পদ্মা সেতু নামের স্বপ্নের বাস্তবায়নে আরও এক ধাপ এগোনো সম্ভব হয়েছে সড়কপথের শেষ স্লাব বসানোর মাধ্যমে। এর ফলে পদ্মা সেতুর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের সড়ক সংযোগ স্থাপিত হলো। অক্টোবরে স্লাবের ওপর পিচ ঢালাইয়ের পর সড়কটি পুরোপুরি চলাচল-উপযোগী হবে। পদ্মা সেতুতে শেষ স্লাব বসানোর পর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বলেছেন এর মাধ্যমে ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্লাবের সব কটি স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। অক্টোবরের শেষ দিকে কার্পেটিং শুরু হবে এবং ২০২২ সালের জুনের মধ্যেই পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। মূল পদ্মা সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি শতকরা ৯৪.২৫ ভাগ। নদীশাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি শতকরা ৮৪.২৫ ভাগ। পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৮৭.২৫ ভাগ। রোডওয়ে স্লাব বসানো সম্পন্ন হওয়ায় ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুতে পূর্ণাঙ্গ রূপ পেল সড়কপথ। গাড়িতে চড়ে বা হেঁটে পার হওয়া যাবে পদ্মা। এর আগে রেলওয়ে স্লাব বসানোও শেষ হয়েছে। এ ছাড়া সেতুর মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে গ্যাসলাইন বসানোর কাজ শুরু হয়েছে পুরোদমে। ৫৩১টি গ্যাস পাইপলাইন বসানো হবে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে। ইতিমধ্যে বেশকিছু পাইপলাইন বসানো সম্পন্ন হয়েছে। আগামী বছর জুনের যে কোনো সময় প্রধানমন্ত্রী স্বপ্নের এ সেতুর উদ্বোধন করবেন। এর ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীসহ অন্যান্য অংশের সরাসরি সড়ক ও রেল পথে যোগাযোগ সম্ভব হবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উঠবে দেশের অন্যতম উৎপাদন কেন্দ্র। জাতীয় অর্থনীতির জন্য পদ্মা সেতু বয়ে আনবে আশীর্বাদ। এটি আন্তর্জাতিক হাইওয়ে রুটের সঙ্গেও যুক্ত হবে। পদ্মা সেতু বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ও জটিল সেতুগুলোর একটি। প্রতিকূলতা জয় করে এ সেতু নির্মাণের মাধ্যমে ১৭ কোটি মানুষের সাহসের প্রকাশ ঘটেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত জাতি যে হার মানতে জানে না তার প্রতিফলন ঘটেছে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘটনায়।