বৃহস্পতিবার রাতে জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছিল রাজধানীর সিংহভাগ এলাকা। অপরিকল্পিত নগরায়ণের ধকল সইতে হচ্ছে রাজধানী ঢাকার লাখ লাখ মানুষকে। বর্ষা হলে রাজধানীতে দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। দিনের পর দিন জলাবদ্ধ হয়ে থাকাও নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষা মৌসুমে রাজধানীর জলাবদ্ধতা নাগরিক জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। কেড়ে নিচ্ছে রাস্তাঘাটের আয়ু। জলাবদ্ধতার কারণে দেখা দিচ্ছে যানজট। জলাবদ্ধতা কমাতে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ একের পর এক পরিকল্পনা নিলেও তাতে তেমন কোনো লাভ হচ্ছে না। রাজধানীর জলাবদ্ধতা কমাতে নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, সম্প্রসারণ, খাল সংস্কার, নর্দমা ও বক্স কালভার্ট পরিষ্কারের কাজে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা সত্ত্বেও এই বিপুল অর্থ ব্যয় জলাবদ্ধতা হ্রাসে কোনো ভূমিকাই রাখতে পারেনি। বৃহস্পতিবার রাতে টানা বর্ষণে রাজধানীর অনেক এলাকা জলমগ্ন হয়। জলাবদ্ধতার কারণে যানবাহন চলাচলে সৃষ্টি হয় বিঘ্ন এবং এর ফলে গভীর রাত পর্যন্ত ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়ার মতো নগরায়ণের সব ক্ষেত্রে যে অব্যবস্থাপনার ছাপ রয়েছে তার খেসারত দিতে হচ্ছে নগরবাসীকে। রাজধানীর পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবহƒত হতো বেশ কিছু প্রাকৃতিক খাল। এসব খালের সিংহভাগই বেদখল এবং ভরাট হয়ে গেছে। অদ্ভুত এই দেশে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন খাল এমনকি নদীও বেদখল হয়ে যায়। যারা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত হন, সরকারের ভূমি দফতরের অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে তা আত্মসাতের কৃতিত্ব দেখাচ্ছে একশ্রেণির লুটেরা। ফলে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয় রাজধানীতে। অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় নগরজীবনে। নাগরিকদের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। আমাদের মতে, রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকার এবং দুই ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। বেদখলকৃত খালগুলো উদ্ধারের উদ্যোগ নিতে হবে। ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ ঘটিয়ে দ্রুত পানি নিষ্কাশন নিশ্চিত করতে হবে। এ কাজে জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাও জরুরি।