বৃহস্পতিবার, ২০ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

ভেজাল বিটুমিন

নিম্নমানের উপকরণে ঝুঁকি বাড়ছে

বাংলাদেশের সড়ক চূড়ান্ত পর্যায়ে অনিরাপদ। প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় ৬৪ জন, বছরে ক্ষতি অন্তত ৩৪ হাজার কোটি টাকার। বহু কারিগরি কারণ ও রাজনৈতিক প্রশাসনিক দুর্বৃত্তপনা এর জন্য দায়ী। আমাদের রাস্তাগুলো কেন মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে তার জন্য বিবেচনায় নিতে হবে অন্তরালের কারণগুলো। দেশে সড়কের পিচ ঢালাইয়ে তরল জাতীয় বিটুমিনের ব্যবহার বন্ধ হচ্ছে না। ঠিকাদাররা কম দামের ৮০-১০০ গ্রেডের তরল বিটুমিন ব্যবহার করছেন। এতে সড়কগুলো টেকসই হচ্ছে না। বিটুমিন উৎপাদনকারী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড বা ইআরএল চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় আমদানি করা বিটুমিনের ওপর নির্ভরতা বাড়ছে। এ সুযোগে সারা দেশের সড়কে আমদানি হওয়া নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করছেন অসাধু ঠিকাদাররা। নকল বিটুমিনে তৈরি সড়ক দ্রুতই ভাঙছে। সে ভাঙা সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। দেশের প্রায় ৪৫টি জেলায় শত শত সড়কের বিভিন্ন জায়গা দেবে গেছে কিংবা খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। এসব রাস্তা সংস্কারের কাজও চলছে। খোলা ড্রামে, পুরনো আমলের প্রযুক্তি ব্যবহার করে, আগুনে পুড়িয়ে গলানো হচ্ছে বিটুমিন। বিটুমিন গরম করার আদর্শ তাপমাত্রা হলো সর্বোচ্চ ১৫০ থেকে ১৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু এখানে আদর্শ দূরে থাক, তাপমাত্রা মাপারই ব্যবস্থা নেই। আর বেসরকারিভাবে আমদানি হওয়া নকল ও নিম্নমানের বিটুমিনের কারণেই বাংলাদেশের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ রাস্তা নির্মাণের ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নিম্নমানের আমদানিনির্ভর বিটুমিন ব্যবহারে বৈদেশিক মুদ্রার অপচয়, টেকসই উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের অধীনে ২২ হাজার কিলোমিটার সড়ক ও মহাসড়ক রয়েছে, এর বড় অংশই সম্প্রসারিত হচ্ছে। এ ছাড়া জেলা পর্যায়েও সড়ক সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। ফলে দিন দিন বাংলাদেশে বিটুমিনের চাহিদা বাড়ছে। সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার কাম্য নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর