সোমবার, ২৬ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

পদ্মা সেতু

অর্থনৈতিক স্বাধীনতার স্মারক

স্বপ্নের পদ্মা সেতুর এক বছর পূর্তি হয়েছে গতকাল। আজ দ্বিতীয় বছরে পদার্পণ করছে বাঙালি জাতির অসীম সাহসিকতার এই স্তম্ভটি। বাঙালির কয়েক হাজার বছরের সেরা অর্জন আমাদের স্বাধীনতা। সাহসিকতা ও বীরত্বের সেই স্মারক অমরত্ব লাভ করবে দুনিয়ার ইতিহাসে। ভৌগোলিক স্বাধীনতার পর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের পথে সবচেয়ে বড় অর্জন হলো নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ। যা একদিকে যেমন স্বাধীনতা-উত্তর বাঙালির সবচেয়ে বড় অর্জন তেমনি অসীম সাহসিকতার নিদর্শনও। পদ্মা সেতু এক বছরেই পাল্টে দিয়েছে বাংলাদেশকে। দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল আর রাজধানীর মধ্যে সড়কপথে সরাসরি যোগাযোগে বাধা হিসেবে বিবেচিত হতো প্রমত্ত পদ্মা নদী। পারাপারে ভোগান্তি ছিল নিত্যকার ঘটনা। দুই পাড়ের ঘাটে মানুষ ও পণ্যবাহী যান ফেরির অপেক্ষায় থাকত ঘণ্টার পর ঘণ্টা। দেশের বিরাট এক অঞ্চল রাজধানীর সঙ্গে স্থলপথে যুক্ত না থাকায় সর্বক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে পড়ে। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর একসূত্রে গাঁথা সম্পূর্ণ হয়। যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু সেতুর পর পদ্মা সেতু এ নদীর দুই পাড়ের বিভক্তি দূর করেছে। এক বছর আগেও মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টায় খুলনা কিংবা বরিশাল থেকে ঢাকায় আসা-যাওয়া ছিল স্বপ্নের মতো। পদ্মা সেতু চালুর পর তা প্রতিদিনের স্বাভাবিক ঘটনা। মাত্র তিন ঘণ্টার দূরত্বে চলে এসেছে মোংলা সমুদ্রবন্দর। পদ্মা সেতু চালুতে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় শিল্প ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যে কোনো স্থান থেকে সকালে রওনা দিয়ে ঢাকায় এসে কাজ সেরে আবার রাতের আগে ফেরা এখন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক সময় রাজধানী থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যাওয়া-আসা ছিল সাক্ষাৎ ভোগান্তির নাম। এই ভোগান্তির কারণে স্বাধীনতার পর উপেক্ষিত জনপদে পরিণত হয় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলো। স্বাধীনতার আগে সমৃদ্ধ শিল্পনগর খুলনা তার স্বকীয়তা হারায়। পদ্মা সেতুর পর উপেক্ষিত পদ্মাপাড়ের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে চলছে এখন নানামুখী উন্নয়ন কর্মকা-। ওই এলাকার ৪ কোটি মানুষের স্বার্থে এ তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর