শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

সর্বজনীন পেনশন

কল্যাণ রাষ্ট্রের দিকে অভিযাত্রা

সর্বজনীন পেনশন যুগে প্রবেশ করল দেশ। দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ভোগ করতে পারবেন এই পেনশন। দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্র বানানোর ক্ষেত্রে এ পদক্ষেপ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। এতকাল শুধু সরকারি কর্মচারী নামের ভাগ্যবানরা পেনশন ভোগ করতেন। সপ্তাহে দুই দিন এবং নানা উপলক্ষে ছুটির পর ছুটি ভোগ করেন যারা। মাস শেষে বেতন-ভাতা তো আছেই। যাদের সিংহভাগ মানুষকে যে সেবা দেন, তা দেওয়া হয় উৎকোচের বিনিময়ে। বেশির ভাগ বেসরকারি কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ ছিল উপেক্ষিত। সর্বজনীন পেনশন স্কিম ভোগ করতে পারবেন সরকারি কর্মচারী ছাড়া ১৮ বছরের বেশি যে কেউ। তবে এ জন্য চাঁদা দিতে হবে। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে পেনশন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। চালু হয়েছে প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা- এই চার নামে চার শ্রেণির মানুষের জন্য আলাদা স্কিম। আরও দুটি স্কিম পরে সুবিধাজনক সময়ে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এর মধ্যে প্রবাস স্কিম শুধু প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য। যেসব প্রবাসীর জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তারা পাসপোর্টের তথ্য দিয়ে পেনশন স্কিমে নিবন্ধনের আবেদন করতে পারবেন। প্রগতি স্কিম বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের জন্য। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মচারী বা ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক এতে অংশ নিতে পারবেন। অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত বা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিরা যেমন- কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতিরা অংশ নিতে পারবেন সুরক্ষা স্কিমে। আর দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী স্বল্প আয়ের ব্যক্তিরা যাদের বর্তমান আয়সীমা বছরে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা তারা সমতা স্কিমে অংশ নিয়ে পেনশনের আওতায় আসতে পারবেন। এসব স্কিমের চাঁদার কিস্তি পছন্দ অনুযায়ী মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে পরিশোধ করা যাবে। চাঁদা দেওয়ার সময়ের ভিত্তিতে চারটি স্কিমের জন্যই মাসিক চাঁদার পরিমাণ এবং পেনশনের পরিমাণ আলাদা আলাদাভাবে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করব সর্বজনীন পেনশন স্কিমের সুফল যাতে পেনশনের আওতাধারীরা ভোগ করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে শক্তভাবে মূল্যস্ফীতিতে লাগাম টানা হবে। সাধারণ মানুষের কল্যাণে ফলপ্রসূ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারকে সাধুবাদ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর