সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

মিয়ানমারের আন্তরিকতাই প্রশ্নবিদ্ধ

মিয়ানমার বিশ্ব জনমতকে বিভ্রান্ত করতে হঠাৎ করে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের তোড়জোড় শুরু করলেও এ উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে শুভংকরের ফাঁকি। মিয়ানমার থেকে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা হত্যা ও নির্যাতনের ভয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে সেনা অভিযানের মুখে। অনেক টালবাহানার পর মিয়ানমার প্রাথমিক পর্যায়ে মাত্র দেড় হাজার রোহিঙ্গাকে নেওয়ার পাইলট প্রকল্প নিয়েছে। বিশ্ব সমাজের চাপ কমাতে তারা যে লোক দেখানো প্রকল্প নিয়েছে তাতে আগামী ৫০ বছরেও সব রোহিঙ্গার স্বদেশে ফেরা সম্ভব হবে না। মনে করা হচ্ছে, চলতি এপ্রিল মাসে আন্তর্জাতিক বিচার ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে সুবিধাজনক অবস্থান পেতেই ‘লোক দেখানো তৎপরতা’ শুরু করেছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। সামরিক সরকারপন্থি গণমাধ্যমগুলোর খবর, মিয়ানমার সরকার আগামী মাসে বাংলাদেশ থেকে ১৫০০ রোহিঙ্গা ফেরত নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তাদের আবাসন ব্যবস্থার জন্য ১৫টি নতুন গ্রাম তৈরি করতে একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে তারা। ৭৫০টি প্লটের ওপর গ্রামগুলো প্রতিষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ-ফেরত রোহিঙ্গাদের প্রথমে দুই মাসের জন্য হ্লা ফো খাউং অন্তর্বর্তী শিবিরে রাখা হবে। এর আগে মংডু শহরের তাউং পিয়ো লেটওয়ে ও নাগার খু ইয়া শরণার্থী শিবিরে তাদের যাচাই করা হবে। পরে তাদের নতুন গ্রামে পাঠানো হবে। জান্তা সরকারের তথ্য উপমন্ত্রী মেজর জেনারেল জাও মিন তুন বলেছেন, একটি পাইলট কর্মসূচির আওতায় প্রত্যাবাসন কাজ চলবে। এপ্রিলের মাঝামাঝিই এটি শুরু হতে পারে। পাইলট প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে আরও ৫ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের কোনো আগ্রহ আছে কি না তা একটি প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়। এ ব্যাপারে যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তা মোটেও সুনির্দিষ্ট নয়। সবচেয়ে বড় কথা, রোহিঙ্গারা এমন প্রত্যাবাসনে আস্থা রাখতে পারছে না। জাতিসংঘ এবং দাতা  সংস্থাগুলোও মিয়ানমারের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দিহান। আমাদের বিশ্বাস, সরকার মিয়ানমারের প্রত্যাবাসন প্রকল্পে সায় দিলেও তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সতর্ক থাকবে। অতি দ্রুত সব রোহিঙ্গা যাতে দেশে ফিরতে পারে সে ব্যাপারে চাপ অব্যাহত রাখতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর