শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কঠোর অবস্থান

হুন্ডিতে অর্থ এলে বিপদ

গরজ আপন বালাই নামে একটি কথা বেশ প্রচলিত। ডলার সংকটে ত্রিশঙ্কু অবস্থায় পড়ে সরকার অবশেষে খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে ঠিক সিদ্ধান্তটি নিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। খাদে পড়ার বদলে সংকটের মূল কারণ হুন্ডি বন্ধে সঠিক পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বলেছে, হুন্ডি বা অবৈধ পথে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের প্রিয়জনদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে পাঠানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ এবং এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাদের অর্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা যাতে হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে না পাঠিয়ে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে প্রেরণ করা হয়। দেশ গড়ায় মূল্যবান অবদান রাখা এবং প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। স্মর্তব্য, হুন্ডির কারণে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসা কমে গেছে। হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স আনতে বিদেশেও হুন্ডিবাজরা সক্রিয়। তারা বিদেশ থেকে ডলার সংগ্রহ করে সেখানেই রেখে দিচ্ছে। বিনিময়ে দেশে থাকা প্রবাসীদের কাছে স্থানীয় টাকায় অর্থ পরিশোধ করছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার জরিপে বলা হয়েছে- দেশে মোট রেমিট্যান্সের ৪০ শতাংশ আসে ব্যাংকিং চ্যানেলে। বাকি ৬০ শতাংশের মধ্যে ৩০ শতাংশ আসে হুন্ডিতে এবং ৩০ শতাংশ আসে নগদ আকারে। যার বড় অংশই চলে যায় কার্ব মার্কেটে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার দুটি প্রধান উৎসের একটি পণ্য রপ্তানি আয়। দ্বিতীয়টি প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ। এই দুই অর্থের বিপরীতে আমদানি ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম। তারপরও হুন্ডির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট দেখা দিচ্ছে। এ সংকটের কারণে আমদানিকারকরা কার্ব মার্কেট থেকে বেশি দামে ডলার কিনতে বাধ্য হচ্ছে। পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আগে প্রতি মাসে গড়ে ২০০ কোটি ডলার আসত বিদেশ থেকে, তা এক-চতুর্থাংশ কমে গেছে হুন্ডির কারণে।  দেশে প্রবাসী কারা এবং কারা প্রবাসী আয়ের ওপর নির্ভরশীল তা জানা কঠিন নয়। ইন্টেলিজেন্স ইউনিট সক্রিয় হলে হুন্ডি বন্ধে সাফল্য আসবে আমরা এমনটিই আশা করতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর