রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

বেহাল মাঠ ও উদ্যান

সংস্কারে শম্বুকগতি প্রত্যাশিত নয়

রাজধানী থেকে মাঠ ও উদ্যান এখন উধাও হওয়ার পথে। যে কটি মাঠ ও উদ্যান এখনো টিকে আছে, সেগুলোর কোনো কোনোটি ব্যবহার-অযোগ্য হয়ে পড়ছে তথাকথিত সংস্কারের কারণে। মাঠ-উদ্যান সংস্কারের কাজের সময় ক্ষেপণে সিটি করপোরেশন ও ঠিকাদার উভয় পক্ষ এমন মজাই পেয়েছে যে, মনে হচ্ছে এগুলোর কাজ তারা ইহজনমেও শেষ করতে নারাজ। সংস্কারের নামে নতুন নতুন পরিকল্পনা সংযোজন করে প্রকল্প ব্যয় দ্বিগুণ করাও হয়েছে। যেমনটি ঘটেছে রাজধানীর ওসমানী উদ্যানের সংস্কার কাজের ক্ষেত্রে। এর সংস্কার কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। পরের মাসে নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তৎকালীন মেয়র মো. সাঈদ খোকন। প্রথমে ৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও পরে নতুন বিষয় সংযোজন করে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে ৮৬ কোটি টাকা করা হয়। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। এরপর আবারও পানি নিষ্কাশন, পানি ব্যবস্থাপনা ও পরিশোধন যোগ করে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ১০০ কোটি টাকার ওপরে। উদ্বোধনের সময় মেয়র আশ্বাস দিয়েছিলেন ১০ মাসের মধ্যে উদ্যানের আধুনিকায়ন শেষ করে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার। এরপর পেরিয়ে গেছে প্রায় পাঁচ বছর। কিন্তু মেয়র-ঘোষিত ১০ মাস শেষ হচ্ছে না। ঠিকাদারি জটিলতায় এ উদ্যানের কাজ দুই বছর ধরে বন্ধ। একই অবস্থায় ধূপখোলা মাঠ। এ মাঠে চলছে মার্কেট নির্মাণ, যার কারণে নির্মাণসামগ্রী মাঠের মধ্যে রাখা হয়েছে। মাঠের এক পাশে বহুতল ভবন নির্মাণকাজের কারণে মাঠের আয়তন কমে গেছে। ফলে শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়েছে। শাহবাগ শিশু পার্ক সংস্কারের দোহাই দিয়ে চার বছর ধরে বন্ধ। মালিবাগ চৌধুরীপাড়া সবুজ সংঘের মাঠ এখন ব্যবহৃত হচ্ছে আনসার-ভিডিপির গাড়ি রাখার জায়গা হিসেবে। রাজধানীর মাঠ-উদ্যান অপদখল ও সংস্কারের নামে যে অপখেলা চলছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। রাজধানীর শিশু-কিশোর শুধু নয়, দেড় কোটি মানুষকে জিম্মি রাখা হচ্ছে এ অপখেলার মাধ্যমে। যার অবসান হওয়া উচিত।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর