিন ড্রেনে পড়ে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। মাটির উর্বরাশক্তি কমছে। নদীতে গিয়ে করছে দূষণ। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বলছে, ঢাকায় প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি পলিথিন ব্যাগ জমা হচ্ছে। আর বিশ্বে প্রতি বছর ৫ লাখ কোটি পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে। পলিথিনের বহুবিধ ব্যবহারের কারণে মানবদেহে বাসা বাঁধছে ক্যান্সার। বিশেষজ্ঞদের মতে পলিথিন বা প্লাস্টিকের ব্যবহারের ফলে হরমোন বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে দেখা দিতে পারে বন্ধ্যত্ব, নষ্ট হতে পারে গর্ভবতী মায়ের ভ্রƒণ, বিকল হতে পারে লিভার ও কিডনি। জনস্বাস্থ্যের বিষয় বিবেচনা করে পলিথিন ব্যবহারে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। জনগণকেও সচেতন হতে হবে। নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার পুরোপুরি রোধ করতে হবে শক্ত হাতে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর