রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

দূর হোক টিকা বৈষম্য

প্রধানমন্ত্রীর মানবিক আহ্বান

করোনাভাইরাস বা কভিড-১৯ মানব জাতির অস্তিত্বের জন্য এক মহাহুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের ৭৫০ কোটি মানুষের মধ্যে করোনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এমন সংখ্যা ১ শতাংশের কম। এ মহামারীতে যে প্রাণহানি ঘটেছে তা দুটি মহাযুদ্ধের যে কোনোটির চেয়ে বেশি। করোনাভাইরাস অস্তিত্বের জন্য যে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে তা মোকাবিলায় মানব জাতির ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস ছিল কাক্সিক্ষত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, প্রযুক্তি ও ধনসম্পদে অগ্রসর দেশগুলো করোনাভাইরাস রোধে আবিষ্কৃত টিকাকে মুনাফা অর্জনের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে। ধনী দেশগুলো ভ্যাকসিনকে অর্থ উপার্জনের উপায় হিসেবে বেছে নেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উন্নয়নশীল ও গরিব দেশগুলোর শত শত কোটি মানুষ। এ প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে ভাষণ দানকালে বিশ্ব নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, লাখ লাখ মানুষকে টিকা থেকে দূরে রেখে কখনই টেকসই পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। তিনি বলেন, কভিডমুক্ত একটি বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে টিকার সর্বজনীন ও সাশ্রয়ী মূল্যে প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। গত বছর জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী কভিড-১৯ টিকাকে ‘বৈশ্বিক সম্পদ’ হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। বিশ্বনেতাদের অনেকে তখন

এ বিষয়ে সহমত পোষণ করলেও সে আবেদনে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। বরং ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে টিকা বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে এ যাবৎ উৎপাদিত টিকার ৮৪ শতাংশ উচ্চ ও উচ্চমধ্যম আয়ের দেশগুলোর মানুষের কাছে পৌঁছেছে। অন্যদিকে নিম্ন আয়ের দেশগুলো ১ শতাশের কম টিকা পেয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে টিকা বৈষম্য দূর না হলে করোনাভাইরাসের অভিশাপ থেকে মানুষের সুরক্ষা অনিশ্চিত হয়ে উঠবে। যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে শেষাবধি ধনী দেশগুলোর মানুষও। যা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর