বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

গাইবান্ধা নির্বাচনের শিক্ষা

মেজর নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ (অব.) পিএইচডি

গাইবান্ধা নির্বাচনের শিক্ষা

যদি একটি গ্লাসে অর্ধেক পানি থাকে তবে বিষয়টা দুই ভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। আশাবাদী মানুষ গ্লাসটি অর্ধপূর্ণ দেখতে পাবে আর সেভাবেই ব্যাখ্যা করবে। আবার হতাশাবাদীদের দৃষ্টি পড়বে পানিশূন্য অর্ধেক গ্লাসের ওপর। তারা দেখবে গ্লাসটি অর্ধেক খালি। একই ঘটনা বা একই দৃশ্যের বর্ণনা তাই স্থান-কাল-পাত্র ভেদে পাল্টে যায়। তবে মনোবিজ্ঞানীদের মতে, জীবনে সুখী হতে হলে সবাইকে আশাবাদী হতে হবে। কী আছে তা দেখার দৃষ্টি জাগ্রত করতে হবে। পক্ষান্তরে যুক্তিবাদীদের মতে, কাউকে খুশি বা হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বাস্তবতা বিবর্জন কারও কাম্য হতে পারে না। কারণ বাস্তবতা অস্বীকার মূলত নিজের সঙ্গে প্রবঞ্চনার শামিল। সুতরাং এমন প্রবঞ্চনাকে প্রশ্রয় না দিয়ে আমাদের উচিত সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলা। আরও উচিত কোদালকে কোদাল বলার সাহস ও বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করা। মনোবিদ্যা ও যুক্তিবিদ্যা দিয়ে জগতের অনেক কিছু চললেও বাংলাদেশের রাজনীতি কতটা চলে সে প্রশ্নটি এনেছে সদ্য বাতিল হওয়া গাইবান্ধার উপনির্বাচন।

১১তম জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের এমপি ফজলে রাব্বি মিয়া ২৩ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুতে এ আসন শূন্য ঘোষণা করে সংবিধান মোতাবেক নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছিল ১২ অক্টোবর, বুধবার। দেশের প্রকৃত প্রধান বিরোধী দল বিএনপি আন্দোলন ও দাবি আদায়ের কৌশল হিসেবে এ নির্বাচন বর্জন করে। তবে মাঠে থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছিলেন জাতীয় সংসদের দাফতরিক স্বীকৃতি পাওয়া বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, বিকল্পধারা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

এ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কারও তেমন আগ্রহ ছিল না। কারণ এ আসন কোন দল পাবে, তা মোটামুটি জানাই ছিল। আর মাত্র এক বছর মেয়াদের জন্য এ আসনটি ক্ষমতাসীন কিংবা বিরোধী শিবিরের যে-কোনো দিকে গেলে তা বৃহত্তর রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রভাব ফেলার কোনোই সম্ভাবনা ছিল না। তবে তিনটি কারণে এ নির্বাচনের প্রক্রিয়া দেখার আগ্রহ ছিল উৎসুক রাজনীতি বিশ্লেষক ও গণমাধ্যমের। প্রথমত, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে ১৫ জুন, ২০২২ কুমিল্লার সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে স্থানীয় এমপি বাহার তাঁর দীর্ঘদিনের সহচর ও পরীক্ষিত কর্মী রিফাতকে জয়যুক্ত করার জন্য সচেষ্ট থাকেন। তবে তা মেনে নিতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। ফলে নির্বাচনী এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য এমপি বাহারকে আহ্বান জানায় কমিশন। এ আহ্বানটি নির্দেশ ছিল না অনুরোধ- তা নিয়েও বিতর্ক আছ। অনুরোধই যদি হয় তবে এমপি বাহারকে কেন আইন-আদালতের আশ্রয় নিয়ে এলাকায় থাকতে হলো, সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। অন্যদিকে পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনের ভাষ্যমতে, এমপি বাহারকে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে এলাকা ছাড়ার অনুরোধ করা হয়েছিল, আদেশ নয়। আর এ অনুরোধ না রাখায় বস্তুত নির্বাচন কমিশনের কিছুই করার ছিল না। ওই নির্বাচন নিয়ে বিশেষত কিছু সময় ফল ঘোষণা বন্ধ রাখা নিয়ে পরবর্তীতে বহু তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। সুতরাং নির্বাচন কমিশনের শক্তিমত্তা ও পরিপক্বতা যাচাই করার ক্ষেত্রে গাইবান্ধা উপনির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কত নম্বর পায় তা দেখতে উৎসাহী ছিল পর্যবেক্ষক মহল। দ্বিতীয়ত, ইভিএম প্রকৃতপক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচনে সহায়তা করবে না অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে, তা-ও দেখতে চেয়েছিলেন গাইবান্ধা উপনির্বাচন পর্যবেক্ষকরা। বিশেষত, বৈশ্বিক মন্দা ও আসন্ন অর্থনৈতিক দুঃসময় সামনে রেখে রাষ্ট্রের বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করে নির্বাচন পরিচালনার সিদ্ধান্ত কতটা বাঞ্ছনীয়, তা পরীক্ষার সুযোগ ছিল গাইবান্ধা নির্বাচন। ৩০ মে, ২০২২ একজন সম্মানিত নির্বাচন কমিশনার যথার্থই বলেছিলেন, ইভিএম নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই, চ্যালেঞ্জ হলো ইভিএম রাখা গোপন কক্ষে অবস্থান নেওয়া দুষ্কৃতকারীকে নিয়ে, যে ভোটারকে বলে, আপনার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। গাইবান্ধা ভোট কেন্দ্রের গোপন কক্ষে দুষ্কৃতকারীরা প্রবেশ করতে পারে কি না তা দেখারও আগ্রহ ছিল মহলবিশেষের। কারণ ভোটকক্ষেই যদি দুষ্কৃতকারী থাকে, তবে ইভিএম আর কাগজের ব্যালট পেপারে কোনো পার্থক্য করার সুযোগ নেই। তৃতীয়ত, ৮ অক্টোবর, ২০২২ শনিবার ঘটা করে দেশের সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে রাজধানীর ইলেকশন কমিশন ভবন মিলনায়তনে সম্মেলন করে ইসি। এ সম্মেলনে তাদের দলীয় কর্মীর মতো আচরণ করতে বারণ করা হয়। তবে একজন সম্মানিত নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সেই সম্মেলন। এতে তড়িঘড়ি বক্তব্য শেষ করেন সেই কমিশনার। এমনই এক প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য বা ক্ষমতা এবং মাঠ পর্যায়ে আমলাদের দ্বারা তাঁর বাস্তবায়নের অ্যাসিড টেস্ট ছিল গাইবান্ধা উপনির্বাচন।

এ তিনটি প্রেক্ষাপটে গাইবান্ধার নির্বাচনে যা প্রদর্শিত হয়েছে, তা মোটেও আশাপ্রদ ছিল না। দলীয় নেতা-কর্মীরা সেখানে সংযত ও কাক্সিক্ষত আচরণ প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়েছেন। ইভিএম ব্যবহারে দুষ্কৃতকারীদের প্রাধান্য ছিল। সর্বোপরি প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ হয়েছে। গাইবান্ধায় ৪৩টি কেন্দ্রের নির্বাচন সিসিটিভি দেখে স্থগিত করেছেন স্বয়ং নির্বাচন কমিশনাররা, যা প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। একই কায়দায় ঢাকা থেকে অন্য নির্বাচন কর্মকর্তারা স্থগিত করেন আরও ৭টি কেন্দ্রের নির্বাচন। মাঠপর্যায়ে জেলা প্রশাসক স্থগিত করেন মাত্র একটি কেন্দ্রের নির্বাচন।

এ ক্ষেত্রে মূলধারার গণমাধ্যমের কিছু রিপোর্ট প্রণিধানযোগ্য। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত সরাসরি সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ‘আমরা প্রথম থেকে লক্ষ করেছি যে, ভোট গ্রহণে অনিয়ম হচ্ছে; এবং অনেক কেন্দ্রে গোপন ভোটকক্ষে অবৈধ অনুপ্রবেশ লক্ষ করেছি; এবং অবৈধভাবে প্রবেশ করে ভোটারকে ভোট প্রদানে হয়তো সহায়তা করেছেন বা বাধ্য করেছেন, এটা আমরা সুস্পষ্টভাবে লক্ষ করেছি, যেটি নিয়ম নয়।’ তাঁর দেওয়া তথ্যমতে, বিভিন্ন অনিয়ম সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়লে কয়েক দফায় মোট ৫১টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়। তারপর দেখা যায় বহু কেন্দ্রের সিসি ক্যামেরায় সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯১ ধারাবলে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন বাতিল করা হয়। (সূত্র : বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের নিউজ ফুটেজ)।

দি ডেইলি স্টার সংবাদপত্রের ১৪ অক্টোবর, ২০২২-এর প্রতিবেদনমতে, একজন প্রিসাইডিং অফিসার নির্বাচন কমিশন অফিসের ফোনে প্রাপ্ত আদেশবলে গোপনীয় কক্ষে অবৈধভাবে প্রবেশের জন্য পাঞ্জাবি পরিহিত এক দলীয় কর্মীকে পুলিশে সোপর্দ করে ম্যাজিস্ট্রেটের বকা খান এবং ওই ব্যক্তিকে দলীয় নেতারা পুলিশের কাছ থেকে নিয়ে যান। ফিঙ্গারপ্রিন্ট সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ার পরপরই দলীয় পোলিং এজেন্ট তাকে গোপন কক্ষে নিয়ে যান এবং তার ভোট দিয়ে দেন। এমনকি কর্তব্যরত পোলিং অফিসারদের অনেকেই এমনটা করেছেন। দি ডেইলি স্টারের ১৫ অক্টোবরের তথ্য মোতাবেক দলীয় নেতা-কর্মীরা একাধিক পোলিং অফিসার থেকে নির্বাচন সঠিক হয়েছে মর্মে প্রত্যয়নপত্র নিয়েছেন এবং ফলাফল লিখে দিতে বাধ্য করেছেন। এমনি একজন ইউএনওর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ ওঠে। দৈনিক সমকালের ১৩ অক্টোবরের প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা ছিল নিষ্ক্রিয়। তবে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক উল্লিখিত অনিয়মের কথা প্রায় সব গণমাধ্যম প্রকাশ করলেও অধিকাংশ গণমাধ্যমে তাদের বা তাদের মাঠপর্যায়ের সংবাদকর্মীদের বরাতে অনিয়মের সংবাদ, তথ্য-উপাত্ত, প্রামাণ্য দলিল বা সংবাদচিত্রের অভাব পরিলক্ষিত হয়। গণমাধ্যমের এহেনও সেলফ সেন্সরশিপ, ভয়ের কাছে পরাজয় কিংবা সত্য প্রকাশ না করে প্রশাসন বা সরকারের কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা আদায়ের প্রবণতা গণতন্ত্রের জন্য বিপৎসংকেত। অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় এ-সংক্রান্ত তথ্য যাচ্ছে তাই সংবাদ ও ফুটেজ প্রকাশ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা এবং ভবিষ্যৎ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রেও জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।

গাইবান্ধার নির্বাচন থেকে যে সত্য প্রকাশ পেয়েছে, তা ইংরেজি অক্ষরের ক্রমানুসারে এভাবে সাজানো যায়- এ (A) : আওয়ামী লীগ বা ক্ষমতাসীন দলের মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্বাচনের সাফল্য নির্ভরশীল। তাঁরা নির্বাচন যেমন চাইবেন, তেমনটাই হবে। তাদের ধরাছোঁয়ার কেউ নেই। বি (B) : ব্যুরোক্রেসি বা আমলারাই সব ক্ষমতার উৎস। তাঁদের আস্থায় না নিয়ে বস্তুত এ দেশে কোনো কিছুই সম্ভব নয়। আর আমলারা অতীতের যে-কোনো সময়ের তুলনায় এখন অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ। শরীয়তপুর বা চট্টগ্রামে একজন আমলার গায়ে আঁচড় সারা বাংলার আমলাদের বিক্ষুব্ধ করে তুলতে যথেষ্ট। সি (C) : করপ্স (Corps) বা কোপস বা পুলিশ তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংখ্যা, সক্ষমতা কিংবা অবস্থান নয়, জরুরি হলো তারা কী চায় বা কার নির্দেশে তারা কতটুকু আইন প্রয়োগ করবে সে বিষয়টি। ডেইলি স্টারের একটি সংবাদমতে, একজন পোলিং অফিসার যখন নির্বাচন বন্ধ করে বড় আকারের কর্মীদের দ্বারা ঘেরাও হলেন, তখন তার কাছে ছিলেন মাত্র চারজন পুলিশ। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তখন অন্য কেন্দ্রে ব্যস্ত। পুলিশের টহলদলকে ডাকা হলে যে পরিমাণ পুলিশ আসে, দলীয় কর্মীর তুলনায় তা ছিল নিতান্তই স্বল্প। ডি (D) : ডিসিপ্লিন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এখন অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। বর্তমানে যদি সর্বোচ্চ মহল থেকেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার যথাযথ নির্দেশ দেওয়া হয়, তবে মাঠপর্যায়ে নিজের কর্তৃত্ব ও বীরত্ব প্রদর্শন, দলীয় আনুগত্য প্রমাণ ও পরবর্তীতে নিজ স্বার্থ আদায়ে একদল আমলা, পুলিশ ও দলীয় নেতা-কর্মী শৃঙ্খলার ধার ধারবেন না। ই (E) : ইভিএম এ দেশের নির্বাচনে তখনই কার্যকর বা ফলপ্রসূ হবে যখন ভোট কেন্দ্রগুলো ইতরমুক্ত হবে। অন্যথায় বিপুল অর্থ ব্যয় করে কেনা ইভিএম কেবল বিতর্কই সৃষ্টি করবে, সমাধান দেবে না। এফ (F) : ফোরকাস্ট বা আগাম তথ্য সংগ্রহ তথা গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে কোনো ঘটনা ঘটার আগেই প্রতিরোধ বা প্রিভেনশন করতে হবে। গাইবান্ধার নির্বাচনে দলীয় কর্মীরা নিজস্ব নির্বাচনী প্রতীক ছাপানো গেঞ্জি, শাড়ি ও ওড়না গায়ে চাপিয়ে অনিয়ম করেছেন বলে খোদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন। এসব কাপড়-চোপড় নিশ্চয়ই নির্বাচনের আগমুহূর্তে হঠাৎ করে তৈরি বা বণ্টন হয়নি। তাহলে কোথায় ছিলেন গোয়েন্দারা? নির্বাচন কমিশন কি আগে জানত না যে, একজন অসহায় পোলিং অফিসারের ভরসা চারজন মাত্র পুলিশ? এমন বহু না জানার কারণে হয়তো গাইবান্ধার নাম রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে রাখবেন বহুদিন।

২৮ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৯৪ সালের মার্চে মাগুরা-২ উপনির্বাচনে সীমাহীন অনিয়ম নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল। ওই নির্বাচনের পর মাগুরা নামটি ব্যর্থ নির্বাচনের সমার্থক হয়ে ওঠে। এ নির্বাচনে গাইবান্ধাকে এমন অপবাদ ও কলঙ্ক থেকে রক্ষার জন্য নির্বাচন কমিশন গাইবান্ধাবাসীর ধন্যবাদ প্রাপ্য।

শেষ করব একটি ছোটগল্পের কথা বলে। ১৮৯২ সালে অর্থাৎ আজ থেকে ঠিক ১৩০ বছর আগে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘জীবিত ও মৃত’ নামক ছোটগল্পের অন্যতম চরিত্র কাদম্বিনীর আত্মহত্যা বা মৃত্যুর মাধ্যমে প্রমাণ করেছিলেন এতদিন কাদম্বিনীই বেঁচে ছিলেন এবং হেঁটে বেড়িয়েছেন, মৃত কাদম্বিনীর প্রেতাত্মা বা কোনো ভূত-প্রেত নয়। তাই এ ছোটগল্পের শেষ লাইন ‘কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল, সে মরে নাই’ শতবর্ষের পরম্পরায় একটি প্রবাদে পরিণত হয়। সেই সূত্রে বলা যায়, ‘নির্বাচন না করিয়া নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করিল তাহারা নির্বাচন করিতে পারেন।’ তাদের জন্য নিয়ত শুভ কামনা।

লেখক : গবেষক, কলামিস্ট এবং নিরাপত্তা ও রাজনীতি বিশ্লেষক

সর্বশেষ খবর