মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

একজন মুক্তিযোদ্ধার মুক্তি

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

একজন মুক্তিযোদ্ধার মুক্তি

২১ জুলাই ছিল আমার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। সেই কবে ১৫ বছর আগে এক সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছেলেমেয়ে এসেছিল আমার কাছে। তার আগে প্রেস ক্লাবে কী এক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেখানেই তারা ধরেছিল। সেটা বিকাল ৫-সাড়ে ৫টার দিকে। তাদের বলেছিলাম বাবর রোডের বাসায় আসতে। যে বয়সে মানুষের জন্য মানুষের দয়ামায়া থাকে সব থেকে বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদেরও বয়স ছিল ঠিক সেরকম। কুমিল্লার দেবিদ্বারের রাখাল চন্দ্র নাহা এক খুনের মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত। পরদিন তার ফাঁসি হবে। সব শুনে খুবই খারাপ লাগছিল। কারণ যারা দেশ বানিয়েছে তাদের জীবন যাবে রাষ্ট্রের ফাঁসির দড়িতে, এটা মেনে নিতে পারছিলাম না। তখনই বঙ্গভবনের দিকে ছুটেছিলাম। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে চাই বলতেই বঙ্গভবনের লোকজন বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। মিনিট দশেকের মধ্যেই মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। আমার তখনও জানা ছিল না যে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দিনক্ষণ ঠিক না করে যখন তখন সাক্ষাৎ পাওয়া যায় না। কিন্তু আমি পেয়েছিলাম। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি রাখাল চন্দ্র নাহার কথা বলতেই মহামান্য রাষ্ট্রপতি বললেন, ‘সিদ্দিকী সাহেব, আপনি একজন ভালো মানুষ। আপনি দেশকে ভালোবাসেন, সবাইকে সম্মান করেন। হয়তো আপনি মনে করেন আমিই সব, আমি সবকিছু করতে পারি। আসলে কিন্তু তা নয়। আমি রাষ্ট্রপতি ঠিকই, কিন্তু আমি বঙ্গভবনের একজন পিয়নকেও নাড়াতে পারি না, সরাতে পারি না। আপনি যান তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধানের কাছে।’ পরদিন সকাল সাড়ে ৯টায় গিয়েছিলাম তেজগাঁও তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান ফখরুদ্দীন আহমদের কাছে। তিনিও প্রায় মহামান্য রাষ্ট্রপতির মতোই বলেছিলেন, ‘আমি কিছু না। যা কিছু সবই হয় উত্তরপাড়া থেকে।’ সেখান থেকে গিয়েছিলাম সেনাপ্রধানের দফতরে। মইন উ আহমেদসহ তিনজন বসা ছিলেন। আমার কথা শুনে মইন উ আহমেদ বলেছিলেন, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধার ফাঁসি হোক এটা আমরাও চাই না।’ সঙ্গে সঙ্গেই ফখরুদ্দীন আহমদের কাছে সেনাপ্রধান চিঠি পাঠিয়েছিলেন রাখাল চন্দ্র নাহার ফাঁসির আদেশ স্থগিত রাখতে। সে দিনটি আমার ভালো যায়নি। ১১টা-সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ি ফিরেছিলাম। কিছুই ভালো লাগছিল না। তখনও রাখাল চন্দ্র নাহার ব্যাপারে কোনো খবর ছিল না। রাত সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎই বঙ্গভবনের ফোন পাই। জানানো হয়, রাখাল চন্দ্র নাহার ফাঁসির আদেশ স্থগিত করা হয়েছে। খুবই স্বস্তি পেয়েছিলাম দেহমনে। আমার সব অস্তিত্ব আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে উঠেছিল। যাক, তবু একটা প্রাণ বেঁচে গেল। এরপর অনেক উথালপাথাল গেছে। দু-চার বার রাখাল চন্দ্র নাহার খোঁজখবর করেছি। রাখাল চন্দ্র নাহা খুবই অসুস্থ শুনে কুমিল্লা পর্যন্ত গেছি। দারুণ অসুস্থ থাকায় তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছিল। সেখানে গিয়েও দেখা করেছি, কথা বলেছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে আইজি জেল বলে রাখায় প্রচুর সমাদর করেছে। রাখাল চন্দ্র নাহার সে সময় ওঠাবসারও সামর্থ্য ছিল না। ওই অবস্থায়ই রাখাল চন্দ্র নাহার পাশে অনেকক্ষণ বসে ছিলাম। ছোটখাটো দু-চার কথা হয়েছে। অনেকদিন পর নাহার স্ত্রী, একমাত্র মেয়ে এবং দুই ছেলে এসেছিল। আমি তাদের খবর পাঠিয়ে ছিলাম যাতে বাবার সঙ্গে দেখা হয়, কথা হয়। গুরুতর অসুস্থ থাকায় নাহাকে ঢাকায় পাঠাতে বলেছিলাম। বলেছিলাম বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। সেইমতো পরদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদকে বলেছিলাম। পরদিন বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। গিয়ে সারা হাসপাতালে তালাশ করে কোথাও তাকে পাইনি। পরে ফোন করেছিলাম ঢাকার জেলার মাহবুবকে। মাহবুব আবার নারায়ণগঞ্জের জোহা পরিবারের আত্মীয়। নাসিম ওসমানের ভাগনিজামাই। নাসিম ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হলে তার প্রতিবাদে সদ্যবিবাহিত স্ত্রী পারভীনকে রেখে আমার সঙ্গে যোগ দিয়েছিল। নাসিমের শ্রদ্ধাভক্তি-ভালোবাসা ছিল অসাধারণ। জেলার মাহবুবকে ফোন করায় তিনি জানান, কেরানীগঞ্জে তার জেলেই রাখাল চন্দ্র নাহা আছে। আমি একদিন পর তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। জেলার মাহবুব সেদিন চট্টগ্রামে কোনো এক কোর্টে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সবাইকে বলে গিয়েছিলেন যথাযথ যত্ন নিতে। তারা তা নিয়েছিল। যেহেতু স্ত্রী সঙ্গে গিয়েছিল সেহেতু সে অনেক কিছু নিয়ে গিয়েছিল। রাখাল চন্দ্র নাহাকে বলে এসেছিলাম তাকে পরদিনই হাসপাতালে আনা হবে। সেহেতু বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে গিয়েছিলাম। তাকে ভর্তি করে নেওয়া হয়েছিল। সব রকম চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছিল। জেলকোড অনুসারে একজন যাতে তাকে সার্বক্ষণিক দেখতে পায় সে ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে সে অনেকদিন ছিল। বিছানায় পড়ে থাকা স্বাস্থ্যহীন একজন মানুষ কীভাবে যেন উঠে দাঁড়িয়ে ছিল। এরপর ওকে আবার ঢাকা কেরানীগঞ্জের জেলে নেওয়া হয়। সেখান থেকে কুমিল্লায়। দিন কাটতে থাকে। এর মধ্যে পাঁচ-সাত বার মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাখাল চন্দ্র নাহাকে নিয়ে কথা হয়। বারবার ফাইল পাঠানো হয় আইন মন্ত্রণালয়ে। আইনমন্ত্রী প্রতিবারই ফাইলটি নাকোচ করে দেন। তার যুক্তি একজন আসামিকে একবার রেয়াত দেওয়া যেতে পারে। তার বেশি নয়। ফাঁসি থেকে তার সাজা যাবজ্জীবন করা হয়েছে। তাকে আর কিছু করা যাবে না। আমার কাছে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এ ধারণাটি যুক্তিযুক্ত মনে হয়নি। স্বাধীনতার পরপরই একটা সিদ্ধান্ত হয়েছিল, কোনো অবস্থায়ই একজন মুক্তিযোদ্ধাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া যাবে না। রাখাল চন্দ্র নাহার ক্ষেত্রে সেটা মানা হয়নি। জজ সাহেব তাকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন, ‘অত্র মামলার আসামি রাখাল চন্দ্র নাহা ও নেপাল চন্দ্র নাহা (পলাতক) পিতা-মৃত অক্ষয় চন্দ্র নাহা, গ্রাম- হোসেনপুর, থানা-দেবিদ্বার, জেলা-কুমিল্লার বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় গঠিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে ওই ধারার আওতায় দোষী সাব্যস্তক্রমে গলায় রশি ঝুলিয়ে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হলো।’ দ্বিতীয়ত যাবজ্জীবন দন্ড ছিল আগে ২০ বছর। তখন দন্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কারাগারে থাকতে হতো ১৪ বছর। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি জনাব সাহাবুদ্দীন সেই ২০ বছরকে এক কলমের খোঁচায় ৩০ বছর বানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তখন ছিলেন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রাষ্ট্রপতি। এরকম গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার তার ক্ষমতা ছিল কি না, এ দন্ডাদেশ পরিবর্তন করে সংসদে পরে আইন পাস করা হয়েছে কি না এর কিছুই জানা নেই। প্রথম রাখাল চন্দ্র নাহাকে কুমিল্লা জেলে দেখতে গিয়েছিলাম। তখন জেলের ডিআইজি ছিলেন মেজর হায়দার। তারপর তাকে ঢাকায় দেখি, কুমিল্লায় দেখি। একেবারে হতদরিদ্র নাহার পরিবারের লোকজন আসে যখন যেভাবে সাহায্য করা যায় সেভাবেই তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করি। এ নিয়ে মাঝেমাঝেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের কাছে যাই। তাকে যতবার রাখাল চন্দ্র নাহাকে নিয়ে যখন যা বলেছি সব তিনি রক্ষা করেছেন বা রক্ষার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আইনমন্ত্রীর কারণে তিনি এগোতে পারেননি। রাখাল চন্দ্র নাহা গ্রেফতার হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। তাকে যেদিন গ্রেফতার করা হয় সেদিন সে বাড়ি ছিল না। ছিল দূরে কোনো আত্মীয়ের বাড়িতে। নাহা জানত না যে তার বাড়িতে কাউকে খুন করা হয়েছে। সেই ’৯৯ থেকে ২০২৩ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত জেলে ছিল। জেলে তার মুক্তির দিন হিসাব করা হয়েছিল ২০০৩ সালে শাস্তি পাওয়ার দিন থেকে। অথচ শাস্তি পাওয়ার আগে যে তিন-সাড়ে তিন বছর সে জেলে কাটিয়েছে সে দিনগুলো ধরা হয়নি। একজন মুক্তিযোদ্ধার প্রতি এও এক নির্মম যাতনা, একটা বৈরীভাব। যদি হাজতখাটা দিনগুলোকে আইনত ধরা হতো তাহলে সে আরও তিন-সাড়ে তিন বছর আগে জেল থেকে বের হতে পারত। মুক্ত বাতাসে তার জীবন কাটাতে পারত। তা যাই হোক, ২ জুলাই মুক্তি পেয়ে ২১ জুলাই স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে, আত্মীয়সহ আমার বাবর রোডের বাড়ি এসেছিল। তখনই মনে হচ্ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান নাহার জন্য যে সহানুভূতি দেখিয়েছেন তাতে তার সঙ্গে একবার দেখা করিয়ে দেওয়া উচিত। তাই নাহার পুরো পরিবার নিয়ে বিকাল সাড়ে ৪টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ি গিয়েছিলাম। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও মাঝে মাঝে তার মণিপুরী পাড়ার বাড়িতে থাকেন। আবার অনেক সময় ধানমন্ডিতে থাকেন। সেদিন ছিলেন মণিপুরী পাড়ায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সব কজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কাছ থেকে অথবা দূর থেকে দেখেছি। কিন্তু আসাদুজ্জামান খান ছাড়া বিতর্কের ঊর্ধ্বে কেউ ছিলেন কি না বলা কঠিন। এখন পর্যন্ত যে অবস্থায় তিনি আছেন তাতে সম্মানের সঙ্গেই যেতে পারবেন এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। রাখাল চন্দ্র নাহার সাক্ষাতে তিনি বেশ খুশি হয়েছেন। তার ধারণা ছিল রাখাল চন্দ্র নাহা টাঙ্গাইলের মানুষ। কিন্তু কুমিল্লার দেবিদ্বারের মানুষ শুনে তিনি আরও আশ্চর্যান্বিত হয়েছেন। আমাকে আলাদা করে বলেছেন, ‘অবাক কান্ড! আপনার কাছে আপনপর নেই নাকি? অন্য জেলার একজন অচেনা মানুষের জন্য আপনি এতটা করতে পারেন?’ আমি আর কী বলব, আমার যে অভ্যাস আমি তা-ই বলেছি।

রাখাল চন্দ্র নাহাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ’৯৯ সালের একেবারে গোড়ার দিকে। ঘটনা ঘটেছিল ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৯-এর সকাল ৭টায়। প্রতিবেশী দীনেশ চন্দ্র দত্ত খুন হন। ঘটনার দিনই তাকে অনেক দূরের আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। সেই থেকে কারাগারে। প্রথম অবস্থায় কোর্টে তুললে তার পক্ষে কোনো উকিল ছিল না। একেবারে হতদরিদ্র মানুষ কোথায় উকিল পাবে? উকিল নিয়োগ করার মতো কোনো সামর্থ্য ছিল না। গ্রেফতার হওয়ার পর সে কোনো দিন জামিন পায়নি। জামিন পাবে কি, জামিন চাওয়াই হয়নি। সেই কবে ’৯৯ আর ২০২৩ সাল- এতটা বছর নিদারুণ অবহেলায় একজন মুক্তিযোদ্ধা বিনা কারণে একটি মিথ্যা খুনের মামলায় কারানির্যাতন ভোগ করেছে। মৃত্যুদন্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড নির্ধারণ হওয়ায় সে যেমন কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল তেমনি আমি ছোটাছুটি করায় কারা কর্তৃপক্ষ ও অন্যদের শুভদৃষ্টি পড়েছিল। সেই মানুষটা ২১ জুলাই আমার বাড়িতে আসায় আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মণিপুরী পাড়ার বাসায় নিয়ে গিয়েছিলাম। নাহার বসবাস করার মতো কোনো বাড়িঘর নেই। কথাটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনেও বলেছিল। তাই চিন্তা করছি কোনো দিন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে গিয়ে তার নামে একটি বীরনিবাস বরাদ্দের অনুরোধ জানাব। অনেকেই বিশ্বাস করে না বা বিশ্বাস করতে শেখেনি, রাখে আল্লাহ মারে কে, মারে আল্লাহ রাখে কে? এ কথাটি যে কত বড় সত্য আমি অনেক ক্ষেত্রে ঘাটে ঘাটে দেখেছি, উপলব্ধি করেছি। পরম করুণাময় আল্লাহ না চাইলে কেউ বাঁচে না আর জগৎস্রষ্টা চাইলে কেউ মরে না। ৮২-৮৩ বছর বয়সেও রাখাল চন্দ্র নাহা আলোর মুখ দেখেছে। শরীর ভেঙে গেছে ভালোভাবে হাঁটাচলা করতে পারে না। তবু বেঁচে আছে। রাখাল চন্দ্র নাহা মুক্তি পাওয়ায় কতটা যে আনন্দিত হয়েছি কাউকে বোঝাতে পারব না। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুটা উপলব্ধি করেছেন এবং এ নিয়ে অনেকবার আমাকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। আসলে আমি কখনো ধন্যবাদের জন্য কোনো কাজ করিনি, এখনো করি না। যখন যা করি একজন মানুষের ওপর আল্লাহপ্রদত্ত দায়িত্ব বলেই করি। কখনো কোনো বিষয়ে বড়াই করা আমার ভালো লাগে না। তাই করিও না। হঠাৎ কখনো কোনোভাবে এটাওটা হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর কাছে মাফ চাইবার চেষ্টা করি। কত অমাপা মানুষ কত কথা বলে ২৫-৩০ বছর আগে সামান্য কিছু মনে হলেও এখন তা-ও মনে হয় না। এ জীবনে অনেক কিছু দেখেছি, অনেক কিছু পেয়েছি। কিছুদিন পর চেষ্টা করব রাখাল চন্দ্র নাহাকে আর্থিক সাহায্য করা যায় কি না। যাকে যাকে বলা যায় এমন প্রায় সবাইকে বলব। দেখা যাক, কতটা কী করা যায়। সম্ভব হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন হাসিনাকেও ব্যাপারটা জানাব। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন এই অসহায় মানুষটিকে দয়া করেন, ক্ষমা করেন, হেফাজত করেন।

 

লেখক : রাজনীতিক

www.ksjleague.com

সর্বশেষ খবর