শুক্রবার, ২৩ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাজা বিম্বিসার, আম্রপালি ও আমবিষয়ক নানা কথা

সাইফুর রহমান

রাজা বিম্বিসার, আম্রপালি ও আমবিষয়ক নানা কথা

মগধের অধিপতি পরাক্রমশালী রাজা বিম্বিসার একটি জরুরি কাজে এসেছেন তার পার্শ্ববর্তী রাজ্য বৈশালীতে। গৌতম বুদ্ধের আমলে (৫৬৩-৪৮৩ খ্রিস্টপূর্ব) প্রাচীন ভারতের আর্যভূমি ষোলটি জনপদে বিভক্ত ছিল। মগধ ও বৈশালী সেই ষোলটি রাজ্যের মধ্যে অন্যতম দুটি রাজ্য। বিম্বিসারকে কালই ফিরে যেতে হবে মগধে। কিন্তু তিনি মনে মনে ভাবলেন বৈশালীর অন্যতম আকর্ষণ, যার রূপের কথা তিনি- শুনে বিমোহিত হয়েছেন অজস্র বার। সেই আম্রপালির সঙ্গে সাক্ষাৎ না করেই কি ফিরে যাবেন তিনি। এটা কী করে হয়। আম্রপালি বৈশালীর নগরবধূ। নগরবধূ হলেও আম্রপালি রূপে গুণে, সংগীত ও নৃত্যকলার এক বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত রেখেছেন সমগ্র আর্যবর্তে। নগরের উপকণ্ঠে এক দিন আম বাগানে একটি শিশুকন্যা কুড়িয়ে পেয়ে লালনপালন করেছিলেন সন্তানহীন এক দম্পতি, আম্রপালি নামটিও সে কারণেই। মাত্র ১১ বছর বয়সেই তার রূপের খ্যাতি সাড়া ফেলেছিল নগরীর শান্ত জীবনযাত্রায় আর এ জন্যই বৈশালীর তরুণদের মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছিল পারস্পরিক ঈর্ষা ও দ্বন্দ্ব। এ কারণেই বৈশালীর সব গণ্যমান্য ব্যক্তি সবদিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেন যে কারও গৃহবধূ নয়, আম্রপালি হবেন বৈশালীর নগরবধূ। রাজা বিম্বিসারের দেখা পেয়ে আম্রপালিও ধন্য হলেন। আম্রপালির সঙ্গে রাতযাপন শেষ করে বিম্বিসার পরদিন ফিরে গেলেন মগধে। তবে বিম্বিসার কথা দিয়ে গেলেন আম্রপালির কাছে বারবার ফিরে আসবেন। কিছুদিন পর রাজা বিম্বিসার আবার এলেন আম্রপালির কাছে। ততদিনে আম্রপালি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। আম্রপালির গর্ভে রাজা বিম্বিসারের সন্তান। বিম্বিসার আম্রপালিকে অনুরোধ করলেন সন্তান হলে নাম রাখতে বিমল কোন্দন্ন। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্য রাজা বিম্বিসার আর কোনোদিন আম্রপালির কাছে ফিরে এলেন না। এরপর কেটে গেছে বহু বছর। বিমলও বড় হয়েছে। মগধের সিংহাসনে বসেছেন অজাতশত্রু। ক্ষমতালোভী প্রিয় পুত্রের ইচ্ছায় রাজগৃহের কারাগারে অনাহারে মৃত্যু হয়েছে বিম্বিসারের। রাজা অজাতশত্রু গৌতমবুদ্ধকে পছন্দ করেন না বলে গৌতমবুদ্ধ আশ্রয় নিয়েছেন আম্রপালির আম্রকুঞ্জে। গৌতমবুদ্ধের শান্তির বাণীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে আম্রপালি ও তার ছেলে বিমল বৈষয়িক সুখ ত্যাগ করে হয়ে যান বৌদ্ধ ভিক্ষু। তারা দুজনেই যোগদেন গৌতমবুদ্ধের সংঘে। বৈশালীর সেই নগরবধূ আম্রপালির নাম অনুসারেই আমের একটি প্রজাতির নাম আম্রপালি। বাংলাদেশ থেকে যদি কোনো উপন্যাস বিশ্ব সাহিত্যে স্থান করে নেওয়ার মতো হয় তবে আমার মতে সেটি হওয়া উচিত আখতারুজ্জামান ইলিয়াস লিখিত ‘খোয়াবনামা’। ঠিক তেমনি বাংলাদেশ থেকে যদি কোনো ফল বিশ্বদরবারে পেশ করা হয় তবে সেটা অবশ্যই হওয়া উচিত আম। আমার মতের সঙ্গে দ্বিমত করবেন এমন মানুষের সংখ্যা বোধকরি নগণ্য। বিশ্ববিখ্যাত পর্যটক ভাস্কো দ্য গামা ভারতবর্ষে এসেছিলেন ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে। তিনি যখন তার দেশ পর্তুগালে ফিরে গেলেন তখন তিনি ভারত সম্পর্কে নানা গল্পে মসগুল। তার দেখা বহুবিধ জিনিসের ওপর মসলার প্রলেপ লাগিয়ে এসব গল্প তিনি বলে বেড়ান যত্রতত্র। আর এ জন্য রাজা ফিলিপও একদিন ভাস্কো দ্য গামাকে জিজ্ঞেস করলেন- আচ্ছা আপনি আমাদের খুলে বলুন তো ভারতের কোন কোন বস্তু আপনাকে চমৎকৃত করেছে। ভাস্কো দ্য গামা বললেন- বলতে গেলে বলতে হয় আমাকে মুগ্ধ করেছে অনেক কিছুই। তবে আম ও চন্দন কাঠ অবশ্যই ভারতের দুটো উৎকৃষ্ট জিনিস। তবে রাজা ফিলিপ এটা জানতেন কিনা আমি বলতে পারব না, ইউরোপে কিন্তু আম পৌঁছে গিয়েছিল আরও অনেক আগে। যেহেতু আম একটি পচনশীল ভোগ্যপণ্য সেহেতু আমকে আচারে রূপান্তরিত করে তারপর রপ্তানি করা হতো। আর এই আমকে ইউরোপ, আফ্রিকা কিংবা অন্যত্র বিশ্বজনীন করে তোলার মতো কাজগুলো সাধারণত করেছিলেন আরব বণিকেরা। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে ভাস্কো দ্য গামার ভারত আগমনের বহু পূর্ব থেকেই স্থলপথে আরব বণিকেরা মসলা থেকে শুরু করে নানা ধরনের পণ্য ভারত থেকে বিভিন্ন দেশ-বিদেশে আমদানি ও রপ্তানি করতেন। সেই সুবাদে আমের আচার পৌঁছে গিয়েছিল ইংল্যান্ডেও। কথিত আছে ইংরেজ রাজা জন মাঝেমধ্যে আমের আচার দিয়েই নাকি তিনি তার মধ্যাহ্ন ভোজ কিংবা রাতের আহার সম্পন্ন করতেন। আম যে স্টেপল ফুড অর্থাৎ মানুষের প্রধান খাদ্য হতে পারে সে তথ্য কিন্তু আমরা জানতে পারি বিখ্যাত সাহিত্যিক রাজ শেখর বসুর (যার ছদ্মনাম পরশুরাম) আপন সহদর, লেখক শশিশেখর বসু লিখিত ‘আম শাস্ত্র’ লেখাটি থেকে। তিনি লিখেছেন- আমকে স্টেপল ফুড বলছি এ কারণে যে, কলকাতার বিবেকানন্দ রোডে একদিন দেখলাম একটি লোক ফুটপাতের কিনারায় শুয়ে বেহুঁশে ঘুমাচ্ছে। মাথার কাছে সতেরোটারও বেশি আমের খোসা ও আমের প্রাণপনে চোষা আঁটি। খোঁজ নিয়ে জানা গেল চব্বিশ ঘণ্টা লোকটি নাকি ভাত-তরকারি স্পর্শ করেনি। অন্যদিকে সে সময়ে কলকাতায় বাঁশরী নামে একটি মাসিক পত্রিকা ছিল। সেটার সম্পাদক আম এতো ভালোবাসতেন যে চার দিন ল্যাংড়া খেয়েই ছিলেন। পঞ্চম দিনে হঠাৎ মূর্ছা গেলেন তিনি। ডাক্তারকে ফোন করতেই ডাক্তার উপদেশ দিলেন- ভাতের সঙ্গে মাছের ঝোল চটকে তাকে খাইয়ে দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। শশিশেখর বসু আরও লিখেছেন- এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। রবিনসন ক্রুশোও অতিরিক্ত আঙুর খেয়ে চৈতন্য হারিয়েছিলেন। তবে অনেকে আবার আম না খেলেও শরীরের সৌন্দর্য বর্ধনে এটি ব্যবহার করতেন। মিসরীয় রানী ক্লিওপেট্রা মুখের ফেসিয়াল হিসেবে শুকনো আমের পিণ্ড বানিয়ে মুখে লাগাতেন। আজকাল মেয়েরা নানাবিধ ফলের যে ফেসিয়াল ব্যবহার করেন তার গোড়াপত্তন সম্ভবত হয়েছিল দুই হাজার বছর আগে রানী ক্লিওপেট্রার হাত ধরেই। তবে ভুবনখ্যাত বীর আলেকজান্ডারও কিন্তু বেশ সৌন্দর্য সচেতন মানুষ ছিলেন। তিনি সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে আমের কোমল পিণ্ড ব্যবহার করতেন কি না সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই। তবে ইতিহাস থেকে এটা জানা যায় যে, দুধের চৌবাচ্চায় প্রচুর পরিমাণ জাফরান মিশিয়ে সেখানে তিনি ডুবে থাকতেন গোসলের পূর্বে বেশ কিছু সময়। সে হিসেবে আলেকজান্ডারের সঙ্গে ক্লিওপেট্রার আবার বেশ মিল পাওয়া যায়। কারণ ক্লিওপেট্রাও দুধের সঙ্গে জাফরান মিশিয়ে গোসল করতেন নিয়মিত।

ভাস্কো দ্য গামার বদৌলতে ইউরোপবাসীর জন্য ভারতের দরজা যখন খুলে গেল তখন অন্যান্য আকর্ষণীয় ভোগ্য পণ্যের মতো আমেরও গল্প শুনে শুনে ইউরোপবাসীও টাটকা আমের স্বাদ আস্বাদনে ব্যাকুল হয়ে উঠল। গামার ভারতে আগমনের পূর্বে আরব বণিকেরা যে আম শুকিয়ে কিংবা আচার বানিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চালান দিত সে কথা আমি পূর্বেই উল্লেখ করেছি। এখানে প্রসঙ্গক্রমেই বলতে হয়, ভারতবর্ষের লোকেরা কিন্তু প্রাচীনকাল থেকেই আচার তৈরিতে ওস্তাদ। হাফেজখানার নথিপত্র ঘেটে দেখা যায় যে, এখন থেকে চার হাজার বছর পূর্বে আচার তৈরির কলাকৌশলও আবিষ্কার করেছিলাম এই আমরাই। সে সময় আচার হিসেবে যে বস্তুটি ইতিহাসে প্রথম প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছিল সেটি ছিল শসা। সে যা হোক সতের শ শতকের দিকে ইউরোপের বণিকেরা ভারতের এই রসালো ফল আমকে কীভাবে নিয়ে যাবেন তাদের দেশে এই নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা করতে লাগলেন। অবশেষে তারা লক্ষ্য করলেন যে সব প্রজাতির আমের মধ্যে একমাত্র ল্যাংড়াই অনেকদিন টেকে। বিশেষ করে ইংরেজরা ল্যাংড়া আমের বোঁটাতে গালামোহর লাগিয়ে সেই আমগুলো তারা পাঠাতে শুরু করলেন ইংল্যান্ডে। ইংরেজ ব্যবসায়ীদের ধারণা ছিল আমের বোঁটার মধ্য দিয়েই বাতাস কিংবা পোকা ঢুকে আমে পচন ধরায়। এই যে ভারত থেকে আম ব্রিটেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য এত মাতামাতি’ কিন্তু ব্রিটিশ আমলে যেসব সাহেব-সুবোরা এ দেশে আসতেন তাদের বেশির ভাগই কিন্তু আবার আম ভক্ত হয়ে ওঠতে পারেননি। বরং কেউ কেউ ছিলেন আম বিদ্বেষী। সে কথা আমরা জানতে পারি শশিশেখর বসুর লেখা থেকেই। তিনি নিজেও ব্রিটিশ আমলের মানুষ। তিনি লিখেছেন- বেশির ভাগ ইংরেজরাই আমে তারপিনের গন্ধ বলে এই ফল পছন্দ করতেন না। এ ছাড়া আঁটি চোষার সময় যে শব্দ হয় সেটা নাকি আবার এটিকেট বিরুদ্ধ। পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরের এক ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেট একবার ব্রাহ্মণভোজন দেখে বিলেতে তার মেমকে পত্র লিখেছিলেন- “মাই ডারলিং, দুই শত হাফ নেকেড পণ্ডিত ক্ষীরের সঙ্গে বোম্বাই আম ও লুচি চটকে সেকি ভয়ানক শব্দ করে খেল। চক্ চক্ চক্। তাদের এই আমের আঁটি চোষার দৃশ্য যদি বিলেতে কুড়ি শিলিং টিকিট করে দেখানো যেত তবে সেখানে সম্ভবত ভয়ানক রকম হুড়োহুড়ি পড়ে যেত।” তবে আমার ব্যক্তিগত ধারণা কলকাতার সাহেবেরা আম পছন্দ করত না মূলত দুটি কারণে। প্রথমত, ইংল্যান্ড থেকে চাকরি-বাকরি নিয়ে যেসব সাহেব-সুবোরা ভারতে আসত তাদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিল বেরসিক। তা না হলে কি আমের মতো এমন ঐশ্বরিক একটি ফল না খেয়ে থাকতে পারে! দ্বিতীয়ত, আম খেতে হাত ব্যবহার করতে হয়। তারা আম খাওয়ার জন্য হাত ব্যবহার করতে সম্ভবত একেবারেই অনিচ্ছুক ছিল। তবে শশিশেখর বসুর লেখা থেকেই জানা যায়- সাহেবেরা আম পছন্দ না করলেও তাদের মেমরা কিন্তু ঠিকই লুকিয়ে চুকিয়ে আম খেতেন। মাঝে মধ্যে তাদের সাহেবদের কারণে ঘরের ভিতর আম খাওয়ার সুযোগ না পেয়ে তারা নাকি গোসলখানায় ঢুকে দামি দামি পোশাক পরিচ্ছদগুলো সব পরিত্যাগ করে আমের আঁটি চুষতেন। আম শুধু যে ইংরেজরাই অপছন্দ করতেন তা কিন্তু নয়। আমার মনে হয় কবিরাজ-বদ্যিদেরও আম খুব একটা পছন্দ নয়। তা না হলে কি কিছু বিশ্রি রোগের সঙ্গে আমকে যুক্ত করে দেন। যেমন- আমরক্ত, আমাশয়, আমবাত, আমফোঁড়া, আমবুলানস। আবার অন্যদিকে কিছু ফলের সঙ্গে আমকে যুক্ত করে তাদের জাতে উঠানো হয়েছে- আমরুল, আমাদা, আমানি, আমসন্দেস, আমলকি, আমড়া, সাদিআম (পেয়ারা) ইত্যাদি। অন্যদিকে আমের বিভিন্ন প্রজাতির নামকরণেও দেখা যায় খাম খেয়ালিপনা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য। অনেকে হয়তো বলবেন, প্রত্যেকটি নামের পেছনেই তো একটি ইতিহাস আছে। নামগুলো তো সেই ইতিহাস ধরেই প্রচার পেয়েছে। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে তাহলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কাজটা কি। আমের মধ্যে ল্যাংড়া হচ্ছে মহারাজ। অথচ এর নাম ল্যাংড়া। মহারাজ তুল্য এ জাতের আমটির উদ্ভব ভারতের বেনারসে। সেখানকার এক খোঁড়া বা ল্যাংড়া ফকিরের নামে আমটির নামকরণ করা হয়েছে। পাগল এই ল্যাংড়া ফকিরের আস্তানা থেকেই নাকি আমের এই জাতটি প্রথম সংগ্রহ করা হয়েছিল। সীতা ভোগ নামটির উদ্ভবও বেশ বিচিত্র। আমভক্ত হনুমান এতো রামভক্ত ছিলেন যে লংকার বাগানে গাছে বসে ভালো ভালো আমের আঁটিগুলো সব অযোধ্যায় ও সীতার বাপের বাড়ি মিথিলায় ছুড়েছিলেন। আর সেজন্য মিথিলায় জন্মানো আমগুলোকেই বলে সীতাভোগ। উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদে দ্বারভাঙ্গা নামক স্থানে সম্রাট বাবর সহস্রাধিক আম গাছ রোপণ করেছিলেন। সেখানকার আমকে তাই বলে দ্বারভাঙ্গা আম। সেই পঞ্চাশ-ষাট বছর আগের ঘটনা পানির অভাবে রংপুর অঞ্চলে আম গাছের গোড়ায় এক কৃষক হাঁড়ির তলায় ফুটো করে সেচের ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু রাত্রিবেলা কিছু দুষ্ট ছেলেপুলে হাঁড়িগুলো ভেঙে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করে যায়। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় ওই গাছের আমই মিষ্টি ও সুস্বাদু। তখন ওই কৃষক এই আমের নাম দেন হাঁড়িভাঙা।

লেখক : গল্পকার ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী

সর্বশেষ খবর