সোমবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বন্দী খালেদা জিয়ার মৃত্যু হলে সেটি হবে খারাপ নজির

মহিউদ্দিন খান মোহন

বন্দী খালেদা জিয়ার মৃত্যু হলে সেটি হবে খারাপ নজির

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন নই। এ বাক্যটি পড়ে অনেকেই ভ্রুকুঞ্চিত করেছেন নিশ্চয়ই। যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়ে দেশবাসী, বিশেষ করে বিএনপি নেতা-কর্মীরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন, সেখানে তার দলের একজন সাবেক কর্মী এবং পাঁচ বছর তার সহকারী প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালনকারী আমি কেন উদ্বিগ্ন নই- এ প্রশ্ন জাগাটা অস্বাভাবিক নয়। কেউ কেউ আমাকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে গালমন্দ করতে পারেন, বলতে পারেন নিমকহারামও। তবে সত্যি বলছি, আমি খালেদা জিয়াকে নিয়ে উদ্বিগ্ন নই। কেননা, আমার উদ্বেগ প্রকাশে পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হবে না। সরকার নড়েচড়ে বসবে না, ইতিবাচক কোনো সিদ্ধান্তও নেবে না। তাই উদ্বেগ প্রকাশের চেয়ে মহান আল্লাহতায়ালার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করাকেই আমি শ্রেয় মনে করছি। আমি বিশ্বাস করি, এ দুনিয়াতে সবকিছুর সর্বোত্তম ফয়সালাদাতা স্বয়ং আল্লাহ। তিনি যা নির্ধারণ করে রেখেছেন তার বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা মানুষের নেই। সুতরাং আমরা যত কথাই বলি না কেন, খালেদা জিয়ার ভাগ্যে যেটা লেখা আছে শেষ পর্যন্ত সেটাই হবে। আল্লাহ যদি তার কপালে বন্দী অবস্থায় মৃত্যু লিখে রেখে থাকেন, তাহলে তা খন্ডানোর ক্ষমতা কারও নেই।

খালেদা জিয়া সম্পর্কে সর্বশেষ খবর হলো- তিনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। ফলে তার লিভারে যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে তা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনবার তা সামাল দেওয়া গেলেও পুনরায় রক্তক্ষরণ হলে তার মৃত্যুঝুঁকি বাড়তে পারে। ২৮ নভেম্বর মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা সংবাদমাধ্যমকে জনিয়েছেন, এ কঠিন রোগের চিকিৎসা জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে সম্ভব। এ খবর প্রচারিত হওয়ার পর জনমনে খালেদা জিয়াকে নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আরও বেড়ে গেছে। তিনি আর সেরে উঠবেন কিনা সে প্রশ্নও দেখা দিয়ছে। এখন সরকার যদি তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে তাকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দেয়, তাহলেই সে উন্নত চিকিৎসা সম্ভব। সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি আদালতের রায়ে দন্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দী হন। তার আগে থেকেই তিনি নানারকম জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। বিএনপি দল হিসেবে তাকে কারাগারের বাইরে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা না পেরেছে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজপথে কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে, না পেরেছে আদালতে আইন লড়াই করে নেত্রীকে মুক্ত করতে। এমন কি পর্দার আড়ালে সরকারের সঙ্গে কোনো প্রকার সমঝোতা করেও তাকে বাইরে আনতে সক্ষম হয়নি। শেষ পর্যন্ত পরিবারের উদ্যোগে সরকার তাকে শর্ত সাপেক্ষে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। তদানুযায়ী প্রায় ২২ মাস পরে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ থেকে তিনি কারাগারের বাইরে আছেন। এ সময়ের মধ্যে তিনি কয়েকবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে নীত হয়েছেন, কিছুটা সুস্থ হয়ে আবার বাসায় ফিরে গেছেন। বিএনপি পুরোটা সময় ধরে তাদের নেত্রীর মুক্তি এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়ে এলেও সরকার তাতে গা করেনি। বরং সরকারের কোনো কোনো মন্ত্রী বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে উপহাস করেছেন। যা অনেকের কাছে নিষ্ঠুরতা মনে হয়েছে। একজন অসুস্থ মানুষকে নিয়ে এ ধরনের রাজনৈতিক বালখিল্য বক্তব্য-মন্তব্য কারও কাছেই সমীচীন মনে হয়নি।

চিকিৎসা মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার অন্যতম একটি। এটা একজন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। এমনকি কারাগারে বন্দীদেরও চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার আছে। যে জন্য প্রতিটি কারগারেই হাসপাতাল রয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া আজ এমন এক ব্যাধিতে আক্রান্ত, দেশে তার চিকিৎসা সম্ভব নয়। যেহেতু তিনি আদালতের রায়ে দন্ডিত হয়ে বন্দী আছেন, তাই সরকারের অনুমতি ছাড়া তার বিদেশে গমন অসম্ভব। কিন্তু সরকার পক্ষ এ বিষয়ে যে অনমনীয়তা দেখাচ্ছে, তাতে তিনি বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ পাবেন এমন আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না।

এটা ঠিক খালেদা জিয়া আদালত কর্তৃক দন্ডিত একজন বন্দী। যেসব অভিযোগে তাকে দন্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে আমার কোনো প্রশ্ন নেই, মন্তব্যও নেই। আমি মনে করি দেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি চিকিৎসার্থে দেশে-বিদেশে অগ্রাধিকার পেতে পারেন। আজ বৈরী পরিস্থিতি বা ভাগ্যের ফেরে তিনি দন্ডিত আসামি এবং কারাবন্দী। কিন্তু আজকের খালেদা জিয়াই কি তার একমাত্র পরিচয়? এ দেশ, এ দেশের গণতন্ত্রের জন্য তার কি কোনোই অবদান নেই? ১৯৮১ সালের ৩০ মে স্বামী জিয়াউর রহমানকে হারান তিনি। মাত্র ১০ মাসের মাথায় গণতন্ত্রকে হারায় বাংলাদেশ। সেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের অন্দোলনে রাজপথে নেমেছিলেন সদ্য স্বামীহারা খালেদা জিয়া। স্বামী হারানোর শোককে বুকের গভীরে চাপা দিয়ে দীর্ঘ নয়টি বছর তিনি নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে সৃষ্টি করেন এক ইতিহাস। আপসহীন নেত্রীর অভিধায় অভিষিক্ত হন। গণতন্ত্র উদ্ধারের সে সংগ্রামে পাশাপাশি হেঁটেছেন আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাদের যৌথ নেতৃত্বে সেদিন স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল বাংলাদেশ। এদেশের গণতন্ত্রকে উদ্ধার করতে তারা রেখেছেন অসামান্য অবদান। সেই অবদান, সেই ত্যাগের জন্য তারা পুরস্কৃতও হয়েছেন। অলংকৃত করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রীর আসন। সময়ের ব্যবধানে পরিস্থিতি আজ পাল্টে গেছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের দুই সহযাত্রী আজ বিপরীত মেরুতে। যোজন যোজন দূরত্ব তাদের মধ্যে।

খালেদা জিয়াকে দেখেছি দীর্ঘকাল। একসময় বিএনপির একজন ক্ষুদ্র মাঠকর্মী হিসেবে তাকে পর্যবেক্ষণ করেছি দূর থেকে। আবার ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তৃতীয় মেয়াদে তার প্রধানমন্ত্রিত্বকালে সহকারী প্রেস সচিব হিসেবে অত্যন্ত কাছ থেকে। রাজনৈতিক মতপার্থক্য সত্ত্বেও কারও প্রতি শত্রুত্বের মনোভাব তাকে পোষণ করতে দেখিনি। কেউ কেউ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড বিস্ফোরণের ঘটনায় খালেদা জিয়কে দায়ী করেন। কিন্তু আমরা যারা তখন তার কাছাকাছি ছিলাম তারা দেখেছি ওই নির্মম ঘটনার পর তিনি কতটা বিচলিত হয়েছিলেন। পরদিন সারাক্ষণ ছিলেন বিমর্ষ। ঘটনার নৃশংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে তিনি একটি চিঠি লেখেন। সন্ধ্যায় রেড ব্লকে (প্রধানমন্ত্রীর কক্ষ) গিয়ে করিডোর থেকে ম্যাডামের ক্ষুব্ধ কণ্ঠ শুনতে পেলাম। তিনি উচ্চৈঃস্বরে বলছিলেন, ‘তাহলে এই চিঠি নিয়ে কি আমি যাব?’ একটু পরেই তার কক্ষ থেকে বেরিয়ে এলেন প্রেস সচিব তাজুল ইসলাম। তাকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম ওই চিঠি নিয়ে কেউ ‘সুধা সদনে’ যেতে সাহস পাচ্ছে না। বললাম, কেন, হারিছ ভাই যাবেন। তিনি ম্যাডামের রাজনৈতিক সচিব। তারই যাওয়া উচিত। তাজুল ইসলাম জানালেন, সবার আগে সে সারেন্ডার করে বসে আছে। আমি বললাম, ম্যাডাম অনুমতি দিলে আমি যেতে পারি। তিনি ভিতরে গিয়ে কী বললেন জানি না। একটু পরে এসে বললেন ঠিক আছে যাও। তবে একা না। শামসুল আলমকে (ম্যাডামের সহকারী একান্ত সচিব) নিয়ে যাও। আমরা গিয়েছিলাম। যদিও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের প্রতিবাদন্ডপ্রতিরোধের মুখে সেই চিঠি আমরা শেখ হাসিনার হাতে পৌঁছাতে পারিনি। তবে, সেই নৃশংস ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে অনেক কিছুই ঘটেছে, যেগুলো কারও কাছেই কাক্সিক্ষত ছিল না। প্রশাসনের অতিউৎসাহী একটি অংশ এবং অপরিণামদর্শী নেতাদের সাজানো জজ মিয়া নাটক সবকিছু পাল্টে দেয়। হামলার পুরো দায় এসে পড়ে বিএনপির কাঁধে। এটা স্বীকার করতেই হবে যে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা-পরবর্তী ঘটনায় বিএনপি জোট সরকারের ভূমিকা সঠিক ছিল না। অত্যন্ত তীক্ষè দূরদৃষ্টিসম্পন্ন খালেদা জিয়া কাদের কুমন্ত্রণায় অমন একটি অবিমৃশ্যকারী তৎপরতাকে প্রশ্রয় দিয়েছিলেন তা আজও আমার কাছে রহস্যময় মনে হয়। একজন রাজনীতিক তার জীবনে ছোট-বড় অনেক ভুল করতে পারেন। বেগম জিয়াও হয়তো করেছেন। তবে এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে, গণতন্ত্র, উন্নয়ন, পরমতসহিষ্ণুতা বিষয়ে তিনি সব সময় উদার থাকারই চেষ্টা করেছেন। ২০০৭ সালের ১৭ জুলাই জরুরি অবস্থার সরকার গ্রেফতার করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে। তাকে গ্রেফতারের সময় পুলিশ যে আচরণ করেছিল তা ছিল অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমি তখন দৈনিক দিনকালে সহকারী সম্পাদক হিসেবে কাজ করি। পরদিন নির্বাহী সম্পাদক মারুফ কামাল খান সোহেল ডেকে বললেন, শেখ হাসিনার গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ার জন্য ম্যাডাম নির্দেশ দিয়েছেন, লেখেন। বললাম, গুরুত্বপূর্ণ এ বিবৃতিটি আপনি লিখুন। এরপর আমরা দুজনে সেই বিবৃতি তৈরি করার পর মারুফ কামাল তা ম্যাডামকে টেলিফোনে পড়ে শোনালেন। ম্যাডাম কিছু সংশোধনী দিয়ে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় বিবৃতি দিতে বললেন। আমরা সেভাবেই তা তৈরি করেছিলাম। ঘটনাটি উল্লেখ করলাম এ জন্য যে, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সহযোদ্ধা শেখ হাসিনার প্রতি জরুরি সরকারের অমর্যাদাকর আচরণ খালেদা জিয়াকে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ করেছিল। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপিতে মতভেদ সৃষ্টি হলো ওই নির্বাচনে অংশ নেওয়া ঠিক হবে কিনা। মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ছিলেন ওই মুহূর্তে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিপক্ষে। এক রাতে দেলোয়ার ভাই খালেদা জিয়াকে বললেন, ম্যাডাম, এ মুহূর্তে এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া ঠিক হবে না। ওরা একটি নীলনকশার নির্বাচন করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়ে বিদায় নেবে। জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘ক্ষতি কী তাতে? আসুক আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। অন্তত এদের হাত থেকে তো গণতন্ত্র মুক্তি পাবে।’ ওই কথোপকথনের প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আজ তা উল্লেখ না করে পারলাম না। একজন রাজনীতিবিদের জীবনে উত্থান-পতন যেমন থাকে, তেমনি শত ভালো কাজের মধ্যেও দু-চারটি মন্দ কাজ তার ক্যারিয়ারে খারাপ দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে থাকে। যিনি কাজ করেন, তার সব কাজ ভালো হবে, একটাও ভুল হবে না, এমন হতে পারে না। ৩৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে অসংখ্য ইতিবাচক কর্মকান্ডের পাশাপাশি কিছু ভুলত্রুটি যে বেগম জিয়া করেননি সে কথা আমি অন্তত বলব না। তবে এ দেশ, এ দেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নের জন্য তার যে অবদান তাকে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। সর্বোপরি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির পত্নী হিসেবেও তিনি রাষ্ট্রের কাছে অগ্রাধিকার পেতে পারেন। না, আমি বলছি না যে, খালেদা জিয়াকে বেকসুর খালস দিয়ে দিক সরকার। সাজা তো তিনি খেটেছেন। ইচ্ছা করলে রাষ্ট্র তাকে এখন রেহাই দিতে পারে। সে সুযোগ সংবিধান ও আইনে রয়েছে। দরকার সরকারের সদিচ্ছা। আমি জানি না সরকার সে সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে কিনা। তবে আমার মতো অনেকেই মনে করেন, অন্তত মুমূর্ষু রোগী হিসেবে খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত। খোদা না করুন, এ অসুখে বন্দী অবস্থায় যদি তাকে মৃত্যুবরণ করতে হয় তাহলে তা আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি খারাপ দৃষ্টান্ত এবং ভবিষ্যতের জন্য রেফারেন্স হয়ে থাকবে।

এ পৃথিবীতে মৃত্যুর মতো অমোঘ সত্য আর নেই। খালেদা জিয়াও একদিন মৃত্যুবরণ করবেন। তবে কোথায় কখন কীভাবে মারা গেলেন ইতিহাসে সেটাই লেখা থাকবে। জরুরি অবস্থার সময় ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিনের সরকার তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য প্রচ- চাপ দিয়েছিল। কিন্তু তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘বাংলাদেশের বাইরে আমার কোনো ঠিকানা নেই। বাঁচলে এদেশেই বাঁচব, মরলে এখানেই মরব’। দেশের মাটিতে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চান সবাই। তবে কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে এক প্রকার বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। কার মৃত্যু কীভাবে কোথায় হবে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া তা কেউ জানেন না। খালেদা জিয়ার ভাগ্যে যদি জেলবন্দী হয়ে মৃত্যু লেখা থেকে থাকে, তাহলে হয়তো সেটাই হবে। এর বাইরে কিছু হবে না।

                লেখক : সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক।

সর্বশেষ খবর