মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মামলাজট

বিচারকের সংখ্যা বাড়াতে হবে

মামলাজট দেশের বিচারব্যবস্থার জন্য শাঁখের করাত হয়ে উঠেছে। বিলম্বিত বিচারে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বিচারব্যবস্থার সুনাম। বিলম্বিত বিচার যে বিচারহীনতার নামান্তর এটি শুধু ভুক্তভোগীদের নয়, বিচারপতিদেরও অভিমত। এ সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে সাধ্যমতো বিচার নিষ্পত্তির প্রচেষ্টাও চলে আদালতগুলোতে। কিন্তু মামলার বিপরীতে বিচারকের সংখ্যা এতই কম যে কোনো সদিচ্ছায় কাক্সিক্ষত ফল অর্জিত হয় না। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট গঠনের পর থেকে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা শুধু বেড়েই চলছে। তবে পাহাড়সম মামলা নিষ্পত্তিতে বাড়ছে না বিচারকের সংখ্যা। হাই কোর্টে এখন বিচারাধীন ৫ লাখেরও বেশি মামলা। এসব মামলা নিষ্পত্তিতে দায়িত্ব পালন করছেন ৮২ জন বিচারপতি। গড় হিসাবে হাই কোর্টের একেক বিচারপতির সামনে ৬ হাজারের বেশি মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত মার্চ পর্যন্ত হাই কোর্ট বিভাগে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৫ লাখ ২১ হাজার ৯৯৯। আর বর্তমানে এ বিভাগে বিচারপতির সংখ্যা মাত্র ৮৮ জন। এর মধ্যে হাই কোর্ট বিভাগের বিচারিক দায়িত্বে রয়েছেন ৮২ জন বিচারপতি। অন্যদিকে আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ ছয়জন বিচারপতির সামনে বিচারাধীন মামলা ১৬ হাজার ৮৫১। বিচারকের তুলনায় মামলার সংখ্যা বিপুল হওয়ার কারণেই শত উদ্যোগ ও সদিচ্ছার পরও মামলাজট কমছে না। বিচার প্রার্থী মানুষকে বছরের পর বছর ঘুরতে হচ্ছে রায়ের জন্য। অনেকের পক্ষে ইহজনমেও তা দেখার সৌভাগ্য হচ্ছে না। আদালত সংশ্লিষ্টদের মতে, মামলাজট কমাতে বিচারকের সংখ্যা বর্তমানের চেয়ে অন্তত দ্বিগুণ করতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো সময় ক্ষেপণ না করে নিতে হবে দ্রুত সিদ্ধান্ত। আইনের শাসন ও বিচারব্যবস্থার সুনামের স্বার্থেই বিচারক সংকটের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো সময় ক্ষেপণই কাম্য হওয়া উচিত নয়।

সর্বশেষ খবর