মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

পৌর নির্বাচন

দুর্জনদের দূরে রাখার উদ্যোগ নিন

আগের তিন ধাপের মতো রবিবার চতুর্থ ধাপের ৫৫ পৌরসভার নির্বাচনও শেষ হয়েছে নানা অভিযোগের পসরা নিয়ে। আমাদের দেশে স্থানীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোট উৎসবে মেতে ওঠে সাধারণ মানুষ। আগের তিন ধাপের নির্বাচনের মতো চতুর্থ ধাপেও ভোট উৎসবের বদলে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, ব্যালট ছিনতাই, প্রকাশ্যে সিল মারার পাশাপাশি ঘটেছে নির্বাচন বর্জনের ঘটনা। কোনো কোনো পৌরসভায় বিচ্ছিন্নভাবে ঘটা এসব কর্মকা- নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতার সংকটকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। অনিয়মের কারণে সাতটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বন্ধ রাখা হয়। চট্টগ্রামের পটিয়ায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে একজনের প্রাণহানি যত বিচ্ছিন্ন ঘটনাই হোক না কেন পৌর নির্বাচনের মুখে কালিমা লাগিয়েছে। পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোট উৎসবের ব্যত্যয় যেমন দুঃখজনক তেমন সংঘর্ষ, হানাহানি, ব্যালটবাক্স ছিনতাই ও প্রাণহানিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করা যায়। আমাদের মতে দুটি কারণে স্থানীয় নির্বাচনের পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে। নির্বাচন থেকে সন্ত্রাসী মস্তান তথা সমাজবিরোধীদের দূরে রাখতে না পারলে ভালো নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হলেও সংঘাত-সংঘর্ষ, ভোট ছিনতাইয়ের আশঙ্কা থাকবেই। এটি বন্ধ করতে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন করার অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে। অতীতে স্থানীয় নির্বাচনে নির্বাচিত হননি এমন নতুন প্রার্থীদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করে দিতে হবে। প্রার্থীদের মাদকাসক্তির ডোপ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করাও জরুরি। অপরাধমূলক কর্মকান্ডে মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন অথবা গুরুতর মামলা রয়েছে এমন প্রার্থীকেও নির্বাচনের বাইরে রাখার বিষয়ে ভাবতে হবে। দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচন হওয়ায় দলের মনোনীত ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থকদের সংঘর্ষে নির্বাচনের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। নির্বাচন কমিশনও বিতর্কের ঊর্ধে উঠতে পারছে না। নির্বাচনের প্রতি এখন সাধারণ মানুষের আস্থায় চিড় ধরছে। যে দেশের মানুষ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোট উৎসবে মেতে ওঠে সে দেশে সে চিত্র ‘ইতিহাস’ হতে চলেছে। তা কাম্য কিনা ভেবে দেখতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর