বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি

সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে

দেশের খাদ্যপণ্যের এক বড় অংশই আমদানি নির্ভর। চাল, গম, ডাল, ভোজ্য তেল আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে। ডলার সংকটের জন্য এসব পণ্যের দাম গত দেড় বছরে লাগামহীনভাবে বেড়েছে। এ বাড়ার পেছনে অসৎ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটও অনেকাংশে দায়ী। খাতুনগঞ্জের আড়তদারদের একাংশের অভিমত, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন এবং জ্বালানি তেলের দামের কারণে ভোগ্যপণ্যের আমদানি ব্যয় কিছুটা বেড়েছে সত্য। কিন্তু কিছু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে হাতিয়ে নিচ্ছে শত শত কোটি টাকা। সিন্ডিকেট সদস্যরা একেক সময় একেক পণ্য টার্গেট করছেন। তারাই চাল, ডাল, আলুসহ অন্যান্য পণ্যের বাজারে কারসাজি করছেন। গত বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর অস্থির হতে থাকে ভোগ্যপণ্যের বাজার। এ ছাড়া ডলার সংকট, প্রত্যাশিত এলসি খুলতে না পারা এবং বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে হু হু করে বাড়ানো হয় ভোগ্যপণ্যের দাম। দেড় বছরে খাতুনগঞ্জে কোনো কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে দুই থেকে তিন গুণ। গত বছরের মার্চে খাতুনগঞ্জে প্রতি কেজি চিনি ৭২ টাকা কেজি বিক্রি হলেও গত রবিবার বিক্রি হয়েছে ১২৪ টাকা। একই সময় পিঁয়াজের দাম ছিল ৩০-৩৩ টাকা, বর্তমানে ৪৮ থেকে ৫৫ টাকা। সাধারণ মানের চাল রকমভেদে কেজি ৪০ থেকে ৪৮ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। অন্যান্য চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। অস্বাভাবিক এই মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুললেও তাতে পকেট ভারী হচ্ছে সিন্ডিকেট সদস্যদের। সরকারের মেয়াদ যখন শেষের দিকে এবং দেশ যখন নতুন নির্বাচনের দিকে পা বাড়াচ্ছে তখন নিত্যপণ্যের বাজার মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার বিষয়ে ক্ষমতাসীনদের গরজ থাকারই কথা। এ জন্য মজুদদার ও বাড়তি দামে পণ্য বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হলেও ফলাফল শূন্য। আমরা এ কলামে বারবার বলেছি, নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে বিপর্যস্ত হয় ভোক্তারা। সাধারণ মানুষের জীবন মূল্যহীন হয়ে যায়। জনমনে বাড়ে হতাশা। এটি অন্তত সরকারের জন্য সুখবর নয়। এ প্রেক্ষাপটে নিত্যপণ্য বাজার নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর