রবিবার, ৪ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

জিয়ারতে মদিনা

মুফতি মুহাম্মদ এহছানুল হক মুজাদ্দেদী

জিয়ারতে মদিনা

করোনাভাইরাসের এ মহামারীতে এবারও পবিত্র হজে যাওয়া হলো না। কত আশা ছিল মক্কা মুকাররমা মদিনা মুনাওয়ারা দেখার। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রওজাকে সালাম দেওয়ার। ইসলামপূর্ব যুগে মদিনার নাম ছিল ইয়াসরিব। রসুলে করিম (সা.)-এর হিজরতের পর এ শহরের নাম হয় মদিনাতুন্নবী বা নবীর শহর। এখন বলা হয় মদিনা। সোনার মদিনা, প্রাণের মদিনা। মোমিন মুসলমানদের প্রাণের ভূমি। মদিনা হলো নবী (সা.)-এর প্রিয় শহর; শান্তির নগর। রসুলে করিম (সা.) বলেন, ‘যে আমার রওজা জিয়ারত করল তার জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেল।’ বায়হাকি। তিনি আরও বলেন, ‘যে হজ করল কিন্তু আমার রওজা জিয়ারত করল না সে আমার প্রতি জুলুম করল।’ ইবনু হিব্বান, দারু কুতনি, দায়লামি। ফকিহদের মতে হাজির জন্য মদিনা জিয়ারত সুন্নত। আল্লামা ইউসুফ ইসলাহি আসান ফিকাহ গ্রন্থে লিখেছেন, হাজিদের জন্য রসুলের রওজা জিয়ারত ওয়াজিব। জান্নাত-প্রত্যাশী প্রত্যেক মোমিন মুসলমানের অন্তর সব সময় উন্মুখ থাকে নবী (সা.)-এর রওজা জিয়ারত ও মদিনা মুনাওয়ারা দেখার জন্য। হুজুর (সা.)-এর রওজার সবুজ গম্বুজ তো বেহেশতের একটি নিদর্শন যা দর্শনে কেবল চোখ পবিত্র হয় না, প্রশান্তিতে ভরে ওঠে মানবহৃদয়। সবুজ গম্বুজের চারদিকে রহমতের এমন স্রোতধারা প্রবহমান যার প্রস্রবণে কার না অবগাহন করতে ইচ্ছা করে। কার না মন চায় হৃদয় উজাড় করে বাদশাহর বাদশাহ কামলিওয়ালা নবী (সা.)-কে সালাতু সালাম জানাতে! কারণ এখানেই শুয়ে আছেন সুলতানে মদিনা, রাহমাতুল্লিল আলামিন, হায়াতুন্নবী আল্লাহতায়ালার প্রিয় রসুল হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.)। জান্নাত নিশান রওজার জিয়ারতে রয়েছে অধিক পুণ্য ও ফজিলত। যা কোরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াস কর্তৃক সমর্থিত ও উত্তম ইবাদত হিসেবে গণ্য। রওজার জিয়ারতের ফজিলত প্রদান করা হলো। আল কোরআনে রওজার জিয়ারতের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘(হে মাহবুব!) যদি তারা নিজেদের আত্মার ওপর জুলুম করে তাহলে যেন তারা আপনার দরবারে আসে, এরপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং রসুল (সা.)ও যদি তাদের জন্য ক্ষমা চেয়ে সুপারিশ করে তবে তারা অবশ্যই আল্লাহকে তওবা কবুলকারী ও দয়ালু পাবে।’ সুরা নিসা, আয়াত ৬৪। রওজায়ে আতহার জিয়ারতে নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি আমার রওজা জিয়ারত করল তার জন্য আমার শাফায়াত (সুপারিশ) ওয়াজিব [আবশ্যক] হয়ে গেল।’ বায়হাকি। আরেক বর্ণনায় এসেছে, ‘যে ব্যক্তি একনিষ্ঠভাবে মদিনায় উপস্থিত হয়ে আমার রওজা জিয়ারত করবে কিয়ামত দিবসে আমি তার পক্ষে সাক্ষী ও সুপারিশকারী হব।’ বায়হাকি।

জিয়ারতের আদব : রসুল (সা.)-এর রওজা হাজারো বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। তাঁর শান ও মর্যাদা মহান আল্লাহ-প্রদত্ত। এ মহিমান্বিত পুণ্যস্থান জিয়ারতে আদব বজায় রাখা ইমানের দাবি।

লেখক : বেতার, টিভির ইসলামবিষয়ক উপস্থাপক, প্রিন্সিপাল, মণিপুর বাইতুর রওশন মাদরাসা কমপ্লেক্স, মিরপুর, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর