বুধবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

গোলাগুলি নয়, কোলাকুলিই কাম্য

মহিউদ্দিন খান মোহন

গোলাগুলি নয়, কোলাকুলিই কাম্য

গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান শিরোনাম ছিল-‘ভোটের মাঠে গোলাগুলি’। প্রতিবেদনটিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘটিত সংঘাত-সহিংসতার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। সহিংস ঘটনাগুলো অনেকের কাছেই অশনিসংকেত মনে হচ্ছে। কেননা, এই সংঘাত-সহিংসতা প্রতিরোধে কঠোর কোনো পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশন কিংবা সরকারি প্রশাসন এখনো পর্যন্ত নেয়নি। শান্তিপ্রিয় মানুষ তাই এখন কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করছেন, ভালোয় ভালোয় ভোটের দিনটা পার হয়ে গেলেই রক্ষা।

এবারের নির্বাচন একটি ব্যতিক্রমধর্মী নির্বাচন। প্রথমত, দেশের অন্যতম বৃহৎ দল বিএনপি এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীও আওয়ামী লীগ। বিএনপি জনগণকে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তা প্রতিহত করারও ঘোষণা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে তারা অসহযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করে তা সফল করতে লিফলেট বিতরণ করে চলেছে। ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত তা চলবে। এরপর তাদের অসহযোগ আন্দোলন পুরোমাত্রায় শুরু করার কথা। যদিও বিএনপির এই অসহযোগ কর্মসূচির সাফল্য নিয়ে জনমনে সংশয় রয়েছে। অনেকেই বলছেন, বিএনপির এ কর্মসূচি বাস্তবে রূপলাভ করার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। কেননা, দেশব্যাপী এখন নির্বাচনি হাওয়া প্রবল বেগে বইতে শুরু করেছে এবং সে হাওয়ার তোড়ে অসহযোগ মাটিতে পা রেখে একদন্ডও স্থির হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। তবে এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দেশে আবার কোনো অস্থিরতার পরিবেশ সৃষ্টি হয় কি না, তা নিয়ে জনমনে শঙ্কা বিরাজ করছে। বিশেষত, গত ৩০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের একটি বক্তব্য দেশবাসীর মনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে। বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনে আতঙ্ক ছড়াতে লন্ডন থেকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। কোনো গুরুত্বপূর্ণ নেতা বা প্রার্থীকে গুপ্তহত্যার চক্রান্ত তাদের আছে।’ (বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩)। ওইদিন ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী বিধায় গোপন এবং প্রকাশ্য অনেক খবরই তাঁর গোচরে থাকার কথা। নির্ভরযোগ্য সূত্রে অবগত হওয়া ছাড়া তিনি নিশ্চয়ই এমন একটি জনগুরুত্বপূর্ণ তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করেননি। ফলে জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। কেননা, ‘নির্বাচন প্রতিহত’ করার নামে বিএনপি যদি সত্যি ওই ধরনের নেতিবাচক পন্থা অবলম্বন করে, তাহলে তা দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিপর্যস্ত করবে, সৃষ্টি হবে অস্থিরতার পরিবেশ; যা একটি গণতান্ত্রিক সমাজে কাক্সিক্ষত নয়। একই সঙ্গে বিএনপি পরিচিত হবে একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে।

অবশ্য ১ জানুয়ারি এক বিবৃতিতে বিএনপি নেতা রিজভী আহমেদ ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যকে ‘অপকৌশল’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, ‘বিএনপির ওপর দমন-নিপীড়নকে কাগজে-কলমে বৈধতা দিতে এ আশঙ্কাসূচক বক্তব্য দেওয়া হয়েছে; যাতে তাদের আশঙ্কা মোতাবেক নিজেরাই তেমন সহিংসতা বাস্তবতায় পরিণত করতে পারেন।’ এ ইস্যুতে দুই পক্ষের বাহাস শেষ পর্যন্ত কতদূর যাবে বলা যায় না। তবে সচেতন ব্যক্তিদের ধারণা, বৈরী পরিস্থিতিতে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় গলদঘর্ম বিএনপি ওই ধরনের নেতিবাচক পথে পা বাড়াবে বলে মনে হয় না। তাছাড়া এটা বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শের সঙ্গেও মেলে না। সাধারণত চরমপন্থি আন্ডারগ্রাউন্ড দলগুলো গুপ্তহত্যার মতো সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে থাকে। গত শতাব্দীর ষাট দশকে পশ্চিমবঙ্গে চারু মজুমদারের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট পার্টি যেমনটি করেছিল। তারা ‘শ্রেণিশত্রু’ খতমের নামে যে গুপ্তহত্যা ও সশস্ত্র তৎপরতা চালিয়েছিল, ইতিহাসে তা ‘নকশাল’ আন্দোলন হিসেবে পরিচিত। চারু মজুমদারের হেডকোয়ার্টার নকশালবাড়ি গ্রামের নামেই এই নামকরণ। সে অপরিণামদর্শী আন্দোলনের পরিণতি সবারই জানা। পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার তাঁর সিরিজ উপন্যাস ‘উত্তরাধিকার’, ‘কালবেলা’ ও ‘কালপুরুষ’-এ সে ব্যর্থ আন্দোলনের চিত্র এঁকেছেন নিপুণ হাতে।

উদাহরণ আমাদের দেশেও আছে। চীনপন্থি কমিউনিস্ট পার্টিগুলোর একাংশ এক সময় চারু মজুমদারের লাইন গ্রহণ করে সশস্ত্র সংগ্রাম ও শ্রেণিশত্রু খতম করে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়েছিল। তারাও সফল হতে পারেনি। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে সিরাজ শিকদারের পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টি সশস্ত্র বিপ্লবের নামে যে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল তার পরিণতিও আমাদের জানা। ১৯৭৫ সালের ২ জানুয়ারি সিরাজ শিকদার নিহত হওয়ার পর তাঁর সে আন্দোলনের ইতি ঘটে। একই পথ অবলম্বন করেছিল স্বাধীনতার পর বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র কায়েমের স্লোগান মুখে নিয়ে জন্ম নেওয়া দল জাসদ। গণতান্ত্রিক রাজনীতি দিয়ে পথচলা শুরু করলেও দলটি পরে গ্রহণ করে সশস্ত্র সংগ্রামের পথ। গঠন করে গণবাহিনী। সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সরকারকে উৎখাতের এক সর্বনাশা পথে পা বাড়ায় তারা; যার পরিণতি হয়েছিল ভয়াবহ। গণবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছিলেন ১১ সংসদ সদস্যসহ বহুসংখ্যক আওয়ামী লীগ নেতা। অন্যদিকে রক্ষীবাহিনীসহ সরকারি অন্যান্য বাহিনীর হাতে গণবাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য প্রাণ হারিয়েছিল; যারা সবাই ছিল সম্ভাবনাময় তরুণ।

ইতিহাসের পাতা থেকে উদাহরণগুলো তুলে ধরলাম এ জন্য যে, বাস্তবতাবিবর্জিত ও ভ্রান্ত রাজনৈতিক কর্মপন্থা কখনো সফল হয় না। বরং তা ডেকে আনে অনিবার্য বিপর্যয়। ইতিহাসের এত সব দৃষ্টান্ত চোখের সামনে মজুদ থাকতেও বিএনপির মতো একটি সুবৃহৎ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ওই রকম একটি অবিমৃশ্যকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে হঠকারী পথ অবলম্বন করবে, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। তবে ‘মতিভ্রম’ বলে একটি শব্দ বাংলা ভাষায় চালু আছে। এই মতিভ্রমের কবলে পড়ে অনেক বুদ্ধিমান এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তিকেও ভ্রান্ত পথে পা বাড়াতে দেখা যায়। বিএনপির সে রকম মতিভ্রম ঘটুক তা কেউই চান না।

এবারের নির্বাচনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা একই ঘরানার। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও একই দলের ‘অনুমতিপ্রাপ্ত’ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের বাইরে প্রার্থী আছে জাতীয় পার্টির; যাদের সঙ্গে এরই মধ্যে ২৬ আসনের বিনিময়ে সমঝোতা স্থাপিত হয়েছে ক্ষমতাসীনদের। ফলে আওয়ামী লীগের সামনে বড় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী বা তাদের জয়ের পথে তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। আর সে কারণেই সবাই আশা করেছিলেন, এবারের নির্বাচনটি শান্তিপূর্ণ এবং সুশৃঙ্খলভাবেই সম্পন্ন হবে। কিন্তু নির্বাচনি প্রচারকার্য শুরুর দিন থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটেছে। ফলে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা তিরোহিত হতে বসেছে। প্রতিদিন যেভাবে সারা দেশ থেকে সহিংসতার খবর আসছে, তাতে ভোটের দিন পর্যন্ত তা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, এ প্রশ্ন সবাইকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এখানে বাংলাদেশ প্রতিদিনের কয়েক দিনের খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি- ‘গুলি ককটেল হুমকি চলছেই ভোটের মাঠে’ (২৭ ডিসেম্বর), ‘নির্বাচনি সহিংসতা থামছেই না’ (২৮ ডিসেম্বর), ‘নির্বাচনি সংঘাতে বাড়ছে আতঙ্ক’ ও ‘নির্বাচনি সহিংসতার শেষ নেই’ (৩০ ডিসেম্বর), ‘সহিংসতায় উত্তপ্ত নির্বাচনি পরিবেশ’ (৩১ ডিসেম্বর), ‘ছড়িয়ে পড়েছে নির্বাচনি সহিংসতা’ (১ জানুয়ারি) ও ‘নির্বাচনে বাড়ছে আগুনসন্ত্রাস’ (২ জানুয়ারি)। এসব সহিংসতার বিশদ বিবরণ পুনরুল্লেখ অনাবশ্যক। সংঘটিত সহিংসতায় ইতোমধ্যেই তিনজন নিহত ও দুই শতাধিক আহত হওয়ার খবর এসেছে। মিছিলে হামলা, ক্যাম্পে আগুন ও ভাঙচুর, গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেই চলেছে। ফলে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে শঙ্কার। বিশেষত বিএনপি না থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনি মাঠ এমন সহিংস হয়ে উঠবে, এটা ছিল সবার ধারণার বাইরে।

সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, মারামারিতে লিপ্ত প্রার্থীরা সবাই একই দল এবং একই আদর্শে বিশ্বাসী। এটা এখন আর লুকানো নেই যে, গঠনতন্ত্র পরিপন্থি হওয়া সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড কেন দলীয় নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ অবারিত করেছে। মূলত বিএনপির অনুপস্থিতিতে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করা ও কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এই কৌশল নেওয়া হয়েছিল। তখন হয়তো কারও ধারণায়ও ছিল না, একই দলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ভ্রাতৃঘাতী সমরে লিপ্ত হবেন। আওয়ামী লীগের স্ব-দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে এমন যুদ্ধংদেহি অবস্থানদৃষ্টে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াত। আপন ভাইকে যারা সহ্য করতে পারছেন না, সেখানে শত্রুসম প্রতিবেশীকে তারা কতটা বরদাশত করতেন অনুমান করা কষ্টকর নয়। যে পরিচয়েই হোক, ভোটের মাঠে তো রয়েছেন আওয়ামী লীগেরই নেতারা। তাদের তো কোলাকুলি করে নির্বাচনি প্রচারণা চালানোর কথা। অথচ তারা লিপ্ত হচ্ছেন গোলাগুলিতে! যে নির্বাচনে সরকার পরিবর্তনের কোনো আশঙ্কা নেই, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আওয়ামী লীগের পুনরায় সরকার গঠন যেখানে নিশ্চিত, সেখানে এই আত্মঘাতী যুদ্ধ কেন-এ প্রশ্ন সবার। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি কয়েকজন আওয়ামী লীগ সমর্থকের সঙ্গে। তাদের মতে, বর্তমান সংসদ সদস্যরা (যারা প্রার্থী) ক্ষমতা হারানোর ভয়ে স্ব-দলের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হয়ে উঠেছেন। গত পাঁচ বছরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় দলের এমপি ও স্থানীয় নেতাদের মধ্যকার মতবিরোধ ও দ্বন্দ্বের যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছিল, বর্তমান সংঘাত-সহিংসতা তারই বহিঃপ্রকাশ। আমার এলাকার এক বড় ভাই শেখ ইদ্রিস আলী, যিনি স্বাধীনতার পরপর শ্রীনগর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। রাষ্ট্রায়ত্ত একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক হিসেবে চাকরিজীবন শেষে এখন অবসর জীবনযাপন করছেন। বঙ্গবন্ধুর অনুসারী ও আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ সমর্থক সাবেক এই ছাত্রনেতা ক্ষোভের সঙ্গেই বললেন, ‘যেভাবে আওয়ামী লীগ ও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা একে অন্যের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে, এটাকে ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধ বলা চলে। এখনই এর রাশ টেনে না ধরলে ভবিষ্যতে দলের ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ বিক্রমপুরের লৌহজংয়ের আওয়ামী লীগ সমর্থক খান নজরুল ইসলাম হান্নানের ভাষায় এতদিনের বিরোধের আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছে নির্বাচনের মাঠে। তিনি বললেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে জমজমাট করতে দলীয় নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দিয়েছিল। তবে এখন মনে হচ্ছে, এতে হিতেবিপরীত হতে যাচ্ছে। এ বিরোধ ও সংঘাত দলের ঐক্যে সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’

আমাদের দেশে নির্বাচন সাধারণত উৎসবের আমেজে অনুষ্ঠিত হয়; যদিও গত দুটি সংসদ নির্বাচনে তা ছিল অনুপস্থিত।

এবারও বিএনপি অংশ না নেওয়ায় তা অনেকটাই ম্লান হয়েছে। তবে, আওয়ামী লীগ নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় আশা করা গিয়েছিল, সৌহার্দ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু যেভাবে তারা রক্তক্ষয়ী সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছেন, তাতে সে আশার গুড়েবালি পড়েছে। তাই পরিস্থিতি যাতে আরও অবনতির দিকে না যায়, সে জন্য আওয়ামী লীগ হাইকমান্ডের এখনই দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন দলের সমর্থক-শুভানুধ্যায়ীরা।

 

                লেখক : সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

সর্বশেষ খবর