রাজধানীতে হঠাৎ বেড়েছে ছিনতাইকারীর দৌরাত্ম্য। ছিনতাইকারীরা কেড়ে নিচ্ছে নির্ভয়ে মানুষের পথ চলার স্বাধীনতা। বিশেষ করে ঈদুল আজহার আগে ও পরে ছিনতাইকারী নামের মানুষ শকুনদের তৎপরতা জনমনে অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে। ছিনতাইকারীদের হাতে একজন কনস্টেবল নিহত হওয়ার পর পুলিশের তৎপরতা বেড়েছে। বিষয়টি তাদের প্রেস্টিজ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘটনা-১ : গত ১ জুলাই ভোরে ঢাকার ফার্মগেটের আল রাজি হাসপাতালের সামনে আসেন পুলিশ কনস্টেবল মনিরুজ্জামান তালুকদার। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত ছিলেন। ঈদের ছুটি শেষে শেরপুর থেকে কর্মস্থল ঢাকায় ফিরে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। ছিনতাইকারীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় তারা। এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মামলা হয়। পরে অভিযুক্ত তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ছিনতাইয়ের সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু ও ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়। গত ২৯ জুন রাতে ঢাকার হাতিরঝিল এলাকায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের দুজন সাংবাদিক ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। তাদের মধ্যে একজন হাতে গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হন। ছিনতাইকারীরা তার হাতে থাকা ব্যাগটি নিয়ে যায়। এ ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় মামলা করা হয়। পরে অভিযুক্ত দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত ছুরি ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। আরেক ছিনতাইকারীকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। রাজধানীতে ছিনতাই হয় না এমন কোনো দিন নেই বললেই চলে। দেড় কোটি মানুষের এই মহানগরীতে যেসব ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে তার একটা ক্ষুদ্র অংশই থানায় অভিযোগ আকারে লিপিবদ্ধ হয়। থানায় জিডি করে প্রতিকার হবে না এমন ধারণার কারণেও ছিনতাই বা সংঘটিত অনেক ছোটখাটো অপরাধ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে আসে না। যা অপরাধ দমনে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। আমরা আশা করব নাগরিকদের স্বাচ্ছন্দ্যে পথ চলা ও যাতায়াতের অধিকার নিশ্চিত করতে ছিনতাইকারীদের দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।