রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ক্ষমা চাইলে আল্লাহ বান্দাকে রহম করেন

সৈয়দ নজরুল ইসলাম

সব প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর। তিনি অতীব মহান ও দয়ালু যার দরুন তিনি তাঁর সৃষ্টির সেরা জীবকে সহসা শাস্তি দিতে চান না। রসুল (সা.) বলেছেন, আদমসন্তান সবাই অপরাধ করে। অপরাধীদের মধ্যে উত্তম তারাই যারা তওবা করে। কাজেই ভুল করে ভুলের ওপর স্থির না থেকে ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও, তিনি ক্ষমা করে দেবেন। মুসলিম। তাই মানুষ যতই ভুল করুক না কেন আল্লাহ তাঁর বান্দার দিকে তাকিয়ে থাকেন কখন বান্দা তার ভুল স্বীকার করে তাঁর কাছে ক্ষমা চায়। তিনি ক্ষমা করতে প্রস্তুত, কারণ তিনি অতীব ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়। এতদসত্ত্বেও আমরা কেন ক্ষমা চাচ্ছি না, কেন শাস্তি থেকে মুক্তি পেতে চাই না। আসুন আমরা মুক্তি পেতে মুক্তির নৌযানে আরোহণের লক্ষ্যে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক সুদৃঢ় করি। আল্লাহর সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য আল্লাহর ভয়ে ভীত হয়ে সব গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের মুক্তি দিতে চায়, আমরা সাড়া দিচ্ছি না কেন? যদি আমরা জানমাল ও পরিবারের নিরাপত্তা চাই তাহলে আল্লাহর বিধানের হেফাজত করতে হবে যেমনটি রসুল (সা.) হাদিসে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর আদেশ-নিষেধের হেফাজত এবং আল্লাহর হকগুলোর হেফাজত কর তাহলে আল্লাহ তোমাদের হেফাজত করবেন।’ তোমরা আনন্দের মুহূর্তে আল্লাহকে স্মরণ কর, আল্লাহ বিপদের সময় তোমাদের স্মরণ করবেন। আমাদের জেনে রাখা উচিত নিশ্চয় তওবা হচ্ছে এমন একটি দরজা যার মধ্যবর্তী প্রশস্ততা আসমান -জমিনের প্রশস্ততার সমপরিমাণ। অন্য বর্ণনায় এসেছে ৭০ বছরের দূরত্বের সমান। পশ্চিম দিকে সূর্য উদিত হওয়ার আগ পর্যন্ত এ দরজা খোলা থাকবে। তওবার দরজা হাতছানি দিয়ে আমাদের ডাকছে। সময় থাকতে আমরা এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করছি না কেন? আল্লাহ আমাদের ডেকে বলছেন, হে আমার বান্দারা তোমরা দিনে-রাতে যে গুনাহ করে থাকো আমি তা ক্ষমা করে থাকি। সুতরাং আমার কাছে ক্ষমা চাও আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেব। আল্লাহর এ আহ্বান শোনার পরও কি আমরা আল্লাহর ডাকে সাড়া দেব না? হাদিসে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহ রাতে ক্ষমার হাত প্রসারিত করে রাখেন যাতে দিনের অপরাধকারীরা তাঁর কাছে তওবা করতে পারে। আবার দিনের বেলায় ক্ষমার হাত প্রসারিত করে রাখেন যাতে রাতের অপরাধকারীরা তওবা করে পাপমুক্ত হতে পারে। আল্লাহ ক্ষমা চাওয়াকে পছন্দ করেন, সুতরাং আমরা বিনীত হৃদয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি না কেন? অনুতপ্ত হয়ে বারবার এ দোয়াটি করি, হে আল্লাহ! আপনি আমাদের তওবাকারী ও পবিত্রদের অন্তর্ভুক্ত করে দিন যাদের বিচার দিবসে কোনো ভয় ও দুশ্চিন্তা থাকবে না। ‘আল্লাহুম্মা যাআলনী মিনাত্ত্বওয়াবীন ওয়াজআলনী মিনাৎ মুত্ত্বহররীন আল-লাজিনা লা খাওফুন আলাইহিম ওয়ালাহুম ইয়াহজানুন’। আল্লাহর কাছে আরজি পেশ করি, হে আল্লাহ! আমরা তোমার সেই বান্দা গুনাহের কারণে চিন্তিত হয়ে বিষণ্ন ও ভগ্ন হৃদয়ে গভীর সমুদ্রে নিমজ্জিত। আপনার এ অধম বান্দাদের আক্ষেপ অতীত জীবনের প্রতি যাতে আমরা কিছুই অর্জন করতে পারিনি। হে আল্লাহ! আমরা অসহায় ও নিরুপায় ক্ষমাপ্রাপ্তির জন্য হাত পেতেছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা ক্ষমা ভিক্ষাকারী গুনাহের কারণে আমাদের পাকড়াও করবেন না। হে আমাদের প্রভু! আমাদের গুনাহগুলো ক্ষমা করুন। নিশ্চয়ই আমরা অপরাধ করেছি। আমি এবং আমরা আপনার ওই মহান বাণীর ওপর আস্থাশীল, ‘হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি জুলুম ও অবিচার করেছ, আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হয়ো না; আল্লাহ তোমাদের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল। পরম করুণাময়।’ সুরা জুমার আয়াত ৫৩। কজেই আপনি আপনার ওই মহান বাণীর অসিলায় আমাকে ও আমাদের ক্ষমা করে দিন। আমাদের তওবা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা চাওয়া পছন্দ করেন তাই আমরা ক্ষমাপ্রার্থী, আমাদের ক্ষমা করে দিন।

লেখক : বীর মুক্তিযোদ্ধা

সর্বশেষ খবর