মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর তিনজন বাংলাদেশি সদস্য নিহত হয়েছেন প্ুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে। আহত হয়েছেন আরও একজন। সোমবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের একটি গাড়ি টহল থেকে ফেরার পথে পুঁতে রাখা বোমার বিস্ফোরণে ১৫ ফুট দূরে ছিটকে পড়ে। এতে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ির চারজনই আহত হন। ঘটনার পরপরই শান্তিরক্ষীদের জরুরি ভিত্তিতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য দুর্গম এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে ১৪৪ কিলোমিটার দূরে বোয়ারে অবস্থিত মিনুসকা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সৈনিক মো. জসিম উদ্দিন, মো. জাহাংগীর আলম ও শরিফ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্য আহত শান্তিরক্ষী মেজর মো. আশরাফুল হক চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। শাহাদাতবরণকারী সেনা সদস্যদের মৃতদেহ দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশে আনার উদ্যোগ চলছে। স্মর্তব্য, জীবনের ঝুঁঁকি নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীরা আফ্রিকার আটটি দেশে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সর্বোচ্চ পেশাদারি বজায় রেখে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রেখে চলেছেন। সে কারণে জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে গোষ্ঠীগত সংঘাত চলছে দীর্ঘদিন ধরে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেও শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সংঘাতে ক্ষতবিক্ষত মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে শান্তি ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের সুনামও গড়ে উঠেছে স্থানীয়ভাবে। নিহত তিন বাংলাদেশি সৈনিকের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নীলফামারী ও সিরাজগঞ্জে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে নিয়োজিত বাংলাদেশি সৈনিকরা শুধু শান্তিরক্ষা নয়, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বিপন্ন মানবতার সেবায়ও ভূমিকা রাখছেন। শহীদ তিন শান্তিরক্ষী সৈনিকের প্রতি আমাদের গভীর শোক ও শ্রদ্ধা।