রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা উপদ্রব

ঘাড় থেকে নামাতে হবে বোঝা

রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের ওপর চেপে বসে আছে মামদো ভূতের মতো। কিছুতেই ঘাড় থেকে তাদের নামানো সম্ভব হচ্ছে না। উপদ্রব হিসেবে আবির্ভূত হওয়া রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের মানুষের খাদ্যে ভাগ বসাচ্ছে। পরিবেশের জন্য ঘোরতর শত্রু হিসেবেও দেখা হচ্ছে বিপুল শরণার্থীর আগমন। দেশে মাদক ও অবৈধ অস্ত্রের জোগানদাতা হিসেবেও ভূমিকা পালন করছে তারা। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো পরিণত হয়েছে খুনের জনপদে। চাঁদাবাজি, ইয়াবা-অস্ত্র ব্যবসা, আধিপত্য বিস্তারসহ সাত কারণে এসব খুনোখুনি ঘটছে। গত ছয় বছরে ক্যাম্পে খুন হয়েছেন ১৯০ রোহিঙ্গা। এর মধ্যে ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ২৪ আগস্ট পর্যন্ত এক বছরে খুন হয়েছেন ৮৫ জন। যার মধ্যে সাধারণ রোহিঙ্গার পাশাপাশি রয়েছে সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য, ক্যাম্পের মাঝি, সাবমাঝি ও রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা। গত বছরের শেষের দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন করে যোগ হয়েছে টার্গেট কিলিং। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই ঘটছে এ-জাতীয় খুন। টার্গেট কিলিংয়ে নিহতের মধ্যে রয়েছেন ১৮ রোহিঙ্গা মাঝি, ১২ জন আরসা সদস্য, একজন স্বেচ্ছাসেবী। বাকিরা সাধারণ রোহিঙ্গা। খুনের পাশাপাশি অপহরণও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। গত ছয় বছরে কমপক্ষে ৬ শতাধিক অপহরণ ঘটেছে। যদিও পুলিশের খাতায় এ সংখ্যা সাড়ে তিন শ। ২০২২ সালে হত্যা, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার, মাদক ব্যবসা, ডাকাতি, ধর্ষণ, অপহরণ, মানব পাচার, পুলিশের ওপর হামলাসহ নানান অপরাধে ২ হাজার ৫৩১ রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের থাবা বিস্তারে দেশের মৌলবাদী সংগঠনগুলোর রোহিঙ্গা কানেকশন আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বর্মী সেনা অভিযানে জাতিসংঘ ও পশ্চিমা দেশগুলোর আহ্বানে মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ। দেশের একটি পরজীবী সম্প্রদায়ের চাপও সরকারকে এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছিল। বাংলাদেশের ওপর রোহিঙ্গা বোঝা চাপিয়েই পশ্চিমা দেশগুলো তাদের দায়িত্ব সেরেছে। এদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে কোনো সহায়তাই করছে না তারা। এ অকাম্য অবস্থার অবসান হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর