শিরোনাম
শনিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ব্যবসা-বাণিজ্য

পরিবেশ উন্নয়নে যত্নবান হতে হবে

‘বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী’- এটি একটি বাংলা প্রবচন। ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমেই যে কোনো জাতি উন্নতির পথে এগোয় তা বহুলভাবে প্রমাণিত। বাংলাদেশে গত পাঁচ দশকে সার্বিক ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি ঘটেছে তাতে ব্যবসা-বাণিজ্যের অবদান সবচেয়ে বেশি। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে এ ক্ষেত্রে আরও এগোতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশে গত এক বছরে তিনটি সূচকে অবনতি ঘটেছে। এই তিনটি সূচক হচ্ছে : জমির প্রাপ্যতা, কর পরিশোধ ও ঋণপ্রাপ্যতা। মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এবং বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জের যৌথ জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। ‘বিজনেস ক্লাইমেট ইনডেক্স ২০২২-২৩’ শীর্ষক এ জরিপের তথ্যানুযায়ী, ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ঋণ পাওয়া জটিল আকার ধারণ করেছে। কর ও ভ্যাট পরিশোধে হয়রানি আগের চেয়ে বেড়েছে। আবার কারখানা বা ব্যবসার জন্য জমি পাওয়াটাও আগের চেয়ে কঠিন হয়েছে। ব্যবসার শুরুতে জমির প্রাপ্যতা, আইনকানুনের তথ্যপ্রাপ্তি, অবকাঠামো সুবিধা, শ্রমনীতি, বিরোধ নিষ্পত্তি, বাণিজ্য সুবিধা, কর পরিশোধ, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ঋণের প্রাপ্যতা- এই ১০টি সূচকের ওপর ভিত্তি করে জরিপটি করা হয়েছে। জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে সামগ্রিকভাবে ব্যবসার পরিবেশের সূচকের ১০০ স্কোরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ৬১ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট। ২০২১ সালে পেয়েছিল ৬১ দশমিক শূন্য ১ পয়েন্ট। পয়েন্ট সামান্য বাড়লেও ব্যবসায় পরিবেশে তেমন কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ১০টি সূচকের মধ্যে ৪টির অবস্থা খারাপ বলে জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশে গত দেড় দশকে দারিদ্র্য মোচনে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। যে দেশকে বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি সে দেশ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বিশাল প্রকল্প বাস্তবায়নের কৃতিত্ব দেখিয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতির এই দেশ সবচেয়ে গরিব অবস্থা থেকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে ব্যাপক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার কারণে। সরকার ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হলেও সংকট যে কাটছে না ব্যবসার তিন সূচকে অবনতি তারই প্রমাণ। এ অপ্রত্যাশিত অবস্থার গ্রন্থি মোচনে ব্যবসাবান্ধব নীতি প্রণয়ন শুধু নয়, তা বাস্তবায়নেও সমভাবে যত্নবান হতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর